আর্কিয়ান কাল
৪০০-২৫০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ।
Archean eon 

পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক কাল বিভাজনের বিচারে এই কালটিকে ক্যাম্ব্রীয়-পূর্ব মহাকালের দ্বিতীয় কাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। Archean শব্দটি গ্রহণ করা হয়েছে গ্রিক ভাষা থেকে। প্রাচীন গ্রিক Αρχή (Arkhē))-এর অর্থ হলো- আদি বা শুরু। এই অর্থানুসারে আর্কিয়ন কালের অর্থ দাঁড়ায় 'প্রারম্ভিক কাল'। যেহেতু পূর্বর্তী হেডিন কালের শেষে সৃষ্ট উপকরণসমূহ নিয়ে পৃথিবীর নতুন যাত্রাপথের সূচনা হয়েছিল। তাই বিজ্ঞানীরা এই সময়কে হয়তো এই নামে অভিহিত করেছিলেন। যেমন- আগের পর্বে কেন্দ্রমণ্ডল এবং ক্র্যাটনসমূহের বিকাশে যে ভূস্তরের নবতর রূপান্তরের সূচনা হয়েছিল, তাই এ যুগে এসে মহা-মহাদেশ গঠনে তৈরি হয়েছিল। একই সাথে তৈরি হয়েছিল আদি- মহামহাসমুদ্র। আবার জীবজগতের আদি উপকরণসমূহ তৈরি হয়েছিল হেডিন কালের শেষে। কিন্তু এই কালে এসে প্রকৃত জীবের সৃষ্টি হয়েছিল।

পূর্ববর্তী হেডিন কালের শেষের দিকে ৪১০ থেকে ৪০০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দের ভিতরে পৃথিবীর কেন্দ্রমণ্ডল গঠন শুরু হয়েছিল। একই সাথে জীবের আদি-উপকরণও তৈরি হয়েছিল এই সময়। এরপর নতুন পরিবেশে নতুন বিবর্তন ও সৃষ্টি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ৪০০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে। এই কালে এসে সৃষ্টি হয়েছিল পর্যায়ক্রমে তিনটি মহা-মহাদেশ। এগুলো হলো-ভাল্বারা, উর আর
কেনোরল্যান্ড। এই কালের শেষে পৃথিবীর বুকে প্রথম বরফযুগ হুরোনিয়ান-এর সূচনা হয়েছিল। এই যুগের সৃষ্ট ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সূত্রে জীবনের প্রকৃত যাত্রাপথের সূচনা ঘটেছিল।

ভূপ্রকৃতির ক্রমবিবর্তনের ধারা অনুসরণে-
ভূবিজ্ঞানীরা এই কালকে ৪টি যুগে ভাগ করেছেনে। এই যুগগুলো হলো−
১. ইয়োআর্কিয়ান যুগ: ৪০০কোটি থেকে ৩৬০কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ
২. প্যালেয়োআর্কিয়ান যুগ: ৩৬০ কোটি থেকে ৩২০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ
৩. মেসোআর্কিয়ান যুগ: ৩২০ কোটি থেকে ২৮০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ
৪. নিয়োআর্কিয়ান যুগ: ২৮০ কোটি থেকে ২৫০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ
ভূ-সংগঠন ও আবহাওয়া
আগের হেডিন কালে পৃথিবীর কেন্দ্রমণ্ডল গঠনের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এই কালের শুরু দিকে বায়ুমণ্ডলের অতিরিক্ত তাপমাত্রা পৃথিবীর কেন্দ্রমণ্ডল গঠনে বিশেষ সহায়ক ছিল না। এই কালের আগে পৃথিবীর ভূত্বকের উপর দিয়ে যে উত্তপ্ত বায়ু প্রবাহ হতো, তার তাপমাত্রা ছিল বর্তমান পৃথিবীর তাপমাত্রার ৩ গুণেরও বেশি।

এই কালের শুরুর দিকে অর্থাৎ ইয়ো-আর্কিয়ান যুগে (৪০০ কোটি থেকে ৩৬০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) পৃথিবীর তাপমাত্রা ছিল বর্তমান পৃথিবীর তাপমাত্রার প্রায় তিনগুণ। এই সময় ব্যাপক অগ্ন্যুৎপাত, এই তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছিল। অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে ভূ-গোলকের উপরিতলের ম্যাগমা অপেক্ষাকৃত কম ঘন ছিল এবং ভূত্বক বেশ পাতলাও ছিল। অন্যদিকে মহাসাগরের তলদেশ অপেক্ষাকৃত বেশি শীতল থাকায়, সাগরতলের তরল ম্যাগমা দ্রুত শীতল হয়ে আগ্নেয়শিলাস্তরের পুরুত্ব বৃদ্ধি করেছিল।

