আগ্নেয়শিলা
বানান বিশ্লেষণ :
আ+গ্+ন্+এ+য়্+অ-শ্+ই+ল্+আ।
উচ্চারণ: ag.ne-o+ʃi.la
[আগ্.নেয়্-ও+শি.লা]
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত
अग्निः
অগ্নিঃ>আগ্নেয়>বাংলা
আগ্নেয়+সংস্কৃত শিলা।
রূপতাত্ত্বিক
বিশ্লেষণ:
আগ্নেয় {অগ্নি {√অগ্ (গমন করা) +নি,,কর্মবাচ্য}+এয় (ঢক)}+শিলা {√শিল্ (প্রস্তর অর্থে)+ অ (ক)+ আ (টাপ্)}
অগ্নিবিগলিত যে শিলা/মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস
পদ: বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{শিলা
|
স্পর্শনীয় বস্তু
|
বস্তু
|
দৈহিক সত্তা
|
সত্তা
|}
ইংরেজি:
igneous rock।
পৃথিবীর গুরুমণ্ডলের উপরিভাগে রয়েছে গলিত পাথরের স্তর। এই স্তরের উপরিভাগ শীতল হয়ে
চটচটে অর্ধ্ব গলিত দশায় রয়েছে। এই অংশের উপরে শীতল হয়ে কঠিন শিলায় পরিণত হয়েছ। এই
কঠিন শিলাকেই আগ্নেয়শিলা বলা হয়।
পৃথিবীর আদি দশায় গলিত
খনিজ পদার্থ, প্রাচীন
প্রস্তরসমূহ মিলে যে ভূত্বক তৈরি করেছিল,
তার
সকল স্থানে যথেষ্ঠ মজবুত ছিল না।
এর
ফলে এই আবরণ ভেদ করে বায়বীয় এবং গলিত
পদার্থ
বেরিয়ে আসতো।
হেডিন কালে (৪৬০
থেকে ৪০০ কোটি পূর্বাব্দ)
সারা পৃথিবী জুড়ে অগ্ন্যুৎপাত লেগেই ছিল।
এর ফলে পৃথিবীর উপরিতলে সৃষ্টি
হয়েছিল অসংখ্য
আগ্নেয় স্তূপ। আর সমতল অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল লাভা এবং পাথুরের ভস্মরাশি। এই
প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়েই ভূত্বক বিভাজিত হয়ে অসংখ্য ভূখণ্ড তৈরি হয়েছিল। এই সকল
ভূখণ্ডের সীমানায় ছিল ফুটন্ত ম্যাগমার স্রোত। কিন্তু উত্তপ্ত কঠিন ভূখণ্ডের নিচের
দিকে ছিল
জমাটবাধা আদিম আগ্নেয়শিলা। আর এর উপরিভাগে ধাপের শিলাসমূহ পরিণত হয়েছিল রূপান্তরিত শিলা।
পরবর্তী সময়ে অগ্ন্যুৎপাতের সময়, আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে নির্গত লাভা থেকেও
আগ্নেয়শিলা তৈরি হয়েছে।
ভূগর্ভের ম্যাগমা যখন ভূত্বকের উপরিতলে লাভা হিসেবে প্রবাহিত হয়, তখন তাকে বলা হয়
লাভাস্রোত। এই লাভাস্রোতের তাপমাত্রা থাকে প্রায় ১১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি।
এই সময় এর রঙ দেখায় লালচে-হলুদ। এই তাপমাত্রা যখন ৬৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে
আসে, তখন লাভা জমাট বেধে শক্ত হয়ে যায়। কালচে শক্ত পাথরে পরিণত হয়।
সকল আগ্নেয়শিলা আকার, গাঠনিক বিন্যাস, জমিন সব সময় দিক থেকে আগ্নেয়শিলা নানা
রকমের হতে পারে। যেমন-
আকারের বিচারে আগ্নেয়শিলা
