৫৪ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স
২৫ বৈশাখ ১৩২২ বঙ্গাব্দ থেকে ২৪ বৈশাখ ১৩২৩ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত (৭ মে ১৯১৫- ৬ মে ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ)
গত বৎসরের
ফাল্গুন মাসে
রবীন্দ্রনাথ
ফাল্গুনী' নাটক শেষ করেন। এরপর আষাঢ় মাস পর্যন্ত কোনো গান রদচনা করেন নি। এই
বৎসরের (১৩২২ বঙ্গাব্দ) ভাদ্র মাসের শেষে একটি গান রচনা করেন শান্তিনিকেতন-এ। গানটি
হলো
আমার একটি কথা
বাঁশি জানে।
রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন
থেকে ৭ আশ্বিন-এ কলকাতায় আসেন। এই সময়ে সুনিশ্চিতভাবে স্বরবিতান- ১৬, ৪৩ থেকে জানা
যায়, ৪টি গান শান্তিনিকেতন রচিত হয়েছিল। গানটি হলো-
আমার নিশীথরাতের বাদলধারা
[প্রেম-৬৮] [তথ্য]
কোন্ খেপা শ্রাবণ ছুটে এল [প্রকৃতি-১৫৫] [তথ্য]
তোমার নয়ন আমায়
বারে বারে।
[পূজা-৮]
[তথ্য]
কাল রাতের বেলা গান এল মোর মনে [প্রেম-৯] [তথ্য]
শেষের গানটির নিচে
পাণ্ডুলিপি
[MS. NO 111:
ষষ্ঠ গান। পৃষ্ঠা:
৭]
-তে গানটির নিচে তারিখ নেই।
৭ আশ্বিন থেকে ২৪ আশ্বিন
[শুক্রবার ১ অক্টোবর] পর্যন্ত তিনি কলকাতায় ছিলেন। এর ২৪শে আশ্বিন তিনি কলকাতা থেকে কাশ্মীরের
উদ্দেশে যাত্রা করেন। ধারণা করা হয়, এই যাত্রার প্রাক্কালে তিনি কলকাতায় গানটি রচনা
করেছিলেন।
পাণ্ডুলিপি
MS. NO 111
থেকে জানা যায়, '৭ই
কার্তিক, শ্রীনগর কাশ্মীর' তিনি রচনা করেছিলেন-
তরুণ
প্রাতের অরুণ আকাশ [প্রেম ও প্রকৃতি ৬৩] [তথ্য]
৯ কার্তিক [মঙ্গলবার, ২৬
অক্টোবর] রবীন্দ্রনাথ কাশ্মীরের মার্তণ্ডদেবের মন্দির দেখতে যান। এখানে এসে একটি
গান রচনা করেন। গানটি হলো-
আজ আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও [পূজা-৯২] [তথ্য]
কাশ্মীরে থাকাবস্থায় তিনি
রচনা করেছিলেন বলাকা কাব্যের একটি কবিতা 'সন্ধ্যারাগে ঝিলিমিলি ঝিলমের স্রোতখানি'। ১৯শে কার্তিক
তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন। সেখান থেকে ২৩ কার্তিক তিনি শিলাইদহে যান। এই দিন
কলকাতাতেএকটি দীর্ঘ কবিতা। কবিতাটি হলো- 'দূর হতে কি শুনিস মৃত্যুর গর্জন'। শিলাইদহ থেকে
তিনি সবুজপত্র পত্রিকার কার্তিক সংখ্যায় ঘরে বাইরে উপন্যাসের 'বিমলার
আত্মকথা' অংশ প্রকাশিত হয়। এই অংশের সাথে দুটি গান প্রকাশিত হয়। গান দুটি হলো
আমার নিকড়িয়া
রসের রসিক
যখন দেখা দাও
নি, রাধা
সবুজপত্র পত্রিকার অগ্রহায়ণ সংখ্যায় ঘরে বাইরে উপন্যাসের 'সন্দীপের আত্মকথা' অংশ প্রকাশিত হয়। এই অংশের সাথে ১টি গান প্রকাশিত হয়। গানটি হলো
বঁধুর লাগি কেশে আমি পরব এমন ফুল
অগ্রহায়ণ মাসের প্রথমদিকে
রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহ থেকে কলকাতা ফিরে আসেন। এরপর হঠৎ করে তিনি ঘাটশিলায় যান এবং ২০
অগ্রহায়ণে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন। এই সময় তিনি ঘরেবাইরে উপন্যাসের রচনা
অব্যাহত রেখেছিলেন। সেই সূত্রে সবুজপত্র পত্রিকার পৌষ সংখ্যায় ঘরে বাইরে
উপন্যাসের 'বিমলার আত্মকথা' অংশ প্রকাশিত হয়। এই অংশের সাথে ১টি গান প্রকাশিত হয়।
গানটি হলো
মধুঋতু নিত্য
হয়ে রইল তোমার