জলে বা ডাঙায় পৃথিবীর উপরিতলের সবখানের ভূত্বকের নিচের ম্যাগমা থেকে উৎপন্ন বায়বীয় অংশ প্রবল গ্যাসীয় চাপের সৃষ্টি করেছিল। ফলে ভূত্বকের কোনো অংশ ফুলে উঠেছিল এবং এই সূত্রে ভূত্বকের কোনো কোনো অংশ থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি করেছিল। ভূত্বকের ফুলে ওঠা অংশের তলদেশের ম্যাগমা থেকে প্রবল বেগ বেড়িয়ে যাওয়ার সময় ফাঁকা জায়গা পূরণ করেছিল নিচের পাতলা ম্যাগমা। পরে এই ম্যাগমা শীতল হয়ে ভূত্বকের পুরুত্ব আরও বৃদ্ধি করেছিল। এর ফলে ভূত্বকে সৃষ্টি হয়েছিল উঁচু-নিচু কিন্তু সুদৃঢ় ভূখণ্ড। এই প্রক্রিয়া সমগ্র পৃথিবীর ভূত্বক জুড়ে ছিল বহু বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূখণ্ড সৃষ্টিতে সহায়তা করেছিল। এই প্রক্রিয়ার ভিতরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আগ্নেয়-দ্বীপে বার বার প্লাবিত ম্যাগমা এবং অগ্ন্যুৎপাতঘটিত ছাই ভস্মের অধঃক্ষেপের কারণে, জোড়া লেগে বড় ভূখণ্ড তৈরি করেছিল। এই সূত্রেই তৈরি হয়েছিল প্রাক্-মহাদেশীয় ক্র্যাটন আর্কিয়ান কালের শুরুর দিকে ৪০০ থেকে ৩৭০ কোটি পূর্বাব্দের ভিতরে বহু প্রাক্-মহাদেশীয় ক্র্যাটন সৃষ্টি হয়েছিল। তবে ৪০০-৩৮৫ কোটি বৎসরের ভিতরে বড় ধরনের মহাদেশীয় ক্র্যাটন তৈরি হওয়াটা সম্ভব ছিল না। কারণ, এই সময়ে ভূত্বকের তলের ম্যাগমা ছিল অনেক বেশি তরল। তাই আদি ক্র্যাটনগুলো দ্রুত সঞ্চালিত হতো। অনেক সময় পরস্পরের ধাক্কাধাক্কিতে এদের প্রান্তদেশ ভেঙে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হতো। কিন্তু অনেক ক্র্যাটন বা মহাদেশীয় ঢাল-ভূখণ্ডের ভিত্তি এই সময়ের ভিতরে তৈরি হয়েছিল। ৩৯৬ কোটি পূর্বাব্দের দিকে কানাডিয়ান ঢাল-ভূখণ্ড (
Canadian Shield) তৈরির প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছিল। তবে ৩৯৩ কোটি পূর্বাব্দের ভিতরে এই ঢাল-ভূখণ্ডটি সুস্থির দশায় পৌঁছেছিল।

