|
মানচত্রের লালচে অংশ হলো কানাডিয়ান ঢাল-ভূখণ্ড |
কানাডিয়ান ঢাল-ভূখণ্ড
Canadian Shield
বৃহদাকার ভূ-খণ্ড বিশেষ। এর অপর নাম
Laurentian Plateau
।
প্রিক্যাম্ব্রিয়ান মহাকালের প্রথম ভাগে,
অর্থাৎ
হেডিন কাল ( ৪৬০ থেকে ৪০০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ)-এ পৃথিবীর উপরিভাগে,
ম্যাগ্মা জমাট বেঁধে তৈরি হয়েছিল বিপুল পরিমাণ
আগ্নেয় শিলাস্তূপ। এর সাথে
অগ্ন্যুৎপাতজাত
আগ্নেয় শিলা তাপ ও চাপের প্রভাবে সৃষ্টি হয়েছিল রূপান্তরিত শিলা।
ইয়ো-আর্কিয়ান যুগে (৪০০-৩৬০
কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ)
পৃথিবীর
উপরিভাগের তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছিল। একই সাথে এতদিনের উত্তপ্ত পৃথিবী থেকে নির্গত
গ্যাসীয় অংশ আকাশে ঘন মেঘের সৃষ্টি করেছিল। একে বলা যায় অন্তঃহীন মেঘ। এই মেঘ
পৃথিবীকে এতটা নিবিড়ভাবে ঢেকে ফেলেছিল যে, সে মেঘকে ভেদ করে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে
এসে পৌঁছাত না। এরপর এলো মহাবর্ষণ, সেই সূত্রে সৃষ্টি হয়েছিল মহাপ্লাবন। জলের চাপ
এবং ভূত্বকের বিশাল কঠিন অংশের চাপ সহ্য করতে না পেরে, পৃথিবীর কোনো অংশের উপরিতল
গভীরভাবে বসে গিয়েছিল। আর এ সকল গভীর খাদের শূন্যতা পূরণ করে দিয়েছিল বৃষ্টিজাত
শীতল তরল পদার্থ। এই তরল পদার্থের প্রধান উপাদান পানি হলেও নানা পদার্থের মিশ্রণ
ছিল। এই মিশ্র জলরাশি যখন প্রবল বেগে ভূভাগের উপরিতলের খাদের দিকে প্রবাহিত হয়েছিল-
তখন তার সাথে যুক্ত হয়েছিল আরও বহু পদার্থ। এই জলপ্রবাহের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল
অসংখ্য নদী। যদিও সে কালের আদিম নদীগুলো পরবর্তী সময়ে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এই সব নদীর
দ্বারা প্রবাহিত জলরাশি খাদগুলোতে জমে তৈরি করেছিল অসংখ্য হ্রদ এবং পৃথিবীর আদি
সমুদ্র। এই সময়ের নদীর জলরাশিতে ছিল পাথর থেকে খনিজ উপাদানের দ্রবণীয় অংশ। এর ফলে
সেকালের হ্রদ ওই সাগরের জল খনিজ পদার্থ ও লবণসমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল।
এই সময়ের ভিতরে পৃথিবীর উপরিভাগের তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছিল। একই সাথে এতদিনের
উত্তপ্ত পৃথিবী থেকে নির্গত গ্যাসীয় অংশ আকাশে ঘন মেঘের সৃষ্টি করেছিল। একে বলা যায়
অন্তঃহীন মেঘ। এই মেঘ পৃথিবীকে এতটা নিবিড়ভাবে ঢেকে ফেলেছিল যে, সে মেঘকে ভেদ করে
সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছাত না। এরপর এলো মহাবর্ষণ, সেই সূত্রে সৃষ্টি হয়েছিল
মহাপ্লাবন। জলের চাপ এবং ভূত্বকের বিশাল কঠিন অংশের চাপ সহ্য করতে না পেরে, পৃথিবীর
