পাহাড়ি
পাহাড়ী বর্তমানে অশুদ্ধ। দেখুন: পাহাড়ি অভিধান

উত্তর ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে বিলাবল ঠাটের অন্তর্গত রাগ বিশেষ। মধ্যম ও নিষাদ বর্জিত। এর প্রকৃতি ক্ষুদ্র। আরোহণ ও অবরোহণের স্বরসাম্য দেশকার বা ভূপালীর মতো। এই রাগে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ষড়্‌‌জ। বাদী স্বরের বিচারে এই রাগের চলন দেশকারভূপালী থেকে ভিন্নরূপ লাভ করে। এই দুটি রাগের ভিতরে ভূপালী অপেক্ষা দেশকার-এ পঞ্চম একটু বেশি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু পাহাড়িতে পঞ্চম এ দুটি রাগে তার চেয়েও বেশি। পঞ্চমের এই আধিক্যের জন্য পাহাড়ির সমবাদী স্বর পঞ্চম।

এই রাগের সবচেয়ে বেশি স্বরবিস্তার হয় মন্দ্র ও মধ্য সপ্তকে। সেনী ঘরানায় আরোহণে গান্ধার ও নিষাদ বর্জিত হয়, কিন্তু অবরোহণে কোনো স্বরকেই বাদ দেওয়া হয় না। ফলে রাগটির জাতি হয়ে যায়– ঔড়ব-সম্পূর্ণ।

সাধারণত ভজন,গজল, ঠুমরী ইত্যাদি আধা-রাগসঙ্গীতের উপযুক্ত বা লোকসংগীত ভিত্তিক সুরে এই রাগটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই রাগে প্রেম-বিরহ, বিষণ্ণতা ও  নৈরাশ্যের ভাব। নেকে মনে করেন, পর্বত-চূড়ায় অধিবাসী মেয়েদের গাওয়া সুরেলা পাহাড়ী সুর থেকে পাহাড়ি রাগ সৃষ্টি হয়েছে। অনুমান করা হয়- কাশ্মীর, হিমাচল, উত্তরখণ্ড, আসাম বা নেপালের পাহাড়ি লোকসুর থেকে এই রাগের সুরশৈলী গ্রহণ করা হয়েছে।

একসময় এটি রাগ হিসেবে স্বীকৃত ছিল না। তখন ধুন হিসেবেই  চালানো হতো। তবে এখন 'পাহাড়ী' রাগ হিসেবেই স্বীকৃত দেওয়া হলেও 
   

আরোহণ:  স র গ প ধ র্স
অবরোহণ : র্স ধ প গ প গ র স ধ্।
ঠাট : বিলাবল
জাতি
: ঔড়ব-ঔড়ব।
বাদীস্বর : ষড়্‌জ
সমবাদী স্বর : পঞ্চম
অঙ্গ :  পূর্বাঙ্গ
সময় : সকল সময়ে গাওয়া হয়ে থাকে।
পকড় : গ, র স ধ্‌, প্ ধ্ স


তথ্যসূত্র:
সঙ্গীত পরিচিতি (উত্তরভাগ)। শ্রীনীলরতন বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ই ভাদ্র' '৮০। ২১ আগষ্ট '৭৩