বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম: এত আলো জ্বালিয়েছ এই গগনে
পাঠ ও পাঠভেদ:

• গীতবিতান অখণ্ড (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২)-এর পাঠ: পূজা ৪২।

এত আলো জ্বালিয়েছ এই গগনে

কী উৎসবের লগনে॥

সব আলোটি কেমন ক’রে ফেল আমার মুখের প’রে,

তুমি       আপনি থাকো আলোর পিছনে॥

প্রেমটি যেদিন জ্বালি হৃদয়-গগনে

                        কী উৎসবের লগনে

সব আলো তার কেমন ক’রে পড়ে তোমার মুখের ’পরে,

আমি আপনি পড়ি আলোর পিছনে॥

• পাণ্ডুলিপির পাঠ: [RBVBMS 229] [নমুনা]

• পাঠভেদ: স্বরবিতান ঊনচত্বারিংশ (৩৯) খণ্ডের (ফাল্গুন ১৪১৩) ৮৪ পৃষ্ঠা অনুসারে নিচে পাঠভেদটি দেখানো হলো।
  
  তত্ত্ববোধিনী  পত্রিকা'র 'বৈশাখ ১৩২১' এবং 'ফাল্গুন ১৩২১' সংখ্যায় গানটির প্রথম চরণটি মুদ্রিত ছিল-
              'তুমি এত আলো জ্বালিয়েছে এই গগনে'       
  
            আপনি থাকো আলোর পিছনে.....
            আমি আপনি পড়ি আলোর পিছনে          : স্বরলিপি, গীতলেখা ১ (১৩২৪)
  
           তুমি আপনি থাকো আলোর পিছনে.....
           আপনি পড়ি আলোর পিছনে                  : কথার অংশ, গীতলেখা ১ (১৩২৪)
                                                                  গীতবিতান (আশ্বিন ১৩৩৮)

  
  এছাড়া গীতিমাল্যের পাঠে এই দুটি পংক্তির পাঠে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। নিচে গীতিমাল্যের পাঠ দেওয়া হলো।
                      আপনি থাক আলোর পিছনে
                      আপনি পড়ি আলোর পিছনে 

তথ্যানুসন্ধান

• ক. রচনাকাল ও স্থান: [RBVBMS 229] পাণ্ডুলিপিতে গানটির সাথে রচনাকাল এবং স্থানের উল্লেখ আছে- '২০ ফাল্গুন ১৩২০ শান্তিনিকেতন'।
  ১৩২০ বঙ্গাব্দের ১৭ ফাল্গুন তারিখে, রবীন্দ্রনাথ কলকাতা থেকে শান্তিনিকতনে আসেন। ১৮ ফাল্গুন থেকে ২৯ ফাল্গুন পর্যন্ত তিনি সাতটি গান রচনা করেন। এর ভিতর ২০ ফাল্গুন-এ তিনি এই গানটি রচনা করেন। এই সময় বয়স ছিল রবীন্দ্রনাথের ৫২ বৎসর ১০ মাস।
          [রবীন্দ্রনাথের ৫২ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে রচিত গানের তালিকা]
   

• খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:

  • গ্রন্থ:

    • কাব্যগ্রন্থ ৯ম খণ্ড। গীতিমাল্য গান ৬৬। (ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ)। পৃষ্ঠা: ৩৬৩। [নমুনা]
    • গীতবিতান
      • দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)। পৃষ্ঠা: ৪৪২ [নমুনা]
      • প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, মাঘ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)। গান সংখ্যা ১০। পৃষ্ঠা: ১৯-২০ [নমুনা: প্রথমাংশ, দ্বিতীয়াংশ]

      • অখণ্ড সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দ)। পর্যায়: পূজা ৪২। উপবিভাগ:  বন্ধু ১০। পৃষ্ঠা: ২৩ [নমুনা]

    • গীতলেখা প্রথম ভাগ (১৩২৪ বঙ্গাব্দ)। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।

    • গীতিচর্চ্চা গান সংখ্যা ৯ (পৌষ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)। পৃষ্ঠা: ৬ [নমুনা]

    • গীতিমাল্য

      •  প্রথম সংস্করণ [ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস, ১৯ আষাঢ় ১৩২১ বঙ্গাব্দ। ৬৬ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৮৭] [নমুনা]

      • ৬৬ সংখ্যক গান। রবীন্দ্ররচনাবলী একাদশ খণ্ড (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৯৩)। পৃষ্ঠা ১৮৩।

    • বৈতালিক (চৈত্র ১৩২৫ বঙ্গাব্দ)। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।

    • স্বরবিতান ঊনচত্বারিংশ (৩৯) খণ্ডের (ফাল্গুন ১৪১৩) অষ্টম। পৃষ্ঠা ২৪-২৫।

  • পত্রিকা:

