তোমার সোনার থালায় সাজাব আজ দুখের অশ্রুধার।
জননীগো, গাঁথব তোমার গলার মুক্তাহার॥
চন্দ্রসূর্য পায়ের কাছে মালা হয়ে জড়িয়ে আছে,
তোমার বুকে শোভা পাবে আমার দুখের অলঙ্কার॥
ধন ধান্য তোমারি ধন কী করবে তা কও।
দিতে চাও তো দিয়ো আমায়, নিতে চাও তো লও।
দুঃখ আমার ঘরের জিনিস, খাঁটি রতন তুই তো চিনিস—
তোর প্রসাদ দিয়ে তারে কিনিস এ মোর অহঙ্কার॥
এই গানের দুঃখকে কোনো নেতিবাচক
অনুভূতি হিসেবে না দেখে, কবি এক অমূল্য রত্নের মর্যাদা
দিয়েছেন। এই অশ্রুজল যেন কোনো সাধারণ জলবিন্দু নয়, বরং তা ভক্তের হৃদয়ের
গভীরতম আর্তি ও ভালোবাসার প্রতীক, যা মুক্তার মতোই উজ্জ্বল ও পবিত্র।
"চন্দ্রসূর্য পায়ের কাছে মালা হয়ে জড়িয়ে আছে" – এই চিত্রকল্পের
মাধ্যমে কবি জাগতিক সৌন্দর্যের বিশালতাকে ঈশ্বরের চরণে সমর্পণ করেছেন।
এরপর ১৩৩৮ বঙ্গাব্দে গানটি
গীতবিতান-এর
প্রথম খণ্ড, প্রথম সংস্করণ
অন্তর্ভুক্ত হয়ে
প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের মাঘ মাসে প্রকাশিত
গীতবিতান-এর
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল পূজা
পর্যায়ের উপবিভাগ
দুঃখ -এর ৩৮
সংখ্যক গান হিসেবে। ১৩৭১ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত অখণ্ড
গীতবিতানের
পূজা
পর্যায়ের ২২৯
সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। গানটি একইভাবে অখণ্ড
গীতাবিতানের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দের পৌষ
মাসে।