প্রতীক Bi
পারমাণবিক ওজন ২০৯.০
পারমণবিক সংখ্যা ৮৩
ইলেক্ট্রোন সংখ্যা ৮৩
প্রোটোন ৮৩
ইলেক্টোন কক্ষ: ২ ৮ ১৮ ৩২ ১৮ ৫
ইলেক্ট্রোন শক্তিবিন্যাস :
4f14 5d106s26p3
গলনাঙ্ক :  ২৭১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্ফুটনাঙ্ক : ১৫৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আপেক্ষিক গুরুত্ব: 9.৮০৭ গ্রাম/ঘন সেমি

বিসমাথ
বানান বিশ্লেষণ: ব্+ই+স্+অ+ম্+আ+থ্+অ
উচ্চারণ:
bis.mat̪ʰ (বিস্.মাথ্)।
শব্দ-উৎস:
গ্রিক
ψιμύθιον (psimúthion, 'white lead' সাদা সীসক)> আরবি بِسِيمُوتِيُّون‎ (bisīmūtiyyūn)> লাতিন bisemūtum> জার্মান wismāt>Wismuth> ইংরেজি bismuth> বাংলা বিসমাথ
পদ: বিশেষ্য   এক প্রকার রুপালি-সাদা বর্ণের ধাতু মৌলিক পদার্থ। পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত বিসমাথকে সীসক হিসেবেই গণ্য করা হতো। গ্রিকরা একে সীসকের একটি প্রকরণ হিসেবে বিবেচনা করতো। এই কারণে এরা এর নাম দিয়েছিল সাদা সীসক। ১৭৫৩ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসি রসায়নবিদ
Claude Geoffroy এই ধাতুটিকে পৃথক মৌলিক পদার্থ হিসেবে দাবি করেন। পরে তাঁর এই দাবি স্বীকৃতি পায়।

বাতাসের অক্সিজেনের প্রভাবে এর উপরে হলুদাভ, নীলাভ বা গোলাপী আভা তৈরি করে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় বিসমাথ শুষ্ক ও আর্দ্র উভয় ধরনের বাতাসে স্থিতিশীল। তবে লোহিততপ্ত অবস্থায় এটি পানির সাথে বিক্রিয়ায় বিসমাথ অক্সাইড উৎপন্ন করে। গাঢ় সালফিউরিক এসিডে দ্রবীভূত হয়ে বিসমাথ সালফেট এবং সালফার ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়।

বিসমাথ ত্রিযোজী এবং পঞ্চযোজী যৌগ গঠন করে। তবে ত্রিযোজী যৌগের সংখ্যাই বেশি।

প্রকৃতিতে বিসমাথের মূলত দুইটি সমস্থানিক বা আইসোটোপ পাওয়া যায়: বিসমাথ-২০৯ ও বিসমাথ-২১০। দুটোই তেজস্ক্রিয়। বিসমাথ-২১০ প্রকৃতিতে খুবই অল্প পাওয়া যায়। বিসমাথ-২০৯ সবচেয়ে ভারী স্থায়ী মৌল (বা সমস্থানিক) হিসেবে ভাবা হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি অস্থায়ী বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ। এর অর্ধায়ু ১.৯×১০১৯ বছর। অন্যদিকে বিসমাথ-২১০ এর অর্ধায়ু মাত্র ৫.০১২ দিন। কৃত্রিমভাবে প্রস্তুতকৃত সমস্থানিকসমূহের মধ্যে বিসমাথ-২১৩ (অর্ধায়ু ৩০.৪ লক্ষ বছর)। এই বিসমাথকে ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। বিসমাথ-২০৭-এর অর্ধায়ু ৩১.৫৫ বছর, বিসমাথ-২০৭-এর অর্ধায়ু ৩.৬৮ লক্ষ বছর। বিসমাথের সকল কৃত্রিম সমস্থানিকই তেজস্ক্রিয় এবং নিউক্লীয় বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করা যায়।

রঞ্জক, প্রসাধনী ঢালাই, গ্যালভানাইজিং, বিসমাথ-সঙ্কর ধাতু এবং গোলাবারুদ তৈরিতে বিসমাথ ব্যবহৃত হয়। বিসমাথ সীসক অপেক্ষা কম বিষাক্ত, তাই বর্তমানে বিভিন্ন আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে পানীয় জল সরবরাহের বিভিন্ন সরঞ্জাম (যেমন, ভাল্‌ভ) তৈরীতে সীসকের বিকল্প হিসেবে বিসমাথের ব্যবহার শুরু হয়েছে। তারপরেও দেখা যায়, সীসক যুক্ত পানি পানের ফলে বিসমাথ বিষক্রিয়ায় মাড়ির উপর কালো আবরণ পড়ে। এ্কে বলা হয় বিসমাথ লাইন নামে পরিচিত।