এতকিছুর পরেও পৃথিবী তার তাপমাত্রা হারাচ্ছিল। ৩৯৫ কোটি পূর্বাব্দের দিকে পৃথিবী অনেকটা শীতল হয়ে পড়েছিল। এতদিনের উত্তপ্ত পৃথিবীর গ্যাসীয় অংশ আকাশে ঘন মেঘের সৃষ্টি করেছিল। একে বলা যায় অন্তঃহীন মেঘ। এই মেঘ পৃথিবীকে এতটা নিবিড়ভাবে ঢেকে ফেলেছিল যে, সে মেঘকে ভেদ করে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছাত না। এরপর এলো মহাবর্ষণ, সেই সূত্রে এলো মহাপ্লাবন। জলের চাপ এবং  ভূত্বেকর বিশাল কঠিন অংশের চাপ সহ্য করতে না পেরে, পৃথিবীর ভূত্বকের বিশাল অংশ গভীরভাবে বসে গেল। আর গভীর খাদের শূন্যতা পূরণ করে দিল বৃষ্টিজাত শীতল তরল পদার্থ। আর অন্যান্য বন্ধুর ভূমির উপর দিয়ে জলপ্রবাহ অপেক্ষাকৃত নিচু ভূমির দিকে সঞ্চালিত হলো। ঝরে পড়া জলপ্রবাহ সৃষ্টি করলো অসংখ্য নালা। এই নালাগুলো হলো আমাদের শরীরের শিরা-উপশিরা বা গাছের শাখা-প্রশাখার মতো। এই সব নালার দ্বারা ভূত্বকে জলের সঞ্চার ঘটালো। ক্রমে জমে উঠা জলরাশি দিয়ে তৈরি হয়েছিল পৃথিবীর আদি সমুদ্র। ডাঙার উপর দিয়ে প্রবাহিত জলধারায় মিশলো নানা ধরেনর ধরনের খনিজ উপাদান। ফলে বিশেষ করে নানা ধরনের লবণ সমাহারে মহাসাগরে জল হয়ে গেল লবণসমৃদ্ধ। এই ভাবে সৃষ্টি হয়েছিল আদি সমুদ্র। এর ভিতরে ৩৯২-৩৮৫ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দের দিকে প্রচুর এবং ভারি উল্কাখণ্ডের পতন ঘটেছিল। আবার প্রবল বৃষ্টিও ছিল। এর ফলে অগভীর এবং ভাসমান স্থলভূমিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল।

৩৮৫ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দের দিকে ভূত্বকে রূপান্তরিত শিলা সৃষ্টির প্রক্রিয়া সচল হয়ে উঠেছিল। এই সময় গ্রিনল্যান্ডের ফসফেটসমৃদ্ধ খনিজ পদার্থের সৃষ্টি হয়েছিল। এছাড়া ক্ষুদ্র ক্র্যাটনগুলো যুক্ত হয়ে মহাকাশীয় ক্র্যাটন এবং মহাকাশীয় ঢাল-ভূখণ্ড (
Shield ) তৈরির প্রক্রিয়া চলছিল। ৩৮২ -৩৮০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে সৃষ্টি হয়েছিল বৃহত্তর রাশিয়া ইউক্রেইন ঢাল-ভূখণ্ড (Ukrainian Shield ) এবং ভোরোনেঝ মাসিফ (Voronezh Massif ) অঞ্চল। এর ভিতরে ইউক্রেইন ঢাল-ভূখণ্ডের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১০০০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ছিল ২৫০ কিলোমিটার। পক্ষান্তরে ভোরোনেঝ মাসিফ দৈর্ঘ্য ৮০০ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ৩০০-৪০০ কিলোমিটার। ৩৮০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে এগুলো মিলিত হয়ে প্রথম মহাদেশীয় ক্র্যাটনের উদ্ভব হয়েছিল। এই সময় গ্রানাইড ব্লক তৈরি হয়েছিল। এই সময় ইউক্রেইন ঢাল-ভূখণ্ড এবং ভোরোনেঝ মাসিফ সংযুক্ত অবস্থায় পূর্ব ইউরোপীয় ক্র্যাটনের আদি রূপ লাভ করে। এই নতুন রূপ লাভের সূত্রে ইউক্রেইন ঢাল-ভূখণ্ড এবং ভোরোনেঝ মাসিফের প্রাচীন পাথরগুলো ভূত্বকের আরো গভীরে প্রবেশ করে। ৩৭০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে পশ্চিম গ্রিনল্যাণ্ডের আদি পাললিক শিলা উৎপন্ন হয়। এছাড়া ভাল্বারা মহা-মহাদেশের কাপ্‌ভাল ক্র্যাটন উৎপন্ন হয় এই সময়। এরই মাঝে অগ্ন্যুৎপাতও ঘটে চলে ছিল। ফলে বায়ুমণ্ডলে যুক্ত হচ্ছিল নূতন নূতন গ্যাসীয় উপকরণ। এই সময়ের বাতাসের প্রাথমিক উপাদন ছিল জলীয় বাস্প (H2O), হাইড্রোক্লোরিক এ্যাসিড (HCl), কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2), কার্বন মনো-অক্সাইড (CO), নাইট্রোজেন (N2) ইত্যাদির মতো গ্যাসীয় উপকরণ। পরবর্তী সময়ে এদের ভিতর রাসায়নিক বিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল মিথেন (CH4) এ্যামোনিয়া (NH3) এবং হাইড্রোজেন সায়ানাইড HCN জাতীয় যৌগ পদার্থ। এই সময় বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম ছিল।