কোনো অংশের উপরিতল গভীরভাবে বসে গিয়েছিল। আর এ সকল গভীর খাদের শূন্যতা পূরণ করে
দিয়েছিল বৃষ্টিজাত শীতল তরল পদার্থ। এই তরল পদার্থের প্রধান উপাদান পানি হলেও নানা
পদার্থের মিশ্রণ ছিল। এই মিশ্র জলরাশি যখন প্রবল বেগে ভূভাগের উপরিতলের খাদের দিকে
প্রবাহিত হয়েছিল- তখন তার সাথে যুক্ত হয়েছিল আরও বহু পদার্থ। এই জলপ্রবাহের দ্বারা
সৃষ্টি হয়েছিল অসংখ্য নদী। যদিও সে কালের আদিম নদীগুলো পরবর্তী সময়ে বিলীন হয়ে
গিয়েছে। এই সব নদীর দ্বারা প্রবাহিত জলরাশি খাদগুলোতে জমে তৈরি করেছিল অসংখ্য হ্রদ
এবং পৃথিবীর আদি সমুদ্র। এই সময়ের নদীর জলরাশিতে ছিল পাথর থেকে খনিজ উপাদানের
দ্রবণীয় অংশ। এর ফলে সেকালের হ্রদ ওই সাগরের জল খনিজ পদার্থ ও লবণসমৃদ্ধ হয়ে
উঠেছিল।
|
কানাডিয়ান ঢাল-ভূখণ্ডের
আদি ক্র্যাটনসমূহ |
এই পরিবর্তনের সূত্রে বিভিন্ন ক্র্যাটন
একত্রিত হয়ে তৈরি করেছিল বিশাল ভূ-আবরক। গোলাকার ভূমণ্ডলে এই আবরকের আকার হয়েছিল বর্শা
বা অসিযুদ্ধে ব্যবহৃত ঢালের মতো।
একালের উত্তর আমেরিকা মহাদেশ এমনি একটি
ঢাল-ভূখণ্ডের উপর গড়ে উঠেছে। এই ঢাল-ভূখণ্ডটিকে বলা হয় কানাডিয়ান ঢাল-ভূখণ্ড। উত্তর
দিকে এর বিস্তার কানাডার পূর্ব ও মধ্যাঞ্চল থেকে গ্রেড লেক এবং আর্ক্টিক মহাসাগর
পর্যন্ত। দক্ষিণ দিকের বিস্তার মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত। এর আয়তন
ছিল প্রায় ৮০ লক্ষ বর্গকিলোমিটার।
কানাডিয়ান ঢালভূখণ্ড গঠিত হয়েছিল ছয়টি
ক্র্যাটন
ক্র্যাটন নিয়ে। এই
ক্র্যাটনগুলো
হলো-
ওয়াইয়োমিং,
নাইন,
রেই,
সুপিরিয়র,
স্ল্যাভ ও
হেয়ার্ন।
আর্কিয়ান কালের শুরু দিকে
অর্থাৎ
ইয়ো-আর্কিয়ান যুগের ৩৯৫ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দের
দিকে এই ঢাল-ভূখণ্ডটি তৈরির প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছিল। তবে ৩৯৩ কোটি
পূর্বাব্দের ভিতরে এই ঢাল-ভূখণ্ডটি সুস্থির দশায় পৌঁছেছিল।
প্রাথমিক পর্যায়ে কানাডিয়ান ঢাল-ভূখণ্ড এবং
সাইবেরিয়ান ক্র্যাটন মিলে তৈরি হয়েছিল
সাইবেরিয়ান ঢাল-ভূখণ্ড।
এরপর এর সাথে
গ্রিনল্যান্ড অঞ্চল যুক্ত হয়ে ২৫০ কোটি পূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে
আর্ক্টিকা মহাদেশ
তৈরি হয়েছিল।
২০০-১৭০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে কানাডিয়ান হেয়র্ন এবং রেই ক্র্যাটন
স্ল্যাভ, ওয়াইয়োমিং,
সুপিরিয়র
ক্র্যাটনের কেন্দ্রে চলে এসেছিল। পরে
রেই,
ওয়াইয়োমিং,
হেয়ার্ন,
সুপিরিয়র,
স্ল্যাভ এবং
নাইন
ক্র্যাটন মিলিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছিল
কানাডিয়ান
ঢাল-ভূখণ্ড।
আরও পরে সব
পরে
এ সকল ক্র্যাটনের সাথে অন্যান্য ক্র্যাটনের সম্মেলনে সৃষ্টি হয়েছিল
লাউরেনশিয়া মহাদেশ।
সূত্র :