বাংলা স্বরবর্ণ ও কার-চিহ্ন
বাংলা লিপির ১১টি স্বরবর্ণের পৃথক চিহ্ন আছে।
এগুলো
হলো―
অ,
আ,
ই,
ঈ,
উ,
ঊ,
ঋ,
এ,
ঐ,
ও,
ঔ ।
বাংলাতে এ্যা ধ্বনি থাকলেও তার জন্য পৃথক বর্ণচিহ্ন নেই। মৌলিকত্বের বিচারে
স্বরধ্বনির সংখ্য ৭টি। এগুলো হলো―
অ,
আ,
ই,
উ,
এ,
ও
এবং এ্যা (এর জন্য কোনো স্বরচিহ্ন বা কার চিহ্ন নেই)। প্রচলিত স্বরবর্ণের ১১টি
চিহ্নের বিচারে ৫টি বর্ণ মৌলিক নয়। ধ্বনির বিচারে বাংলা বর্ণগুলোকে বিভক্ত করা হয়,
তা হলো―
ঋ =অনুরণিত র-জাত ধ্বনির স্বরধ্বনিগত রূপ।
ঐ= যৌগিক স্বরধ্বনি। ও এই ই মিলিত হয়ে এই ধ্বনির সৃষ্টি করে।
ঔ= যৌগিক স্বরধ্বনি। ও এই উ মিলিত হয়ে এই ধ্বনির সৃষ্টি করে।
বাংলা বর্ণামালায় যে সকল স্বরবর্ণচিহ্ন রয়েছে, সেগুলো শব্দে স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হওয়ার সময় মূল চিহ্নরূপেই থাকে। কিন্তু ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে যুক্ত হলে তা রূপান্তরিত হয়ে পৃথক চিহ্নে পরিণত হয়। এই চিহ্নগুলিকে কারচিহ্ন বলা হয়। বাংলা লিখন পদ্ধতিতে ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে স্বাভাবিকভাবে 'অ' থাকে। তাই এর কোনো কার-চিহ্ন নাই। অন্যান্য কারচিহ্নগুলো নিজস্ব রীতি অনুসারে স্বাভাবিকভাবে ব্যঞ্জনবর্ণের পূর্বে, পরে বা নিচে বসে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই চিহ্নগুলো মুক্ত বা যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে যুক্ত হয়ে ব্যঞ্জনবর্ণের মূল রূপকে পরিবর্তন করে বা কারচিহ্ন নিজেই পরিবর্তি হয়ে যায়। এই বিচারে কারচিহ্নের যে রূপগুলো পাওয়া যায়, ত হলো−
অ =কারচিহ্ন নেই।
তবে
ব্যঞ্জনবর্ণ হসন্ত চিহ্ন ছাড়া
উপস্থাপিত হলে, বুঝতে হবে এর সাথে অ-কার আছে।
আ=
কারচিহ্ন া। এর নাম আকার। ব্যঞ্জনবর্ণের পরে বসে। যেমন―
কা, খা, গা, ঘা, ঙা, চা, ছা, জা, ঝা, ঞা, টা, ঠা, ডা, ঢা, ণা, তা, থা, দা, ধা,
না, পা, ফা, বা, ভা, মা, যা, রা, লা, শা, ষা, সা, হা, ড়া, ঢ়া, য়া। এর কোনো ভিন্নতর রূপ নেই।