মহাদেশীয় অবস্থা
৩৬০ কোটি পূর্বাব্দ ছিল আর্কিয়ান কালের প্রথম যুগ ইয়ো-আর্কিয়ান যুগের অন্তিম সময়। এরপর শুরু হয় প্যালেয়োআর্কিয়ান যুগ (৩৬০ কোটি থেকে ৩২০ কোটি পূর্বাব্দ)।

একটু আগেই উল্লেখ করেছি, ৩৭০  কোটি পূর্বাব্দে দিকে কাপ্‌ভালা ক্র্যাটনের উদ্ভব হয়েছিল। এর আয়তন ছিল প্রায় ১২ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে এই ক্র্যাটন দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। ৩৬০ কোটি পূর্বাব্দের দিকে পিলবারা ক্র্যাটনটি আদি দশা নিয়ে এর সাথে যুক্ত হয়ে যায়। উল্লেখ্য, পিলবারা ক্র্যাটন পূর্ণতা লাভ করেছিল ৩৬০ থেকে ২৭০ কোটি পূর্বাব্দের ভিতরে। উল্লেখ্য পিলবারা ক্র্যাটন এখন পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার অংশ। উভয় ক্র্যাটনের মিলিত হয়ে তৈরি হয় পৃথিবীর প্রথম মহা-মহাদেশ ভাল্বার।

ধারণা করা হয় ৩৬০ থেকে ৩২০ কোটি বৎসরে দিকে কাপ্‌ভালা ক্র্যাটনের বার্বের্টোন গ্রিনস্টোন বলয়ে উদ্ভব হয়েছিল মাখোঞ্জওয়া পর্বতমালা।  এই পর্বতমালার দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ প্রায় ৬০ কিলোমিটার। এর শৃঙ্গগুলোর উচ্চতা ৬০০ থেকে ১৮০০ মিটার। অন্যদিকে ৩৫০-৩২০ কোটি পূর্বাব্দে ভাল্বারার পিলবারা অঞ্চলের এই রুক্ষ প্রান্তরে হঠাৎ আঘাত হেনেছিল ছিটকে পড়া অন্তত চারটি কার্বন-সমৃদ্ধ গ্রহাণু।
এর ফলে বিপুল উত্তাপ এবং ধুলোবালি বায়ুমণ্ডলকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল। বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছিল নানা ধরনের গ্যাসীয় উপকরণ। উভয় প্রক্রিয়ার ভিতরে এই সময় পুরো ভাল্বারা জুড়ে ছিল এবড়ো থেবড়ো বন্ধুর ভূমি। কোথায় মাথা উঁচু করে ছিল আদিম পর্বতশৃঙ্গ। আবার পাথুরে ভূত্বকের কোথাও জমেছিল বিপুল পরিমাণ জমেছিল ধুলোর স্তর। কোথাও কিম্বা বৃষ্টিতে পানিতে ভিজে তৈরি হয়েছিল কাদার আস্তরণ।
৩১০ কোটি পূর্বাব্দে ভাল্বার একটি পরম আকার লাভ করেছিল। কিন্তু এরপর থেকে এর বড় বড় ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন হতে থাকে। ৩০০ কোটি অব্দের দিকে শেষ পর্যন্ত ভাল্বারা ভেঙে যেতে থাকে। ২৮০ কোটি পূর্বাব্দের ভিতরে এই ভাঙন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। আর এই বিভাজনের সূত্রে ০ কোটি পূর্বাব্দে আর্কিয়ান কাল-এর নিয়ো-আর্কিয়ান যুগে, নতুন মহা-মহাদেশ কেনোরল্যান্ড -এর সৃষ্টি হয়েছিল।

সমসাময়িক অন্যান্য ভূতাত্ত্বিক উপাদান
৩৬০ কোটি পূর্বাব্দ থেকে ৩১০ কোটি পূর্বাব্দের ভিতরে যখন ভাল্বারা মহা-মহাদেশ চূড়ান্ত অবয়বে পৌঁছেছিল, সে সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভূত্বকে নানা ধরনের উপকরণে সৃষ্ট-লয়ের ব্যাপার ঘটে চলেছিল। যেমন-

