কার্বোনিফেরাস অধিযুগে বঙ্গীয় অববাহিকার ভূত্বকে বিরাট প্রভাব ফেলেছিল। এই অধিযুগে ক্রমাগত ভূভাগের পার্শ্বীয় প্রসারণ এবং মহাদেশীয় ভূত্বকের একটি অংশের নিম্নগামী বাঁক নেওয়ার ফলে অগভীর নিম্নভূমির সৃষ্টি হয়েছিল। এই সূত্রে বঙ্গীয় অববাহিকায় এই চ্যুতিখাদসমূহ পশ্চিমাঞ্চলীয় অন্তরীপ সোপান তৈরি হয়েছিল।
এই সময়ে এ্যাম্নিয়োট ডিম প্রসবকারী প্রাণিকূলকে ২টি ভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগ দুটি হলো-
প্যাঙ্গিয়া মহা-মহাদেশ |
প্যাঙ্গিয়া মহা-মহাদেশের উত্তরে ছিল ইউরেশিয়া। এর দক্ষিণ-পূর্ব দিক জুড়ে ছিল উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা। মধ্য দক্ষিণাঞ্চলে ছিল আফ্রিকা। আর দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে ছিল ভারত, এন্টার্ক্টিকা, অস্ট্রেলিয়া। এই দুটি মহাদেশের মিলিত হওয়ার সময় পারস্পরিক সংঘর্ষে তিনটি বড় ধরনের ঘটনা ঘটেছিল।
১. কোথাও কোথাও ভূভাগ বসে গিয়েছিল।
২. কোথাও কোথাও উচ্চভূমির সৃষ্টি হয়েছিল।
৩. কোথাও কোথাও বিশালাকারের পর্বতমালা তৈরি করেছিল।
এই সময় ভূগর্ভে প্রোথিত বনভূমি থেকে কয়লাভাণ্ডারসমূহের সৃষ্টপর্ব শুরু হয়েছিল। অন্যদিকে উত্থিত ভূমি এবং পর্বতমালার অধিকাংশ বৃহদাকারের বনভূমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। মূলত প্যাঙ্গিয়া গঠনের সময় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল উদ্ভিদকুলের।
এই মহা-মহাদেশটির স্থায়ীত্বের পুরো সময়টুকুই কারু বরফযুগের অধীনে ছিল। প্যাঙ্গিয়া তৈরির সময় বিশালাকারের বিভিন্ন ভূখণ্ড যুক্ত হয় এবং এই ভূখণ্ড যুক্ত হওয়ার সময় বিশালাকার সব পর্বতমালার সৃষ্টি হয়েছিল। এ সময় প্যাঙ্গিয়া মহা-মহাদেশের একটি অংশ বিষুবরেখা বরাবর ছিল।
এই সময়ে হোলোসেফালি উপশ্রেণির প্রাণীকূল বিবর্তিত উদ্ভব হয়েছিল ইনিয়োপ্টেরিগিফর্মস (Iniopterygiformes) বর্গের মৎস্য। পরবর্তী সময়ে এই বর্গের সকল প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এছাড়া সিনাপ্সিডা জাতীয় প্রাণীকূল থেকে উৎপন্ন হয় ক্যাসিসোরিয়া (Caseasauria) নামক প্রাণীকূল থেকে উদ্ভব ঘটেছিল ক্যাসিডি (Caseidae) গোত্রের প্রাণীকূল। তবে মোলাস্কা পর্বের সেফালোপোডা (Cephalopoda) শ্রেণির প্রাণিকুলে উদ্ভব হয় এই সময়।
সূত্র :