    • তত্ত্ববোধিনী

      • বৈশাখ ১৮৩৬ শকাব্দ, ১৩২১ বঙ্গাব্দ। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল। পৃষ্ঠা: ৩-৪। [নমুনা]

      • ফাল্গুন ১৮৩৬ শকাব্দ, ১৩২১ বঙ্গাব্দ। পঞ্চাশীতিতম সাম্বৎসরিক ব্রহ্মোৎসবের প্রাতঃকালীন অধিবেশনের চতুর্থ গান। পৃষ্ঠা ১৮৮।

      • ব্রহ্মসঙ্গীত। মিশ্র ভৈরবী। (ফাল্গুন ১৮৪২ শকাব্দ ১৩২৭ বঙ্গাব্দ।) পৃষ্ঠা: ২৯৫। [নমুনা]
         

  • পরিবেশনা: সোমবার, ১১ মাঘ ১৩২১ বঙ্গাব্দ [২৫ জানুয়ারি ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দ]-এ পঞ্চাশীতিতম (৮৫) সাংবৎসরিক মাঘোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই মাঘোৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথের ১৬টি গান পরিবেশিত হয়েছিল। এর ভিতরে প্রাতঃকালীন অধিবেশনে পরিবেশিত হয়েছিল ৬টি গান এবং সায়ংকালীন অধিবেশনে ১০টি গান পরিবেশিত হয়েছিল। এই গানটি পরিবেশিত হয়েছিল প্রাতঃকালীন অধিবেশনে।
     

  • প্রকাশের কালানুক্রম: 
    তত্ত্ববোধিনী (বৈশাখ ১৮৩৬ শকাব্দ, ১৩২১ বঙ্গাব্দ) গানটি স্বরলিপিসহ প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর ১১ মাঘ ১৩২১ বঙ্গাব্দ [২৫ জানুয়ারি ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দ]-এ পঞ্চাশীতিতম (৮৫) সাংবৎসরিক মাঘোৎসব-এর প্রাতঃকালীন অধিবেশনে প্রথম গানটি পরিবেশিত হয়েছিল। এই বছরেই  তত্ত্ববোধিনী  পত্রিকার ফাল্গুন সংখ্যায় গানটি পুনরায় প্রকাশিত হয়।
    
    ১৩২৩ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'কাব্যগ্রন্থ'-এর নবম খণ্ডের 'গীতালি' অংশে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়। তত্ত্ববোধিনী  পত্রিকায় তৃতীয়বারের মতো প্রকাশিত হয় ১৩২৭ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসে। ১৩৩২ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে প্রকাশিত হয় গীতিচর্চ্চা । এই গ্রন্থের ৯ম গান হিসেবে এই গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
    
    ১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৩৪৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে এই গানটি গৃহীত হয় পূজা পর্যায়ে। ১৩৮০ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের অখণ্ড সংস্করণে পূজা পর্যায়ের ৪২ সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
     

• গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
  • স্বরলিপি: [নমুনা]
  • স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
                        [দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
                             
  • রাগ ও তাল:
    • স্বরবিতান ঊনচত্বারিংশ খণ্ডে (ফাল্গুন ১৪১৩) গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিটি ৪।৪ ছন্দে 'কাহারবা' তালে নিবদ্ধ। 
                   
    • রাগ: মিশ্র ভৈরবী।  তাল: ঠুংরী [সূত্র : গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়]
    • রাগ: ভৈরবী। তাল: ঠুংরী [রবীন্দ্রসংগীতের ক্রমবিকাশ ও বিবর্তন। ড: দেবজ্যোতি দত্ত মজুমদার। (সাহিত্যলোক, ডিসেম্বর ১৯৮৭,পৌষ ১৩৯৪ বঙ্গাব্দ)]।
    • রাগ: ভৈরবী-বাউল। তাল কাহারবা [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা । সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস, জানুয়ারি ১৯৯৩)। পৃষ্ঠা: ৩৭]।
    • রাগ: ভৈরবী। তাল: কাহারবা। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই ২০০১], পৃষ্ঠা: ৬৯।
                     [কাহারবা তালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
                      [ভৈরবী রাগে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]

    উল্লেখ্য, তত্ত্ববোধিনী  পত্রিকা'র 'বৈশাখ ১৩২১' সংখ্যায় দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপিটি শুরু হয়েছে- 'তুমি'  দিয়ে। [নমুনা] কিন্তু স্বরবিতান ঊনচত্বারিংশ খণ্ডে (ফাল্গুন ১৪১৩) মুদ্রিত স্বরলিপিটির শুরুতে 'তুমি' বাদ দিয়ে, শুরু হয়েছে 'এত আলো...' দিয়ে। এছাড়া গানের ভিতরেও তত্ত্ববোধিনীর স্বরলিপির সাথে স্বরবিতান ঊনচত্বারিংশ খণ্ডের স্বরলিপির হেরফের রয়েছে।

    • গ্রহস্বর: সা।
    • লয়: মধ্য।