উর মহাদেশ
প্রায় ৩০০ কোটি পূর্বাব্দে পৃথিবীর আদিমতম মহা-মহাদেশ ভাল্বারা যখন ভেঙে যাচ্ছিল, তার আগে থেকেই ৩২০ কোটি পূর্বাব্দের ভাল্বারার উত্তরাংশে একটি পৃথক স্থলভূমি তৈরির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল। এর আকার ছিল বর্তমান অষ্ট্রেলিয়ার চেয়েও ছোট। ভাল্বারার বিচারে তুলনা করে বিজ্ঞানীরা একে মহাদেশ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। নতুন এই  মহাদেশকে বিবেচনা করা হয়, পৃথিবীর প্রথম মহাদেশ। জর্মান 'Ur' শব্দের অর্থ হলো আদি বা মূল। প্রথম মহাদেশে হিসেবে বিজ্ঞানীরা 'উর (Ur)' গ্রহণ করেছেন। বাংলায় Ur continent -এর অর্থ হয় 'আদি মহাদেশ'। ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে এর নামকরণ করেছিলেন Rogers, John J.W.

৩২০ কোটি পূর্বাব্দের দিকে ভারতের পশ্চিম কর্ণাটক ক্র্যাটন এবং সিংহভূম ক্র্যাটন যুক্ত হয়ে একটি অখণ্ড ভূখণ্ড তৈরি হয়েছিল। ৩০০ কোটি পূর্বাব্দে এই ক্র্যাটন দুটি সুস্থির দশায় পৌঁছেছিল।  এর ফলে উর মহাদেশ সামায়িকভাবে দৃঢ়তা লাভ করে।

অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ঘটনা

কেনোরল্যান্ড মহা-মহাদেশ
২৮০ কোটি পূর্বাব্দে মেসোআর্কিয়ান যুগের পরে শুরু হয়  নিয়ো-আর্কিয়ান যুগ। এর ব্যাপ্তীকাল  ২৮০ কোটি থেকে ২৫০ কোটি পূর্বাব্দ

আগের যুগের
২৯০ কোটি পূর্বাব্দে বাল্টিক ঢাল-ভূখণ্ড অবলম্বনে যখন কেনোরল্যাণ্ডের গড়ে উঠা শুরু হয়, তখন ভাল্বারা মহা-মহাদেশ এবং উর মহাদেশ সুস্থির অবস্থাতেই ছিল। কিন্তু ২৮০ কোটি পূর্বাব্দে উর এবং ভাল্বারা উভয়েরই ভাঙন শুরু হয়। এর ভিতরে উর মহাদেশটির বৃহৎ অংশ কেনোরল্যান্ড মহা-মহাদেশের সাথে যুক্ত হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে ২৭০ কোটি পূর্বাব্দে কেনোরল্যাণ্ড একটি বিশাল আকার লাভ করে। ২১০ কোটি পূর্বাব্দে কেনোরল্যাণ্ড মহা-মহাদেশটি বিভাজিত হয়ে যায়।

এই সময় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছিল দীর্ঘসময় ধরে।  ফলে ভূভগের উপর প্রবল পানির চাপসহ প্রবল স্রোতের কারণে মহা-মহাদেশটির বিভাজনকে সহজ করে দিয়েছিল। বৃষ্টিপাতের ফলে বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড দ্রবীভূত হয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে শীতলীকরণে পথে ঠেলে দিয়েছিল। এই সূত্রে পৃথিবীতে নেমে এসেছিল, প্রথম বরফ যুগ (ice age, এই যুগ ভূতাত্ত্বিক সময়-মানের একক নয়) সুচনা ঘটেছিল। একে বলা হয় হুরোনিয়ান বরফযুগ বলা হয়।

প্রোটেরোজোই কালের পালেপ্রোটারোজোয়িক যুগে  (Paleoproterozoic era) ২৪০-২১০ কোটি বৎসরের ভিতরে এই বরফযুগটি স্থায়ী ছিল। এই বরফযুগও এই মহাদেশকে বিভাজিত করার ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।

