বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
আজ
আলোকের
এই
ঝর্নাধারায়
ধুইয়ে
দাও।
পাঠ ও পাঠভেদ:
আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও।
আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও॥
যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে
আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে
এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও।
বিশ্বহৃদয়-হতে-ধাওয়া আলোয়-পাগল প্রভাত-হাওয়া,
সেই হাওয়াতে হৃদয় আমার নুইয়ে দাও॥
আজ নিখিলের আনন্দধারায় ধুইয়ে দাও,
মনের কোণের সব দীনতা মলিনতা ধুইয়ে দাও।
আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান—
তার নাইকো বাণী, নাইকো ছন্দ, নাইকো তান।
তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও।
বিশ্বহৃদয়-হতে-ধাওয়া প্রাণে-পাগল গানের হাওয়া,
সেই হাওয়াতে হৃদয় আমার নুইয়ে দাও॥
পাঠভেদ:
RBVBMS 111-এর গান ১৩ পৃষ্ঠায় প্রথম গানটি লিখেছিলেন। তখন গানটির প্রথমচরণ ছিল 'আজ আলোকের এই নিঝরধারা ধুইয়ে দাও। পরে তিনি এই গানটির নানারকম পরিবর্তন করে পাণ্ডুলিপির অষ্টম পৃষ্ঠায় নতুনভাবে গানটি সাজান। ১৩২৫ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত 'গীতপঞ্চাশিকা'র স্বরলিপি অংশে গানটির প্রথম চরণ পরিবর্তিত হয়। পরিবর্তিত পাঠটি হলো 'আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও'। কিন্তু বাণী অংশ থেকে যায় 'আজ আলোকের এ ই ঝর্না-ধারায়'।
গানটির স্থায়ীর দ্বিতীয় পংক্তিতে রবীন্দ্রনাথ বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করেছিলেন। যেমন-
আপনাকে
এই (সংশোধন 'মোর') লুকিয়ে রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও [RBVBMS 111-এর
গান ৪
]
আমার ধুলায় মাখা সকল ঢাকা ধুইয়ে দাও [RBVBMS 111-এর গান ১৩ ]
আপনাকে এই লুকিয়ে রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও [তত্ত্ববোধিনী ফাল্গুন ১৩২২ বঙ্গাব্দ]
আপনাকে মোর লুকিয়ে-রাখা ধুলার-ঢাকা ধুইয়ে দাও [তত্ত্ববোধিনী বৈশাখ ১৩২৯ বঙ্গাব্দ]
আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার-ঢাকা ধুইয়ে দাও [প্রবাহিনী ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)]
আপনাকে
মোর (সংশোধন এই) লুকিয়ে-রাখা ধুলার-ঢাকা ধুইয়ে দাও [গীতবিতান
দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ
১৩৩৮ বঙ্গাব্দ]
আপনাকে মোর লুকিয়ে-রাখা ধুলার-ঢাকা ধুইয়ে দাও [গীতবিতান প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ]।
আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও [গীতপঞ্চাশিকা আশ্বিন ১৩২৫]
আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও
[গীতবিতান (অখণ্ড ), ১৩৮০ বঙ্গাব্দ]
তথ্যানুসন্ধান:
ক. রচনাকাল ও স্থান:
RBVBMS 111
-তে
গানটির রচনাকাল ও স্থান উল্লেখ আছে '৯ কার্তিক, মার্তণ্ড,
কাশ্মীর।
উল্লেখ্য, ১৩২২ বঙ্গাব্দের ২৪শে আশ্বিন রবীন্দ্রনাথ কলকাতা থেকে
কাশ্মীরের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
৯ কার্তিক
তিনি সেখানকার মার্তণ্ডদেবের মন্দির দেখতে যান। এখানে থাকাবস্থায় রবীন্দ্রনাথ এই
গানটি রচনা করেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৪ বৎসর
৬ মাস।
[রবীন্দ্রনাথের
৫৪ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে রচিত গানের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)। ১৩২৫ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গীতপঞ্চাশিকা থেকে গৃহীত হয়েছিল। পৃষ্ঠা: ৫৬৫-৫৬৬। [নমুনা: প্রথমাংশ, দ্বিতীয়াংশ]
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, মাঘ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)। প্রার্থনা ১। পৃষ্ঠা: ৩৯। [নমুনা]
অখণ্ড সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দ)। পর্যায়: পূজা ৯২। উপবিভাগ: প্রার্থনা-১। পৃষ্ঠা: ৪২। [নমুনা: ৪২, ৪৩]
গীতপঞ্চাশিকা (আশ্বিন ১৩২৫)।
প্রবাহিনী (বিশ্বভারতী ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)। পূজা ৬। পৃষ্ঠা: ৫৭ [নমুনা]
স্বরবিতান ষোড়শ (১৬, গীতপঞ্চাশিকা। আশ্বিন ১৪১৩) খণ্ডের ৪৭ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ১৬২- ৬।[নমুনা]
আনন্দসঙ্গীত পত্রিকা
(অগ্রহায়ণ-পৌষ
১৩২৪ বঙ্গাব্দ)।
স্বরলিপি-সহ
প্রকাশিত হলেও স্বরলিপিকারের নাম পাওয়া যায় না।
প্রকাশের কালানুক্রম: ১৩২২
বঙ্গাব্দের ১১ই মাঘ
৮৬তম সাংবৎসরিক মাঘোৎসব
অনুষ্ঠিত হয়।
এই মাঘোৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথের ১৩টি গান পরিবেশিত হয়েছিল। এর ভিতরে
প্রাতঃকালীন অধিবেশনে ৬টি গান এবং সায়ংকালীন অধিবেশনে ৭টি গান পরিবেশিত
হয়েছিল। এর ভিতরে এই গানটি পরিবেশিত হয়েছিল প্রাতকালীন অধিবেশনে।
এই বছরের
ফাল্গুন মাসে গানটি
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। এরপর
যে সকল পত্রিকা এবং গ্রন্থাদিতে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত
হয়েছিল, সেগুলো হলো-
আনন্দসঙ্গীত
পত্রিকার 'অগ্রহায়ণ-পৌষ
১৩২৪ বঙ্গাব্দ' সংখ্যা,
গীতপঞ্চাশিকা (১৩২৫ বঙ্গাব্দ) এবং প্রকাশিত
তে
প্রবাহিনী ১৩৩২
বঙ্গাব্দ।
এরপর ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ প্রকাশিত
গীতবিতান
-এর দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম সংস্করণে গানটি
অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের
দ্বিতীয় সংস্করণে পূজা পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
১৩৮০
বঙ্গাব্দের
পৌষ মাসে অখণ্ড গীতবিতানের তৃতীয় এবং সর্বশেষ সংস্করণে গানটি
পূজা পর্যায়ের ৯২ সংখ্যক গান অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
স্বরলিপি: [নমুনা]
স্বরলিপিকার:
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
[দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর-কৃত রবীন্দ্রসাঙ্গীতের তালিকা]
সুর ও তাল:
স্বরবিতান ষোড়শ
(১৬,
গীতপঞ্চাশিকা।
আশ্বিন
১৪১৩)
গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের
উল্লেখ নেই। উক্ত
স্বরলিপিটি ৩।৩ মাত্রা
ছন্দে
'দাদরা'
তালে নিবদ্ধ।
[দাদরা
তালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
গ্রহস্বর: দর্জ্ঞা।
লয়: দ্রুত।