৪৭ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স

২৫ বৈশাখ ১৩১৫ বঙ্গাব্দ থেকে ২৪ বৈশাখ ১৩১৬ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত (৭ মে ১৯০৮- ৬ মে ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ)


রবীন্দ্রনাথ ১৩১৫ বঙ্গাব্দে শারদোৎসব নাটিকার রচনা করেন। রবীন্দ্রনাথ শারদোৎসবের প্রথম পাণ্ডুলিপিটি ক্ষিতিমোহন সেনকে দান করেন। পরে তাঁর পুত্র ক্ষেমেন্দ্রমোহন সেন ওই পাণ্ডুলিপিটি পরে রবীন্দ্রভবনকে দান করেন। এই রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত আছে MS 479 নামে। এই পাণ্ডুলিপি অনুসরণে শারদোৎসব গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছিল ১৩১৫ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে।

ক্ষিতিমোহন সেনের বর্ণনা থেকে পাওয়া যায় "গুরুদেব প্রথমে শরতের কয়টি গানই রচনা করিয়াছিলেন। তারপর তিনি ঐ কয়টি গানের সঙ্গে গাঁথিয়া গল্পটি মিলাইয়া দিয়া শারদোৎসব রচনা করিলেন। সঙ্গে সঙ্গে অজস্র ধারায় আসিলন আরো কয়টি গান;.."

ক্ষিতিমোহন সেন অন্যত্র লিখেছেন- রবীন্দ্রনাথ একটানা আঠারো ঘণ্টা লিখে নাটকটি সমাপ্ত করেন। এই নাটকের শেষ করার তারিখ ৭ ভাদ্র ১৩১৫।
শারদোৎসব রচনার আগেই তিনি মোট ২টি গান রচনা করেছিলেন। উল্লেখ্য এই গান দুটি এই নাটিকায় ব্যবহার করেছিলেন। এই গান দুটি হলো-

এই দুটি গান ছাড়া এই নাটকের বাকি ৭টি গান ৭ই ভাদ্রের ভিতরে রচিত হয়েছিলএই গানগুলো হলো-

১৩১৫ বঙ্গাব্দের ৫ পৌষ তারিখে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে একটি ভাষণ দেন। এই ভাষণটি 'শোনা' শিরোনামে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাঁর 'শান্তিনিকেতন' গ্রন্থে। এই ভাষণটির শুরুতেই রয়েছে-

'কাল সন্ধ্যা থেকে এই গানটি কেবলই আমার মনের মধ্যে ঝংকৃত হচ্ছে- "বাজে বাজে রম্যবীণা বাজে।"

এরপর গানটির প্রথম স্তবক যুক্ত হয়েছে। যেহেতু এই ভাষণের সাথে গানটির প্রথম স্তবক পাওয়া যায়, তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, এই অংশটুকু তিনি অন্তত ৪ পৌষ বা তার আগেই রচনা করেছিলেন। এই গানটি তিনি একটি শিখ ভজন ভেঙে তৈরি করেছিলেন। কিন্তু ঠিক কোন সময়ে তিনি এই গানটি তৈরি করেছিলেন- তা স্পষ্ট জানা যায় না।

সঙ্গীত প্রকাশিকা পত্রিকা'র  'মাঘ ১৩১৫ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায় একটি গানটি প্রকাশিত হয়েছিল। ধারণা করা হয়, এই গানটি পৌষ মাসে রচনা করেছিলেন। গানটি হলো-

আজি এ আনন্দসন্ধ্যা সুন্দর বিকাশ  [তথ্য]
 

১৩১৫ বঙ্গাব্দ ১১ মাঘ [রবিবার, ২৪ জানুয়ারি ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ]-এ একোনাশীতি (৭৯) সাংবৎসরিক মাঘোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এর ভিতরে প্রাতঃকালীন অধিবেশনে পরিবেশিত হয়েছিল ৪টি গান এবং সায়ংকালীন অধিবেশনে ৯টি গান পরিবেশিত হয়েছিল। এর ভিতরে ৭টি গান ছিল নতুন। এই গানগুলো হলো-