ইতিমধ্যে ভাল্বারা মহা-মহাদেশের ভাল্‌বারা এবং অষ্ট্রেলিয়ার পিলবারা ক্র্যাটন কেনোরল্যান্ডের সাথে যুক্ত হয়ে যায়। ২৭৭ কোটি পূর্বাব্দে পিলবারা ক্র্যাটনের দক্ষিণাঞ্চলে হ্যামারস্লে বেসিন (Hamersley Basin) আত্মপ্রকাশ করে। আর কাপ্‌ভাল ক্র্যাটনের উত্তর প্রান্তে ২৭৫, কোটি পূর্বাব্দে তৈরি হয় রেনোস্কটের্কোপ্পিস গ্রিনস্টোন বেল্ট তৈরি হয়। ২৭৩ কোটি ৬০ লক্ষ পূর্বাব্দে কানাডার টেমাগামি গ্রিনস্টিন বেল্ট তৈরি হয়। ২৭০ কোটি ৭ লক্ষ পূর্বাব্দে তৈরি হয় ব্ল্যাকল রিভার মেগাক্যাল্ডেরা কম্প্লেক্স তৈরি হয়। এই অঞ্চল বর্তমানে কানাডার ওন্টারিও এবং কুইবেক অংশ উৎপন্ন হয়। ২৫০ কোটি পূর্বাব্দে আর্কিটিকা মহাদেশ তৈরি হয়েছিল। এর ভিতর দিয়ে শেষ হয়ে যায়  আর্কিয়ান কাল। এরপর শুরু হয় প্রোটেরোজোইক কাল। এই কালের ব্যাপ্তীকাল ২৫০ কোটি থেকে ৫৪.১ কোটি পূর্বাব্দ।

আর্কিয়ান কালের জীবজগৎ
সাগরগুলোর তরল পদার্থের সিংহভাগ দখল করে নিয়েছিল নানা যৌগিক পদার্থ মিশ্রিত জলরাশি জলরাশি এবং এই সাগরের পানিতেই সূচনা ঘটেছিল আদি প্রাণের। সে সময়ের সাগরের পানির উপযুক্ত তাপমাত্রা, পানিতে দ্রবীভূত বা ভাসমান রাসায়নিক উপকরণ, আর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশকৃত অতি-বেগুনরশ্মি-সহ বিভিন্ন ধরনের মহাজাগতিক রশ্মির আঘাতে, নূতন ধরনের জটিল অণু সৃষ্টি করেছিল।

৪০০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দের ভিতরে সৃষ্টি হয়েছিল ফসফরিক এ্যাসিড, নানা ধরনের চিনি, নাইট্রোজেন ঘটিত ক্ষারক (পিউরিন ও পিরামিডিন)। আদি সমূদ্রের উপযুক্ত পরিবেশে এই সকল জটিল অণুসমূহের ক্রম-সংযোজনে সৃষ্টি হয়েছিল আদি নিউক্লেইক এ্যাসিড
এই এ্যাসিডে বংশগত তথ্য সংরক্ষণ করা ও সুনির্দিষ্ট প্রোটিন অণু তৈরি করার ক্ষমতার সূত্রে এক ধরনের আক্ষেপ সৃষ্টি হয়েছিল। রাসায়নিক আসক্তির সূত্রে এই এ্যাসিডগুলো গড়ে তুলেছিল আরএনএ [ribonucleic acid (RNA)] । মূলত এই সৃষ্টি প্রক্রিয়ার ভিতর মধ্য দিয়েই তৈরি হয়েছিল আদি জীবকোষ।
আদি জীবকোষের এই দশা থেকেই সম্ভবত আদি জীবকণিকারূপে ভাইরাসের উদ্ভব হয়েছিল। তবে প্রাচীন শিলাস্তরে এর কোনো নমুনা পাওয়া যায় নি। জীববিবর্তনের ধারায় এই ধারণা করা হয়, শুধু ভাইরাসের আদিম কোষীয় উপকরণ বিবেচনা করে।


৩৯০ কোটি বছর আগের আদি জীবকণিকাগুলোর দেহে তৈরি হয়েছিল কেমো-অটোট্রোপ্স (chemoautotrophs) উপকরণ। এর সাহায্যে এরা বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে কার্বন সংগ্রহ করতো এবং অক্সিজেন-ঘটিত পদার্থ ত্যাগ করতো। এই জীবকণিকা থেকে তৈরি হয়েছিল প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ উদ্ভব হয়েছিল জৈবিক-পদার্থের সমন্বয়ে। এদের দেহে সৃষ্টি হয়েছিল গ্লাওকোলাইসিস Glycolysis প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত শক্তি জীবকণিকাগুলোর ভিতরে সঞ্চালিত হতো।