কলকাতা থেকে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন আসেন ১লা পৌষে। এবারে পৌষ উৎসবে তিনি কোনো গান রচনা করেন নি। তবে ৭ পৌষ আশ্রমের ২৫শ সাম্বৎসিরক অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন। ১৩ পৌষে তিনি কলকাতা আসেন। এই সময় বাকুড়ায় দুর্ভিক্ষ চলছিল। রবীন্দ্রনাথ ফাল্গুনী মঞ্চস্থ করে টাকা সংগ্রহ করে বাকুড়ার দুর্ভিক্ষ-পীড়িত কাছে পাঠানোর উদ্যোগ নেন। এই বিষয়ে তিনি গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে পরামর্শ দিয়ে ১৯ পৌষ শান্তিনিকেতনে ফিরে আসেন। ২৯ পৌষ ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব্ ওরিয়েন্টাল আর্ট-এর বার্ষিক প্রদর্শনীর জন্য গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ফাল্গুনীতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না জানান। পরে ফাল্গুনীর পরিবর্তে 'বৈরাগ্য সাধন' (ফাল্গুনীর সূচনা) অভিনয়ের সিদ্ধান্ত হয়। বৈরাগ্য সাধনের মহাড়ার জন্য তিনি ২৯ পৌষ [১৪ জানুয়ারি] কলকাতা আসেন। ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি বৈরাগ্য সাধন মঞ্চস্থ হয়।
২০ মাঘে তিনি শিলাইদহ
যান। এবারে এখানে এসে তিনি কোনো গান রচনা করেন নি। ৯ ফাল্গুন তিনি পতিসরে যান এবং
সেখান থেকে তিনি ১৭ ফাল্গুন কলকাতায় আসেন। এখান থেকে ২৭ ফাল্গুন শান্তিনিকেতন গিয়ে
৩০ ফাল্গুন আবার কলকাতায় আসেন। এরপর তিনি কয়েকদিন পরে শান্তিনিকেতনে আসেন। পুরো
চৈত্রমাস তিনি শান্তিনিকেতনেই কাটান। প্রভাতকুমার
মুখোপাধ্যায় এই সময়ে রচিত একটি
গানের রচনাকাল 'ফাল্গুন' উল্লেখ করেছেন। আর প্রশান্তকুমার পাল তাঁর রবিজীবনী
(সপ্তম খণ্ডে) উল্লেখ করেছেন ২১ ফাল্গুনের কাছাকাছি সময়ে। এই গানটি হলো-
তুমি কোন পথে যে এলে
পথিক
২১ চৈত্র থেকে ৩১ চৈত্র পর্যন্ত তিনি মোট ১১টি গান রচনা করেন।
গানগুলোর রচনার স্থান ও তারিখ
পাওয়া যায়
পাণ্ডুলিপি
MS. NO 111
থেকে। নিচে
গানগুলোর তালিকা দেওয়া হলো।
২১ চৈত্র [সোমবার, ৩ এপ্রিল] আমি পথভোলা এক পথিক এসেছি [প্রকৃতি-২০১] [তথ্য]
২৫ চৈত্র [শুক্রবার, ৭ এপ্রিল] যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন [বিচিত্র-১৩] [তথ্য]
২৬ চৈত্র [শনিবার, ৮ এপ্রিল] এই তো ভালো লেগেছিল [বিচিত্র-১৫] [তথ্য]
২৬ চৈত্র [শনিবার, ৮ এপ্রিল] তরীতে পা দিই নি আমি [বিচিত্র-৩২] [তথ্য]
২৭ চৈত্র [রবিবার, ৯ এপ্রিল] তোমার হল শুরু, আমার হল সারা [বিচিত্র-৫৮] [তথ্য]
২৮ চৈত্র [সোমবার, ১০ এপ্রিল] সুরের আসন-খানি পাতি পথের ধারে। [পূজা-২৪] [তথ্য]
২৮ চৈত্র [সোমবার, ১০ এপ্রিল] আমারে বাঁধবি তোরা সেই বাঁধন [বিচিত্র-৬০] [তথ্য]
২৯ চৈত্র [মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল] ওই সাগরের ঢেউয়ে ঢেউয়ে [বিচিত্র-৫৪] [তথ্য]
২৯ চৈত্র [মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল] নাহয় তোমার যা হয়েছে [বিচিত্র-৫৬] [তথ্য]
৩০ চৈত্র [বুধবার, ১২ এপ্রিল] আমার হৃদয় আমার [প্রেম-৮] [তথ্য]
৩১ চৈত্র [বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল] এমনি ক'রেই যায় যদি দিন [বিচিত্র-৫৯] [তথ্য]
এই বৎসরে রবীন্দ্রনাথ আর কোনো গান রচনা করেন নি। তাঁর রচিত পরবর্তী গান পাওয়া যায় জ্যৈষ্ঠ মাসে।