দানাকারা (grain size): অনেক সময় প্রাকৃতিকভাবে চূর্ণ-বিচূর্ণ শিলা দেখা যায়। এই জাতীয় শিলাগুলো শস্যবীজ বা তার চেয়ে ক্ষুদ্র আকারের কণা পাওয়া যায়। কোনো কোনো দানাদার শিলা এত ক্ষুদ্র হয় যে, এদের দেখার জন্য অনুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন হয়। এই জাতীয় শিলা স্ফটিক বা সাধারণ মণিক হিসেবে পাওয়া যায়।
বৃহৎ খণ্ড (large size): এই জাতীয় শিলাগুলো বড় বড় খণ্ড হিসেবে প্রকৃতিতে পাওয়া যায়।
গাঠনিক বিন্যাসের বিচারে আগ্নেয়শিলা: সকল আগ্নেয়শিলা একই ধরনের মণিক দ্বারা গঠিত হয় না। প্রতিটি শিলার রয়েছে মণিকসমূহের আনুপাতিক উপস্থিতি এবং সংগঠন বিন্যাস। এছাড়া রয়েছে মণিকগুলোর রাসায়নিক বিন্যাসের প্রকৃতি। এসকল কারণে আগ্নেয়শিলাগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে।
আগ্নেয়শিলার জমিন: আগ্নেয়শিলাতে বহু মণিকের সমাবেশের কারণে, রঙ এবং বহিরাবরণের কার্কশ্য-প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। জমিনের পার্থক্যের কারণে মণিকাবিদরা সহজেই শিলার প্রকৃতি নিরূপণ করে থাকেন। এই জমিন অনেক সময় সুষ্পষ্টভাবে স্তর বিন্যাস লক্ষ্য করা যায়। মূলত স্তরে স্তরে মণিকার বিন্যাসের কারণে, আগ্নেয়শিলার জমিনে স্তরে স্তরে রঙের হেরফের লক্ষ্য করা যায়।
উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যের বিচারে আগ্নেয়শিলার পৃথক
পৃথকভাবে নামকরণও করা হয়। অধিকাংশ সময় ভূতাত্ত্বিকরা শিলার বাহ্যিক
বৈশিষ্ট্য দেখে, শিলার গঠন প্রকৃতি নির্ধারণ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে নানা ধরনের
পরীক্ষা করে এর গাঠনিক উপাদানের সন্ধান নেওয়ার চেষ্টা করে থাকেন।
গাঠনিক দিক থেকে আগ্নেয় শিলাকে দুই ভাগে ভাগ
করা হয়। এই ভাগ দুটি হলো-
বহিঃজ শিলা
১। বহিঃজ আগ্নেয়
শিলা : পৃথিবীর অভ্যনত্মরীণ গলিত পদার্থগুলো আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ বা ভূ-পৃষ্ঠের
ফাটল দিয়ে বাইরে নির্গত হয়ে ক্রমে ঠা-া হয়ে যে শিলার সৃষ্টি হয় তাকে বহিঃজ আগ্নেয়
শিলা বা
ভূ-পৃষ্ঠে গলিত পদার্থগুলো উৎৰিপ্ত হওয়ার ওপর ভিত্তি করে বহিঃজ আগ্নেয় শিলাকে
বিস্ফোরক ও শানত্ম প্রকৃতির নামে দু'টি ভাগে ভাগ করা যায়।
ক) বিস্ফোরক প্রকৃতির আগ্নেয় শিলা : আগ্নেয়গিরির উদগিরণের ফলে ভূ-অভ্যনত্মর থেকে
বেরিয়ে আসা যে সব পদার্থ প্রচ-বেগে ওপরের দিকে উৎৰিপ্ত হয়ে পড়ে ভূ-পৃষ্ঠে পতিত হয়ে
দ্রম্নত শীতল ও জমাট বাঁধে সে গুলোকে বিস্ফোরক প্রকৃতির (ঊীঢ়ষড়ংরাব ঞুঢ়ব) আগ্নেয়
