হাম্বীর
সমনাম: হামীর, হমীর।
উত্তর ভারতীয় সঙ্গীতশাস্ত্রে বর্ণিত রাগ বিশেষ।
আরোহণ:
স র গ ম নধ, ন র্স।
স র গ
ম প, গ ম নধ, ন র্স।
অবরোহণ: র্স ন ধ প, হ্ম প, গ ম র স।
ঠাট: এই রাগে উভয় মধ্যম ব্যবহৃত হয়। ফলে এই রাগে বিলাবাল এবং কল্যাণ উভয় অঙ্গের প্রভাব রয়েছে। মধ্যমের প্রয়োগরীতির কারণে, ঠাট হিসেবে কল্যাণ এবং বিলাবল নিয়ে মতান্তর আছে। তবে অধিকাংশ সঙ্গীতগুরু এই রাগটিকে কল্যাণ ঠাটের মনে করেন।
জাতি
: ষাড়ব-সম্পূর্ণ।
এই রাগের জাতি নিয়ে মতান্তর আছে। কারো কারো মতে এই রাগের আরোহণে
পঞ্চম বর্জিত এবং অবরোহণে সকল স্বরই ব্যবহৃত হয়। ফলে এই রাগের জাতি হয়-ষাড়ব-সম্পূর্ণ।
কিন্তু অনেকে মনে করেন পঞ্চম কৌশলে বক্রস্বর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফলে এর জাতি
হয়ে যায় সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ। যেমন- স র গ ম প, গ ম নধ
ন র্স
বাদীস্বর: ধৈবত।
সমবাদী স্বর : গান্ধার।
ন্যাস: পঞ্চম, ষড়্জ
অঙ্গ: উত্তরাঙ্গ প্রধান।
সুরাঙ্গ: গ ম নধ নধ প
সময় : রাত্রি প্রথম প্রহর।
চলন: এই রাগটির গতি চঞ্চল। চলন বক্র গতি ও মীড়যুক্ত। এই রাগে আরোহণে ধৈবত নিষাদকে স্পরশ করে উপস্থাপিত হয়। অবরোহণে প গ মীড়যুক্ত হয়ে থাকে বক্র চলনে উপস্থাপিত হয়। যেমন পগমরস। সাধারণত এই রাগ পৃথকভাবে বিস্তারিত আলাপের উপযুক্ত নয় বলে বিবেচিত হয়। এই কারণে একে ক্ষুদ্র প্রকৃতির রাগ হিসেবেই পরিবেশন করা হয়।
পকড় : গ ম নধ, নধ প, গ ম র স।
রাগের স্বরের ব্যবহার
ঋষভ: এই রাগে শুদ্ধ ঋষভ ব্যবহৃত হয়। এই রাগে ঋষভ সরাসরি ব্যবহৃত হয় না। সব সময়ই অন্য স্বরের সাথে মীড় বা কণ্যুক্ত হয়ে উপস্থাপিত হয়। যেমন- স সর। গরগম নধ প, গমরস। উল্লেখ্য এই রাগে মগরস কখনও ব্যবহৃত হয় না।
গান্ধার: গান্ধার বাদী স্বর। এই রাগে শুদ্ধ গান্ধার ব্যবহৃত হয়। এই রাগে গান্ধার সরাসরি ব্যবহৃত হয় না। এর সব সময়ই অন্য স্বরের সাথে মীড়সহযোগে বা আশযুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আরোহণে সগ, গমপ আশযুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু প থেকে গ ব্যবহৃত হয় মীড়যুক্ত হয়ে।
মধ্যম: এই রাগে উভয় মধ্যম ব্যবহৃত হয়। তবে আরোহণে সব সময়ই শুদ্ধ মধ্যম ব্যবহৃত। অবরোহণে পঞ্চমের সাথে কড়ি মধ্যমকে কৌশলে ব্যবহার করা হয়। এই রাগে পমগ ব্যবহৃত হয় না। অবরোহণে পগম এই রাগের বিশেষ রূপকে প্রকাশ করে থাকে।
পঞ্চম: পঞ্চম ন্যাস স্বর। এই রাগে পমগ ব্যবহৃত হয় না। অবরোহণে পগম এই রাগের বিশেষ রূপকে প্রকাশ করে থাকে। অবরোহণে কড়ি মধ্যম ব্যবহৃত হয়। যেমন- পহ্মপ ধপ। পম ব্যবহৃত হয় না। অবরোহণে পগমরস ব্যবহৃত হয়। মপ স্বরদ্বয় খুব বেশি ব্যবহৃত হয় না। মূলত ম নধ প স্বর প্রয়োগের মাধ্যমে হাম্বিরের রূপ বিশেষভাবে প্রকাশিত হয়।
ধৈবত:
ধৈবত শুদ্ধ এবং বাদী স্বর।
এই রাগে আরোহণে
নধ
হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আবার অবরোহণে র্স থেকে ধ-এর ব্যবহারের সময় কোমল নিষাদের
ছোঁয়া লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ রূপটি দাঁড়ায় র্স ণধ, ণধ
প। তবে এই কোমল নিষাদ এতটাও গৌণ রূপে থাকে যে, সঙ্গীতগুরুরা এই নিষাদের কথা
উল্লেখই করেন না। মধ্যম থেকে নধ
পঞ্চমকে অধিক্রম করে ব্যবহৃত হয়।
নিষাদ: এই রাগে শুদ্ধ আরোহণে নিষাদ ব্যবহৃত হয়। প্রথমে এই স্বরটি শুদ্ধ ধৈবতের সাথে কণ্ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পরে পৃথকভাবে নিষাদ যুক্ত হয়ে ষড়্জতে পৌঁছায়। কিন্তু অবরোহণে সামান্য কোমল নিষাদ ব্যবহৃত হয়।
নিকটবর্তী রাগ:
কামোদ হাম্বিরে অতি নিকটবর্তী রাগ। অন্যান্য রাগের সাথে বিশেষভাবে মিল রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাগ ছায়ানট, কেদার।