স্বাহা
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {| হিন্দু দৈবসত্তা | দৈবসত্তা | আধ্যাত্মিক সত্তা | বিশ্বাস | ্রজ্ঞা | জ্ঞান | মনস্তাত্ত্বিক বিষয় | বিমূর্তন | বিমূর্ত-সত্ত | সত্তা |}

হিন্দু পৌরাণিক কাহি
নি মতে
অগ্নিরূপী দেবী। ইনি
ব্রহ্মার অঙ্গ থেকে অর্থ নর ও অর্ধ নারীরূপে জন্ম ইনি গ্রহণ করেছিলেন অগ্নির দাহিকা শক্তিরূপী প্রকৃতি দেবী হিসাবেও এঁকে মান্য করা হয় প্রকৃতি দেবী হিসাবেও ইনি স্বীকৃত।   

দেবতারা ব্রহ্মার কাছে খাদ্য প্রার্থনা করলে, ব্রহ্মা বিষ্ণুর কাছে পরামর্শের জন্য যান বিষ্ণু অগ্নিকে বলেন যে, যজ্ঞ উপলক্ষে প্রদত্ত হবি দেবতাদের আহার হবেএরপর ব্রাহ্মণেরা হবি প্রদান শুরু করেনকিন্তু সেই হবি দেবতাদের কাছে পৌঁছুতো না। তাই দেবতারা আবার ব্রহ্মাশরণাপন্ন হন ব্রহ্মা তখন দেবতাদেরকে প্রকৃতি দেবীর পূজা করতে বলেনপরে সমবেত পূজায় প্রকৃতি দেবী সন্তুষ্ট হয়ে ব্রহ্মাকে বর প্রার্থনা করতে বলেন ব্রহ্মা প্রার্থনা করেন, যেন প্রকৃতি দেবী অগ্নির দাহিকা শক্তি ও অগ্নির স্ত্রী হয় এবং অগ্নি তাঁর (প্রকৃতি দেবী) সাহায্য ছাড়া হোমীয় দ্রব্য ভস্ম করতে না পারেকিন্তু প্রকৃতি দেবী (স্বাহা) তাতে রাজী না হয়ে বিষ্ণুর শরণাপন্ন হন বিষ্ণু স্বাহাকে বলেন যে, দ্বাপরে আমি যখন পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করবো তখন, তুমি নগ্নজিৎ রাজার কন্যারূপে (নাগ্নজিতী) জন্মগ্রহণ করে আমাকে স্বামী হিসাবে লাভ করবেদ্বাপর যুগের উক্ত ঘটনার পূর্ব পর্যন্ত তুমি অগ্নি দাহিকা শক্তি রূপে কাজ করবেউল্লেখ্য স্বাহা নগ্নজীতের কন্যা হিসাবে দ্বাপরে জন্মগ্রহণ করেন এবং পিতার নামানুসারে তাঁর নাম হয় নাগ্নজিতী বিষ্ণু অবতার হিসাবে কৃষ্ণরূপে জন্মগ্রহণ করলে কৃষ্ণ সাথে তাঁর বিবাহ হয়

মহাভারতের মতেস্বাহা ছিলেন দক্ষের  কন্যা। তিনি অগ্নিকে কামনা করে ব্যর্থ হন অগ্নি এই সময় সপ্তর্ষিদের স্ত্রীদের দিকে তাকিয়ে অত্যন্ত কামার্ত হয়ে পড়েন কিন্তু এই নারীদের পাবেন না বলে তিনি দুঃখে বনে যান স্বাহা এই সংবাদ জেনে একে একে ছয়জন ঋষির স্ত্রীর রূপ ধারণ করে অগ্নির কাছে যান সপ্তর্ষিদের স্ত্রীদের মধ্যে বশিষ্ঠ মুনির স্ত্রী অরুন্ধতী  ছিলেন তীব্র তাপসিনী এই কারণে স্বাহা অরুন্ধতির রূপ ধরতে ব্যর্থ হয়েছিলেন অগ্নির সাথে স্বাহা ছদ্মবেশে মিলিত হন প্রতিবারের মিলনের পর অগ্নির স্খলিত বীর্য স্বাহা একটি কুণ্ডে নিক্ষেপ করেন পরে এই কুণ্ড থেকে স্কন্দ (কার্তিকেয়)-এর জন্ম হয়এই ঘটনার পর ঋষিরা তাঁদের স্ত্রীদের দুশ্চরিত্রা জ্ঞানে ত্যাগ করেনস্বাহা পরে সব স্বীকার করে নিলে এবং স্কন্দের অনুরোধে ঋষিরা তাঁদের স্ত্রীদের গ্রহণ করেনস্বাহা অগ্নির সাথে বাস করার জন্য স্কন্দের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলে, স্কন্দ বলেন যে- হোমাগ্নিতে আহুতি প্রদানকালে স্বাহা অগ্নির সাথে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করলেই তাঁর অগ্নির সাথে থাকা সম্ভব হবে 

অগ্নির ঔরসে স্বাহা তিনটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন এরা ছিলেন পাবক, পবমান ও শুচীএ ছাড়া অগ্নিবেশ্য নামে আরও একটি পুত্রের কথা জানা যায়

অগ্নির স্ত্রী হিসাবে এঁর অন্যান্য নাম হলো
অনলপ্রিয়া, অনলভাবিনী