শিলা বলে। উৎৰিপ্ত পদার্থগুলো বড়, অপেৰাকৃত ৰুদ্র ও অতি সূক্ষ্মশিলাকণা বা গুঁড়া
বেরিয়ে আসে। বড় আকারের উৎৰিপ্ত শিলাখ-গুলোকে আগ্নেয় গোলক (ঠড়ষপধহরপ ইড়সন), অপেৰাকৃত
ৰুদ্র আকারের শিলাখ-গুলোকে ল্যাপিলি (খধঢ়রষর) এবং অতি সূক্ষ্ম আকারের আগ্নেয়ভস্ম
(ঠড়ষপধহরপ ফঁংঃ) বলে। উদাহরণ : ব্রেসিয়া, টাফ ও আগ্নেয় ভস্ম ইত্যাদি।
খ) শানত্ম প্রকৃতির বহিঃজ আগ্নেয়শিলা : বিস্ফোরক না ঘটিয়ে ভূ-পৃষ্ঠের ফাটল বা
আগ্নেয় জ্বালামুখ ম্যাগমা ধীরে ধীরে লাভারূপে ভূ-পৃষ্ঠের বাইরে এসে সঞ্চয় করে যে
শিলা গঠন করে তাকে শানত্ম প্রকৃতির বহিঃজ আগ্নেয়শিলা বলে। উদাহরণ : ব্যাসল্ট,
পিউমিক স্টোন, রায়োলাইট ইত্যাদি।
২। অনত্মঃজ আগ্নেয়শিলা (ওহঃৎঁংরাব ওমহবড়ঁং জড়পশং) : ভূ-অভ্যনত্মরের গলিত ম্যাগমা
অনেক সময় ভূ-পৃষ্ঠে পেঁৗছতে না পেরে ভূ-গর্ভে থেকেই ক্রমশ তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়ে
যে শিলায় পরিণত হয় তাকে অনত্মঃজ আগ্নেয়শিলা বলে। উদাহরণ : গ্রানাইট, ডলোরাইট
ইত্যাদি।
গভীরতা অনুসারে অনত্মঃজ আগ্নেয়শিলাকে পাতালিক ও উপ-পাতালিক নামক দু'টি শ্রেণীতে
বিভক্ত করা হয়।
ক) পাতালিক অনত্মঃজ শিলা : ভূ-অভ্যনত্মরের ম্যাগমা ভূ-পৃষ্ঠের বহু নিচে থেকে ক্রমশ
শীতল হয়ে যে শিলার সৃষ্টি করে তাকে পাতালিক অনত্মঃজ আগ্নেয়শিলা বলে। এ জাতীয় শিলার
দানা মোটা। উদাহরণ : গ্রানাইট, গ্রাবো, ডায়োরাইট ইত্যাদি।
খ) উপ-পাতালিক অনত্মঃজ আগ্নেয় শিলা : ভূ-অভ্যনত্মরের ম্যাগমা ভূ-পৃষ্ঠের প্রায়
কাছাকাছি থেকে ক্রমশ শীতল হয়ে যে শিলার সৃষ্টি করে তাকে উপ-পাতালিক অনত্মঃজ আগ্নেয়
শিলা বলে। এ জাতীয় শিলার দানা সূক্ষ্ম। উদাহরণ : পরিফাইরি, ডলোরাইট ইত্যাদি।
অবস্থান ও আকারভিত্তিক বিভিন্ন প্রকার অনত্মঃজ আগ্নেয় শিলা : অবস্থান ও আকারের
ভিত্তিতে অনত্মঃজ আগ্নেয় শিলাকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যথা : (ক)
ব্যাথোলিক, (খ) ল্যাকোলিক, (গ) ফ্যাকোলিক, (ঘ) ল্যাপোলিক, (ঙ) সিল/শীট, (চ) স্টর্ক,
(ছ) পস্নাগ, (জ) ডাইক, (ঝ) নেক বা পস্নাগ।
ক) ব্যাথোলিথ : ভূ-পৃষ্ঠের গভীর অভ্যনত্মরে ম্যাগমা সত্মূপীকৃত ও ক্রমশ শীতল হয়ে যে
বিশাল আকারের আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে তাকে ব্যাথোলিথ বলে। পার্বত্য অঞ্চলে এ জাতীয়
শিলা বেশি দেখা যায়।
খ) ল্যাকোলিথ : অনেক সময় ম্যাগমা ভূ-অভ্যনত্মর হতে কোনো সরম্ন পথে উপরে উঠে
সত্মরীভূত শিলার সত্মরের মধ্যে গম্বুজাকারে জমা হয়। এ গম্বুজ ঠা-া হয়ে যে শিলার
