আরএনএ
বানান বিশ্লেষণ :
ডি+এন+এ।
উচ্চারণ:
ar.en.e
(আর.এন.এ)
শব্দ-উৎস: ইংরেজি Rribo Nucleic Acid এর সংক্ষিপ্ত রূপ RNA>বাংলা আরএনএ।
পদ: বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{|পলিমার
|
রাসায়নিক যৌগ
|
বস্তু
|
দৈহিক সত্তা
|
সত্তা
|}
জীবের বংশগতি নির্ধারক জটিল অনুর দ্বারা গঠিত
দীর্ঘ পলিমার বিশেষ। এর মূল উপাদান হিসেবে
রাইবোজ
নামক
কার্বোহাইড্রেড
থাকায় এর নামকরণ করা হয়েছে রাইবোনিউক্লিক এ্যাসিড।
আরএনএ এবং ডিএনএ- গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে
নাইট্রোজেন ক্ষারের
(এ্যাডেনিন,
গুয়ানিন,
সাইটোসিন,
ইউরাসিল
বা
থাইমিন) সাথে
পেন্টোজ
কার্বোহাইড্রেড- (রাইবোজ
বা
ডিঅক্সিরাইবোজ)
যুক্ত হয়ে তৈরি হয় নিউক্লিওসাইড। আর নিউক্লিওসাইডের সাথে
ফসফরিক এ্যাসিড
যুক্ত হয়ে তৈরি হয় নিউক্লিওটাইড।
আরএন-এর ক্ষেত্রে ভিত্তি হিসেবে থাকে
পেন্টোজ
কার্বোহাইড্রেড-এর
রাইবোজ।
আর
নাইট্রোজেন ক্ষার
হিসেবে থাকে
এ্যাডেনিন,
গুয়ানিন,
সাইটোসিন
ও
ইউরাসিল।
এসব উপদানের সমন্বয়ে তৈরি হয় আরএনএ-এর
আরএন সাধারণত একতন্ত্রী হয়ে থাকে। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতো কিছু ভাইরাসে
দ্বিতন্ত্রী হয়ে থাকে।
ফসফরিক এ্যাসিড
এবং দুই রকমের নাইট্রোজেন ভিত্তিক ক্ষারক যুক্ত হয় থাকে, যথা:
পিউরিন ও
পিরিমিডিন । পিউরিন বেস দু'রকম, যথা :
অ্যাডেনিন ও
গুয়ানিন এবং পিরিমিডিন বেসও দু'রকম যথা:
সাইটোসিন ও
ইউরাসিল ।
জীবদেহে দুই ধরনের আরএনএ দেখা যায়। এগুলো হলো
১. বার্তাবাহী আরএনএ (Messenger RNA)। সংক্ষিপ্ত নাম এমআরএনএ (MRNA)। এর কাজ হলো কোষের প্রাণকেন্দ্রের ভিতরে অবস্থিত ডিএনএ থেকে বংশগতির সঙ্কেতের অনুলিপি তৈরি করা। একে বলা হয় ট্রান্সক্রিপসন(Transcription) করা। একটি MRNA একবারে মাত্র একটি জিনকে বহন করে আনতে পারে। কিন্তু একটি ডিএনএ-এর ক্ষেত্রে MRNA বার বার কপি করে অসংখ্য প্রোটিন তৈরি করতে পারে। ডিএনএ কোড-এ mRNA কোষের প্রাণকেন্দ্রের বেড়া অতিক্রম করে কোষের সাইটোপ্লাজমের মধ্যে চলে আসে। এরপর সাইটোপ্লাজমের কোষের মধ্যে অবস্থিত রাইবোজমের মধ্যে ঢুকে পড়ে।
২. রূপান্তরী আরএনএ (Transfer RNA): সংক্ষেপে tRNA)। mRNA কপি কৃত জিন রাইবোজমে প্রবেশ করলে, tRNA প্রাপ্ত সংকেতকে অন্য তথ্য সংকেতে পরিণত করে। এই অনুবাদের ফলে রাইবোজম জানতে পারে, ডিএনএ প্রোটিন তৈরির জন্য কোন ধরনের এ্যামিনো এ্যাসিড তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। প্রতি ৩টা ডিএনএ কোড বা কপিকৃত আরএনএ কোড এক একটা এ্যামিনো এসিডে নির্দেশক হিসাবে কাজ করে। একে CODON (কডন) বলা হয়। রাইবোজমের অভ্যন্তরে tRNA,MRNA হতে প্রাপ্ত কপিকৃত সংকেতগুলোকে কডন টেবিলের চার্ট অনুসারে, কোন কডন হতে কোন এ্যামিনোএসিড উৎপন্ন করতে হবে, তা রাইবোজম অনুসরণ করে। উল্লেখ্য অসংখ্য এ্যামিনো এ্যাসিড যুক্ত হয়ে নানা ধরনের প্রোটিন তৈরি করে। আবার প্রোটিন থেকে তৈরি হয়, নানা ধরনের এনজাইম। এর শরীরের বিভিন্ন কাজে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধের জন্যও প্রোটিন সক্রীয় ভূমিকা রাখে।
আর্কিয়ান কালে রাসায়নিক আসক্তির সূত্রে আরএনএ [ribonucleic acid (RNA)] সৃষ্টি হয়েছিল। মূলত এই সৃষ্টি প্রক্রিয়ার ভিতর মধ্য দিয়েই তৈরি হয়েছিল আদি জীবকোষ।