আদি জীবকোষগুলো ছিল প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক (Prokaryotes)অর্থা এই জাতীয় কোষে কোনো সুষ্পষ্ট প্রাণকেন্দ্র  ছিল না। অধিকাংশ প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষযুক্ত জীবদেহ একটি মাত্র কোষ দ্বারা গঠিত হয়েছিল এই কোষে সুসংগঠিত ডিএনএ, মাইটোকণ্ড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, লাইসোজোম, গলজি বস্তু অনুপস্থিত। সাধারণত এই কোষের আকার এক থেকে দশ মাইক্রোমিটার (µm) এর মধ্যে হয়ে থাকে। 

৩৮০ কোটি বছর আগে এই আদি জীবকোষেরই একটি প্রজাতি আর্কেব্যাক্টেরিয়ার  উদ্ভব ঘটেছিল। প্রায় ৩০০ কোটি বছর আগের পুরানো জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে, এই ব্যাক্টেরিয়া পূর্বপুরুষদের অস্তিত্বের কথা জানা গেছে। এরা ভিন্ন প্রক্রিয়ায় সালোকসংশ্লেষণের কাজ করতো। কার্বন , হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ম্যাগনেশিয়াম-এর একটি যৌগিক অণুর সাথে- হাইড্রোকার্বন যৌগ যুক্ত হয়ে তৈরি হয়েছিল ক্লোরোফিল। আধুনিককালে আর্কেব্যাক্টেরিয়ার শ্রেণিকরণে  ক্লোরোফিলগুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ দুটো হলো

এ্যাডেনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP)

প্রতিটি বিভাগের সাথে যুক্ত থাকে পরফাইরিন (porphyrin) বলয়। এর কেন্দ্রে থাকে ম্যাগনেসিয়াম Mg++) আয়ন। এই আয়নগুলো ছিল -CHO, -CH=CH2, CH3, -CH2CH3, -CH2CH2COO। এর ভিতরে Chlorophyll f -এর আদি নমুনা পাওয়া গেছে পশ্চিম অষ্ট্রেলিয়ার শার্ক উপসাগরীয় অঞ্চলের পাথরে। এই ক্লোরোফিলের সাহায্যে  আর্কেব্যাক্টেরিয়া বা এই জাতীয় জীবকণিকাগুলো সূর্যের অবলোহিত রশ্মি ((infrared light) গ্রহণ করতো। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া এই ক্লোরোফিলের সাহায্যে এরা হাইড্রোজেন সালফাইড ব্যবহার করে এ্যাডেনোসিন ট্রাইফসফেট (Adenosine triphosphate) উৎপন্ন করতো এবং বাতাসে গন্ধক পরিত্যাগ করতো। এই কারণে এদের শরীরের পৃথকভাবে চিনি তৈরি হতো না।

৩৫০ কোটি বৎসর আগে, প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ-ভিত্তিক আদি জীবকণিকা বিভাজিত হয়ে দুটি ধারার জীবজগতের সূচনা করে। এই ভাগ দুটি হলো ব্যাক্টেরিয়া (bacteria ) এবং আর্কিয়া  (archaea)। জীববিজ্ঞানের শ্রেণিকরণে এই দুই জাতীয় জীবকে জীব-স্বক্ষেত্র (Domain) বলা হয়।

আর্কিব্যাক্টেরিয়ার প্রাচীনতম নমুনা পাওয়া গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের Yellowstone National Park.-এ