সৃষ্টি করে তাকে ল্যাকোলিথ বলে। এটি প্রতি সত্মরে সত্মরে জমা হয়েও সৃষ্টি হয়ে পারে।
গ) ফ্যাকোলিথ : ভাঁজযুক্ত শিলাসত্মরের উর্ধভাঁজ অঞ্চলে ম্যাগমা সঞ্চিত হয়ে
অর্ধচন্দ্রাকার রূপ ধারণ করে এবং শীতল হয়ে শিলায় পরিণত হয়। এ রূপ আকৃতির অনত্মঃজ
শিলাকে ফ্যাকোলিথ বলে। উর্ধভাঁজ ছাড়া অধঃভাঁজেও ম্যাগমা সঞ্চিত হতে পারে।
ঘ) ল্যাপোলিথ : কোন কোন ৰেত্রে ম্যাগমা শিলাসত্মরের মধ্যে প্রবেশ করে নৌকা বা
বাটির আকার ধারণ করে এবং ঠা-া হয়ে শিলায় পরিণত হয়। এ ধরনের অনত্মঃজ আগ্নেয় শিলাকে
ল্যাপোলিথ বলে।
ঙ) পস্নাগ : প্রবাহিত উর্ধগামী ম্যাগমা খাড়াভাবে যখন ফাটল দিয়ে প্রায় ভূ-পৃষ্ঠের
কাছাকাছি চলে যায় কিন্তু উপরে শক্ত বা কঠিন শিলা থাকায় ভূ-পৃষ্ঠকে ভেদ করতে না পেরে
কালক্রমে ঠা-া হয়ে জমাট বেঁধে যে অনত্মঃজ আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে তাকে পস্নাগ বলে।
একে নেকও (ঘবপশ) বলা হয়।
চ) স্টর্ক : ডাইক সিল বা শীটের অগ্রভাগে ম্যাগমা সঞ্চিত হয়ে যে পি-ের সৃষ্টি করে
তাকে স্টর্ক বলে। স্টর্কের আকৃতি গোল বলে তাকে বস (ইড়ংং) বলে।
ছ) সিল বা শীট : অনেক সময় ম্যাগমা শিলাসত্মরের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে সমানত্মরালভাবে
অবস্থান করে। পরে ঠা-া হয়ে কঠিন হলে সিল বা শীটের সৃষ্টি হয়। সিল পুরম্ন আর শীট
খুবই সরম্ন। সিট কোনাকৃতিভাবেও হতে পারে।
জ) ডাইক (উুশবং) : ব্যাথোলিথ বা ল্যাকোলিথের উপরিভাগ হতে যে কোন সরম্ন পথে ম্যাগমা
প্রবাহিত হয়ে আগ্নেয়, পাললিক অথবা রূপানত্মরিত শিলার ভিতর জমতে পারে। এরূপ
অবস্থানের আগ্নেয় শিলাকে ডাইক বলে। ডাইক চক্র বা বৃত্তাকারেও জমা হতে পারে।
রাসায়নিক গঠন অনুসারে আগ্নেয় শিলার শ্রেণী বিভাগ
আগ্নেয় শিলা বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানে গঠিত। এ সব রাসায়নিক উপাদানের মধ্যে অঙ্েিজন,
সিলিকা বা বালুকা, লৌহ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, সোডিয়াম ও
এ্যালুমিনিয়াম বিভিন্ন শিলার অধিক পরিমাণে দেখা যায়। এর মধ্যে সিলিকার পরিমাণ
৪০-৮০%।
রাসায়নিক গঠন অনুসারে আগ্নেয় শিলাকে ৪টি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা_(ক) আমস্নিক, (খ)
মধ্যবতর্ী, (গ) ৰারকীয় ও (ঘ) অতি ৰারকীয়।
ক) আমস্নিক আগ্নেয় শিলা : যে সব আগ্নেয় শিলায় সিলিকা বা বালুকার পরিমাণ ৬৫% বা তারও
বেশি তাকে আমস্নিক আগ্নেয় শিলা বলে। উদাহরণ : গ্রানাইট, অবসিডিয়ান ইত্যাদি।
