বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
পাঠ ও পাঠভেদ:
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে॥
একতারাটির একটি তারে গানের বেদন বইতে নারে,
তোমার সাথে বারে বারে হার মেনেছি এই খেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে॥
এ তার বাঁধা কাছের সুরে,
ঐ বাঁশি যে বাজে দূরে।
গানের লীলার সেই কিনারে যোগ দিতে কি সবাই পারে
বিশ্বহৃদয়্পারাবারে রাগরাগিণীর জাল ফেলাতে—
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে?।
পাণ্ডুলিপির পাঠ: পাণ্ডুলিপি দেখা সম্ভব হয় নি।
পাঠভেদ:
একতারাটির
একটি তারে
: স্বরলিপি,
কাব্যগীতি (১৩২৬)
আমার একতারাটির
একটি তারে
:কথার
অংশ,
কাব্যগীতি (১৩২৬)
:
গীতবিতান
(আশ্বিন ১৩৩৮)
গানের লীলার সেই
কিনারে
:
স্বরলিপি,
কাব্যগীতি (ফাল্গুন ১৩৬০)
তোমার গানের
লীলার সেই কিনারে
:
কথার অংশ,
কাব্যগীতি (১৩২৬)
:
গীতবিতান
(আশ্বিন ১৩৩৮)
তোমার লীলার এই
কিনারে
: স্বরলিপি,
কাব্যগীতি
(১৩২৬)
ভাবসন্ধান: স্রষ্টার বীণাতারে
যে-সুর সর্বক্ষণ বেজে চলেছে, সে-সুরে মনের তারটি বেঁধে নেবার সাধনা কবির।
সারাবেলার চেষ্টা সাঁঝবেলা পর্যন্ত গড়ায়। মনের একতারায় অত শক্তি নেই যে
বিশ্বব্যাপ্ত সেই সুরের বেদন ধারণ করে। ‘তাঁর’ কাছে তাই হার স্বীকার করতে হয়
বারবারই।
সীমার সুরে সুর বাঁধা সহজ, কারণ সে-সুর যে কাছের! কিন্তু বিশ্ববীণা যে অসীমের
সুরে বাঁধা, সেই সুরে সুর মেলানো তো সহজ নয়! যে-কারো পক্ষে সীমার ওপারের সুরের
লীলার সঙ্গে যুক্ত হওয়া কি সম্ভব? বিশ্বচিত্তের অনন্ত সমুদ্রে রাগ-রাগিণীর জাল
ফেলে ‘তাঁর’ সুরে সুর মেলাবার চেষ্টা করতে গিয়ে হার মানতে হয় তাই।
বাউলভঙ্গির এই গানটির সুরের চলন অত্যন্ত লীলাময়। স্রষ্টার কাছে পরাজয় স্বীকার
আর ‘তাঁর’ অসীম ক্ষমতা অনুভব করবার দরুন কবি যেন আনন্দ-উচ্ছল।
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
এই
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। গানটি শান্তিনিকেতন
পত্রিকার আষাঢ় ১৩২৬ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সূত্রে অনুমান করা যায়, হয়তো
গানটি
১৩২৬ বঙ্গাব্দের
জ্যৈষ্ঠ
মাসে রচিত হয়েছিল।
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়
তাঁর
গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী [টেগোর
রিসার্চ ইনস্টিটিউট। ডিসেম্বর ২০০৩।] গ্রন্থে গানটির রচনাকাল 'জ্যৈষ্ঠ ১৩২৬' উল্লেখ
করেছেন। এই সময়
রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৮ বৎসর ১ মাস।