বহুদিন ধরে বিজ্ঞানীদের কাছে ব্যাক্টেরিয়া এবং আর্কেব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য স্পষ্ট ছিল না। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে Carl Woese এবং George Fox উভয় জীবকণিকার পার্থক্য নিরূপণ করে আর্কেব্যাক্টেরিয়াকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করতে সমর্থ হন। উল্লেখ্য  আর্কেব্যাক্টেরিয়ার প্রাচীনতম নমুনা পাওয়া গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের Yellowstone National Park.-এ। এই বিজ্ঞানীদ্বয় কিছু জীবকণিকা প্রাপ্তির সূত্রে আর্কিয়া এবং ব্যাক্টেরিয়া ডোমেইন হিসেবে ভাগ করেন। ধারণা করা হয়, ৩০০ বৎসর থেকে ১৬০ কোটি পূর্বকালে পৃথিবীর জীবজগতের প্রতিনিধি ছিল ব্যাক্টেরিয়া'র এবং আর্কিয়া এই ব্যাক্টেরিয়াগুলোতে ছিল প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ (Prokaryotes)। অর্থা এই সকল কোষে কোন নিউক্লিয়াস, ক্লোরোপ্লাস্ট, মাইটোকন্ড্রিয়া, কোষ গহ্বর ইত্যাদি ছিল না। ৩৫০-৩০০ কোটি বছরের এই জীবকণিকাগুলো বিকশিত হয়েছিল।

জীবকোষের নতুন ধারা: সু-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ
জীবের ক্রমবিকাশের ধারায় আদি জীবকোষে
প্রাণকেন্দ্র  যুক্ত হয়ে, জীবজগতের নতুন ধারার সূচনা হয়। এই জাতীয় কোষকে বলা হয় সু-প্রাণকেন্দ্রিক  কোষ (Eukaryotic cell)। ১৯৯৯ সালে ভূতত্ত্ববিদরা উত্তর-পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কিছু পাথরের সন্ধান এদের সন্ধান পান। এই পাথরগুলো ২৭০ কোটি বৎসর আগে সৃষ্টি হয়েছিল। এই পাথরের গায়ে কিছু তৈলাক্ত পদার্থ পাওয়া যায়। এই তেলের ভিতর পাওয়া গেছে স্টেরয়েড এ্যালকোহল। যেহেতু এই এ্যালেকোহল যুক্ত ফ্যাটি এ্যাসিড একমাত্র প্রাণকেন্দ্র-যুক্ত জীবকোষে পাওয়া যায়। তাই ধারণা করা যায় প্রাণকেন্দ্র-যুক্ত জীবকোষের সু-প্রাণকেন্দ্রীয় কোষ উদ্ভব এই যুগেই হয়েছিল। এর অর্থই হলো সু-প্রাণকেন্দ্রীয় কোষ-এর অন্যতম উপাদান ডিএনএ [deoxyribonucleic acid (DNA)] তৈরি হয়েছিল আরও আগে।

জীবন (life)
স্বক্ষেত্র
(Domain) : Archaea

বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, প্রাণকেন্দ্র-যুক্ত কোষের আবির্ভাব ঘটেছিল দুটি পৃথক ধরনের একক জীব কণিকার সমন্বয়ে। এই ধরনের জীব-কণিকাগুলো পারস্পরিক স্বার্থে একটি অপরটি ভিতরে জায়গা করে নিত। এদের একটি অক্সিজেন থেকে চিনি জাতীয় জৈবিক খাদ্য প্রস্তুত করতে পারতো এবং এই চিনি  অপর জীবকণিকাকে প্রদান করতো। অপর জীবকণিকা এই চিনি গ্রহণ করে, তা থেকে শক্তি উৎপাদন করতো এবং তা উভয় জীবকণিকা ভাগাভাগি করে নিত। চিনি উৎপাদনকারী এই জীবকণিকা বা ব্যাক্টেরিয়াগুলো অর্গানেলস (organelles) বলা হয়ে থাকে। এরা নিজেদের বংশ বিস্তার করার ক্ষমতা অর্জন করেছিল।

২৫০ কোটি বৎসর আগে সাগরে পানির উপরিভাগে বিপুল পরিমাণ ব্যাক্টেরিয়া'র স্তর জমতে থাকে। এই ব্যাক্টেরিয়া'গুলোর জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হওয়ার পর বিজ্ঞানীরা এই যুগের প্রাণের অস্তিত্বের প্রত্যক্ষ প্রমাণ উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই জীবাশ্মগুলোকে bacteria microfossils  হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এরপর পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং জীবজগতের নতুন ধারার সূচনা হয়। এর ভিতর দিয়ে শুরু হয় প্রিক্যাম্ব্রিয়ান মহাকালের তৃতীয় ও শেষ অধ্যায়। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন প্রোটেরোজোইক কাল। এর ব্যাপ্তীকাল ২৫০ কোটি থেকে ৫৪.৫ কোটি বৎসর পূর্বাব্দ।


সূত্র :