ই= কারচিহ্ন ি। এর নাম হ্রস্ব-ইকার। এই চিহ্নটি ব্যঞ্জনবর্ণের আগে বসে। যেমন― কি, খি, গি, ঘি, ঙি, চি, ছি, জি, ঝি, ঞি, টি,ঠি, ডি, ঢি, ণি, তি, থি, দি, ধি, নি, পি, ফি, বি, ভি, মি, যি, রি, লি, শি, ষি, সি, হি, ড়ু, ঢ়ি, য়ি। এর কোনো ভিন্নতর রূপ নেই। বা এই চিহ্ন ব্যবহারের সময় মূল ব্যঞ্জনধ্বনির আকারগত কোনো পরিবর্তন হয় না।
ঈ=
কারচিহ্ন ী। এর নাম দীর্ঘ-ঈকার। এই চিহ্নটী ব্যঞ্জনবর্ণের পরে বসে। যেমন―
কী, খী, গী, ঘী, ঙী, চী, ছী, জী, ঝী, ঞী, টী, ঠী, ডী, ঢী, ণী, তী, থী, দী, ধী,
নী, পী, ফী, বী, ভী, মী, যী, রী, লী, শী, ষী, সী, হী, ড়ী, ঢ়ী, য়ী। এর কোনো ভিন্নতর রূপ নেই।
বা
এই চিহ্ন ব্যবহারের সময় মূল ব্যঞ্জনধ্বনির আকারগত কোনো পরিবর্তন হয় না।
উ= কারচিহ্ন পাঁচ প্রকার। এর নাম হ্র্স্ব-উকার। এই চিহ্ন বর্ণের নিচে বা ডানে বসে। অনেক সময় এই চিহ্ন মূল ব্যঞ্জনচিহ্নের পরিবর্তন ঘটায়।
ঊ= কারচিহ্ন দুই প্রকার।
। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ঊকারের এই রূপটিই পাওয়া যায়।
ঋ= কারচিহ্ন দুই প্রকার।
এ= এর কারচিহ্ন ে। ব্যঞ্জনবর্ণের বাম পাশে বা আদিতে বসে। যেমন− কে, খে, গে, ঘে, ঙে, চে, ছে, জে, ঝে, ঞে, টে, ঠে, ডে, ঢে, ণে, তে, থে, দে, ধে, নে, পে, ফে, বে, ভে, মে, যে, রে, লে, শে, ষে, সে, হে, ড়ে, ঢ়ে, য়ে।
এর দুটি রূপ রয়েছে।
রূপদুটি হলো−
ঐ= এর কারচিহ্ন ৈ। ব্যঞ্জনবর্ণের বাম পাশে বা আদিতে বসে। যেমন− কৈ, খৈ, গৈ, ঘৈ, ঙৈ, চৈ, ছৈ, জৈ, ঝৈ, ঞৈ, টৈ, ঠৈ, ডৈ, ঢৈ, ণৈ, তৈ, থৈ, দৈ, ধৈ, নৈ, পৈ, ফৈ, বৈ, ভৈ, মৈ, যৈ, রৈ, লৈ, শৈ, ষৈ, সৈ, হৈ, ড়ৈ, ঢ়ৈ, য়ৈ
এর দুটি রূপ রয়েছে।
রূপদুটি হলো−
ও= এর কারচিহ্ন ো। এক্ষেত্রে এ-কার ব্যঞ্জনবর্ণের আগে বসে এবং আকার ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ডান পাশে বসে। যেমন− কো, খো, গো, ঘো, ঙো, চো, ছো, জো, ঝো, ঞো, টো, ঠো, ডো, ঢো, ণো, তো, থো, দো, ধো, নো, পো, ফো, বো, ভো, মো, যো, রো, লো, শো, ষো, সো, হো, ড়ো, ঢ়ো, য়ো।
এর দুটি রূপ রয়েছে। রূপদুটি হলো−
ঔ=
এর কারচিহ্ন ৌ। এক্ষেত্রে এ-কার ব্যঞ্জনবর্ণের আগে বসে এবং নিশানযুক্ত আকার ব্যঞ্জনবর্ণের
পরে ডান পাশে বসে।
যেমন−
কৌ, খৌ, গৌ, ঘৌ, ঙৌ,
চৌ, ছৌ, জৌ, ঝৌ, ঞৌ, টৌ, ঠৌ, ডৌ, ঢৌ, ণৌ, তৌ, থৌ, দৌ,
ধৌ, নৌ, পৌ, ফৌ, বৌ, ভৌ, মৌ, যৌ, রৌ, লৌ, শৌ, ষৌ, সৌ, হৌ, ড়ৌ, ঢ়ৌ, য়ৌ।
এর দুটি রূপ রয়েছে।
রূপদুটি হলো−