খ) মধ্যবতর্ী আগ্নেয় শিলা : যে সব আগ্নেয় শিলায় সিলিকা বা বালুকার পরিমাণ ৬৫% থেকে
৫৫% এবং ৰারকীয় অঙ্াইডের পরিমাণ ৪৫%-৩৫% থাকে তাকে মধ্যবতর্ী আগ্নেয় শিলা বলে।
উদাহরণ : ডাইওরাইট, এ্যান্ডিসাইট ইত্যাদি।
গ) ৰারকীয় আগ্নেয় শিলা : যে সব আগ্নেয় শিলায় সিলিকা ৫৫%-৪৫% এবং এ্যালুমিনিয়াম,
লৌহ, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি ৰারকীয় অঙ্াইড ৪৫% অপেৰা বেশি তাকে
ৰারকীয় আগ্নেয় শিলা বলে। উদাহরণ : ব্যাসল্ট, গ্রাবো, ডোলোমাইট প্রভৃতি।
ঘ) অতি ৰারকীয় (টষঃৎধ ইধংরপ) : যে সব আগ্নেয় শিলায় সিলিকা বা বালুকার পরিমাণ ৪৫%
এবং ৰারকীয় অঙ্াইডের পরিমাণ ৫৫%-এর বেশি তাকে অতি ৰারকীয় (টষঃৎধ ইধংরপ) আগ্নেয় শিলা
বলে।
উদাহরণ : পেরিডোটাইট ইত্যাদি।
আগ্নেয় শিলার বৈশিষ্ট্য : আগ্নেয় শিলার বৈশিষ্ট্য সমূহ নিম্নরূপ_
প্রাচীনতম : এটি পৃথিবীর প্রাচীনতম শিলা। পরে এ শিলা থেকে অন্যান্য শিলার সৃষ্টি
হয়েছে।
সত্মরবিহীন : উত্তপ্ত গলিত ম্যাগমা বা লাভা ক্রমশ শীতল ও জমাটবদ্ধ হয়ে এ শিলার
সৃষ্টি করেছে, ফলে এর মধ্যে কোন সত্মর গঠিত হয়নি। এ জন্য এটি সত্মরবিহীন।
অপ্রবেশ্য : এ শিলার দানাগুলোর মধ্যে কোন রন্ধপথ বা ছিদ্র নেই ফলে এটি অপ্রবেশ্য।
অর্থাৎ এ শিলার মধ্য দিয়ে পানি প্রবেশ করতে পারে না।
জীবাশ্মবিহীন : উত্তপ্ত গলিত ম্যাগমা বা লাভা থেকে এ শিলার সৃষ্টি হয় বলে এর মধ্যে
কোন প্রাণী বা উদ্ভিদ দেহের অসত্মিত্ব দেখতে পাওয়া যায় না। এ জন্য আগ্নেয়শিলা
জীবাশ্মহীন।
কেলাসিত : উত্তপ্ত গলিত অবস্থা হতে তাপ বিকিরণ করে এ শিলা কেলাসিত রূপ লাভ করে এবং
নিদিষ্ট আকারে দানা বাঁধে।
সুদৃঢ় : তাপ বিকিরণের মাধ্যমে ক্রমশ শীতল, সংকুচিত ও জমাটবদ্ধ হয় বলে এ শিলা যথেষ্ট
দৃঢ় এবং অন্যান্য শিলা অপেৰা শক্ত।
সংযুক্তি সম্পন্ন : সুসংহত ও সুদৃঢ় হওয়া সত্ত্বেও এ শিলার মধ্যে স্পষ্ট সংযুক্তি
দেখতে পাওয়া যায়। পর্যায়ক্রমে গলিত পদার্থ সঞ্চিত হওয়ায় শিলাসত্মরের মধ্যে এরূপ
সংযুক্তির সৃষ্টির হয়েছে।
উপসংহার : ভূ-পৃষ্ঠের ওপরে কঠিন, নরম যে কোন বহিরাবরণের সাধারণ নামই শিলা। এ শিলার
মধ্যে আগ্নেয় শিলা প্রথম সৃষ্টি হয়েছে। এর পরে আগ্নেয় শিলা থেকে রূপানত্মরিত ও
পাললিক শিলা সৃষ্টি হয়েছে। আগ্নেয় শিলা বহিঃজ ও অনত্মঃজ হিসেবে আছে। পৃথিবীর যে সব
অঞ্চল পাহাড়, পর্বত, আগ্নেয়গিরি রয়েছে সে সব এলাকায় আগ্নেয়শিলা সবচেয়ে বেশি।
পৃথিবীর নিচু এলাকা পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। বাংলাদেশের ভূভাগ পাললিক শিলা দ্বারা
গঠিত।