জননী তোমার করুণ চরণখানি [পূজা-৪৬৪] [তথ্য]
তব অমল পরশরস, তব শীতল শান্ত [তথ্য]

বাজে বাজে রম্যবীণা বাজে [তথ্য]
আজি নাহি নাহি নিদ্রা আঁখিপাত [পূজা-৪২৫] [তথ্য]
তুমি যত ভার দিয়েছ সে ভার [পূজা-১০০] [তথ্য]

 

রবীন্দ্রভবন-সংগ্রভুক্ত Ms.358 চিহ্নিত পাণ্ডিলিপির ৬-৭ পৃষ্ঠায় একটি গান পাওয়া যায়
       
তিমির দুয়ার খোলো
এই গানটির রচনাকাল উল্লেখ আছে
'ফাল্গুন ১৩১৫'। [সূত্র : রবিজীবনী ষষ্ঠ খণ্ড। প্রশান্তকুমার পাল।]
উল্লেখ্য প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর 'গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী' গ্রন্থে এই গানটির রচনাকাল নুমান করেছেন- ১৩১৫ সালের নববর্ষ গীত হয়। িি ি এই গানটিকে এই বৎসরের রচনা হিসাবে গৃহীত হলো। রচনাকাল অনুসারে ধারণা করা যায়- গানটি রবীন্দ্রনাথের ৪৭ বৎসর ১০ মাস বয়সের রচনা।
 

১৩১৫ বঙ্গাব্দ ৯ থেকে ১৯শে চৈত্রের ভিতরে রচনা করেন ৫টি গান। এই গানগুলো হলো-

৯ চৈত্র [সোমবার, ২২ মার্চ, ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ] হৃদয়ে তোমার দয়া যেন পাই [পূজা-১২১] [তথ্য]
১১ চৈত্র [বুধবার, ২৪ মার্চ, ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ] বাঁচান বাঁচি মারেন মারি
১৩ চৈত্র [শুক্রবার, ২৬ মার্চ, ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ] রইল বলে রাখলে কারে
১৪ চৈত্র [শনিবার, ২৭ মার্চ, ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ] ওরে আগুন আমার ভাই
১৯ চৈত্র [বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল, ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ] আরও আরও প্রভু আরও

 

প্রায়শ্চিত্ত নামক নাটকটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩১৬ বঙ্গাব্দের ৩১শে বৈশাখ-এ। এই গ্রন্থের সকল গানই ১৩১৫ বঙ্গাব্দের শেষের দিকে রচিত একথা অনুমান করা যায়। এর ভিতরে কয়েকটি গানের সাথে সুষ্পষ্ট তারিখের উল্লেখ আছে এবং সেগুলো আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। যে সকল গানের সাথে সুনির্দিষ্টভাবে তারিখের উল্লেখ আছে, সেগুলো বাদে প্রায়শ্চিত্তের গৃহীত সকল গানের তালিকা নিচে দেওয়া হলো।

 

১. ও যে মানে না মানা।
২. নয়ন মেলে দেখি আমায়
৩. ওকে ধরিলে তো ধরা দেবে না
৪. আমাকে যে বাঁধবে ধরে
৫. কে বলেছে বঁধু তোমার
৬. আমারে পাড়ায় পাড়ায় খেপিয়ে বেড়ায়
৭. গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ
৮. ওরে শিকল তোমায় কোলে
৯. সকল ভয়ের ভয় যে তারে

১০. ওর মনের এ বাঁধ টুটবে না কি টুটবে না।
১১. আমরা বসব তোমার সনে
১২. মান অভিমান ভাসিয়ে দিয়ে
১৩. না বলে যেয়ো না চলে
১৪. আমি ফিরব নারে
১৫. হাসিরে কি লুকাবি লাজে

১৩১৬ খ্রিষ্টাব্দের বৈশাখ মাসে প্রকাশিত হয়েছিল ব্রহ্মসঙ্গীত ৫ম ভাগ। এই গ্রন্থে গৃহীত ১টি রবীন্দ্রসঙ্গীতের তারিখ নির্দেশিত নেই। এই গানটি হলো
                    কোথায় তুমি আমি কোথায়।