টেট্রাপোডা
Tetrapoda
 

প্রাণিজগতের একটি আদিম মেরুদণ্ডী প্রাণী। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে ব্রোলি (Broil), গ্রিক τετραπόδηs (চতুষ্পদী) শব্দ থেকে এর নামকরণ করেছিলেন। ভার্টিব্রেটা উপপর্বের একটি ভাগ। আধুনিক কালে একে থাক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

 

যদিও প্রাণিজগতের বহু প্রাণীর চারটি পা আছে। শব্দের বিচারে এদেরকেও টেট্রাপোড বলা যায়। কিন্তু জীববিজ্ঞানে টেট্রাপোডকে একটি বিশেষ সময়ে বিকশিত প্রাণিকুলের থাক বুঝানো হয়ে থাকে।


ক্রমবিবর্তনের ধারা
৫২ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ওল্‌ফ্যাক্টোরেস থাক থেকে উৎপন্ন হয়েছিল ভার্টিব্রাটা উপপর্বের প্রজাতিসমূহ।
এরপর
৫২ থেকে ৪১.৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে ভার্টিব্রাটা উপপর্বের প্রাণিকুল বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগগুলো হলো-

৪৪.৫ থেকে ৪৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে ন্যাথোস্টোমাটা অবপর্ব্বের প্রজাতিকুলের পরিবর্তন ঘটে। এই বিবর্তনের সূত্রে এই অবপর্বের প্রাণিকুল কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এই ভাগগুলো হলো-

৪৪.৫-৪২ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দে টেলোস্টোমি থাক ২টি ভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগ দুটি হলো-

৪৪- ৪২.৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে দিকে ইউটেলেস্টোমি থাক দুটি ভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগগুলো হলো- ওস্টেইক্‌থিস ঊর্ধ্ব শ্রেণি ও কন্ড্রিক্‌থিস শ্রেণি। এই সময়ের ভিতরে ওস্টেইক্‌থিস ঊর্ধ্ব শ্রেণি ২টি ভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগ দুটি হলো-

৪২.৩ থেকে ৪১ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে সারকোপ্টেরিজি  থাক চারটি ভাগে বিভাজিত হয়ে গিয়েছিল। এই ভাগগুলো হলো-
  • গুইয়ু গণ: আবির্ভাব কাল ৪১.৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
  • এ্যাক্টিনিস্টা শ্রেণি: আবির্ভাব কাল ৪১.৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
  • ক্রোসোপ্টেরিজি উপশ্রেণি: আবির্ভাব কাল ৪১.৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
  • হৃপিডিস্টিয়া থাক: আবির্ভাব কাল ৪১.৬ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
৪১.৬ থেকে ৪০.৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে হৃপিডিস্টিয়া থাক দুটি ভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগ দুটি হলো-
  • ডিপ্নোমোর্ফা: আবির্ভাব কাল ৪১.৬ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
  • টেট্রামোডোফোর্মা: আবির্ভাব কাল ৪০.৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
৪০.৯-৩৬.৭৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের টেট্রামোডোফোর্মা  থাক ৪টি ভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগ দুটি হলো-

৩৮.৫ থেকে ৩৭.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে এল্পিস্টোস্টেগালিয়া দুটি ভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগ দুটি হলো-

৩৭.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে স্টেগোসেফালিয়া একাধিক ভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগগুলো হলো-


৩৭.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে স্টেগোসেফালিয়া থাকের মহা-মহাদেশীয় উপকুলের কোনো কোনো অঞ্চলে পানি কমে গিয়ে অগভীর জলভূমিতে পরিণত হয়েছিল।একই সাথে তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে এরা অগভীর জলভূমিতে বসবাসে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছিল। কালক্রমে এরা বড় বড় জলাশয় ছেড়ে ছোট ছোট হ্রদ জাতীয় জলাশয়ে বসবাস শুরু করে। এই সময় এই থেকের প্রজাতিগুলো তাদের পাখনা প্যাডেলের মতো ব্যবহার করে পানিতে সাঁতার কাটতো। এর ফলে পাখনাগুলো শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। এরা দ্রুত চলাচলের জন্য অগভীর জলাভূমির তলদেশের মাটিতে এই মজবুত পাখনা দিয়ে আঘাত করতো। এর ফলে এদের চলাচলের জন্য পাখনা পায়ের মতো অঙ্গে পরিণত হয়েছিল। ৩৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে ফলে এই প্রজাতিগুলো চতুষ্পদী প্রাণীতে পরিণত হয়েছিল। এই জাতীয় প্রাণিকুলের সাধারণ নাম হলো- টেট্রাপোডা।

কালক্রমে এরা বড় বড় জলাশয় ছেড়ে ছোট ছোট হ্রদ জাতীয় জলাশয়ে বসবাস শুরু করে। এদের কিছু কিছু প্রজাতি এই সময় ক্রমাগত ডাঙায় উঠে আসার চেষ্টা করতে থাকে। এর ফলে পানিতে বসবাসকারী প্রাণীর পাখনা ক্রমে ক্রমে পা-এ রূপান্তরিত হয়। এর ফলে এদের দেহের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। এই সূত্রে এরা হয়ে উঠেছিল চার পেয়ে প্রাণী। বিজ্ঞানীরা এদের নামকরণ করেছে । প্রথম দিকে এরা জলস্থলে বিচরণ করতো। কিন্তু এদের অনেক প্রজাতি পানিতে থাকার অভ্যাস অনেকাংশে ত্যাগ করেছিল। এই সময় তাদের আর্দ্র ত্বক দিয়ে শ্বাসকার্য চালাতো। ডাঙায় বসবাসে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল, এদের দেহে ফুসফুস নামক অঙ্গ সৃষ্টি হয়েছিল।

৩৭ থেকে ৩৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে
টেট্রাপোডা থাকের প্রাণিকুল দুটি প্রধান ধারায় বিভাজিত হয়ে যায়। এই ধারা দুটি হলো-


সূত্র :
ডাইনোপেডিয়া
। কামরুল হায়দার। বলাকা বুকস ইন্টারন্যাশনাল। শ্রাবণ ১৪১২, জুলাই ২০০৫।