মাঘোৎসব

রাজা রামমোহন রায়-এর প্রবর্তিত ব্রাহ্মধর্মাবলম্বীদের জন্য, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে প্রবর্তিত একটি বাৎসরিক উৎসব। এই উৎসব প্রতি বঙ্গাব্দের (পুরাতন পঞ্জিকা) মাঘ মাসের ১১ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়।

রাজা রামমোহন রায় দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে ২০ আগষ্ট তারিখে  ব্রাহ্ম মতাদর্শের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে উত্তর কলকাতার বাঙালি খ্রিষ্টান কমল বোসের বাড়িতে একটি 'ব্রাহ্মসভা'র আয়োজন করেন। এই সভায় ব্রাহ্মদের জন্য একটি পৃথক ধর্মীয় সমাজ গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং এই সমাজের নামকরণ করা হয়, 'ব্রাহ্মসমাজ'। এই দিনটিকে ব্রাহ্মরা ‘ভাদ্রোৎসব’ নামে পালন করে থাকেন। ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে জানুয়ারি (১১ই মাঘ), রাজা রামমোহন রায়ের উৎসাহে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানের ভিতর দিয়ে ব্রাহ্মসমাজের ঘোষণা দেন। এই বিশেষ দিনকে ব্রাহ্মধর্মাবলম্বীরা 'মাঘোৎসব' হিসেবে পালন করে থাকেন।

১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে নভেম্বর রাজা রামমোহন রায় কলকাতা থেকে বিলেত যাত্রা করেন। তাঁর অবর্তমানে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১১ই মাঘ মাঘোৎসব নামে অনুষ্ঠান শুরু করেন। বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে ব্রাহ্মধর্মাবলম্বীরা এই উৎসব স্থানীয়ভাবে পালন করে থাকেন।

মুনতাসীর মামুনের ঢাকা স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী (পৃষ্ঠা: ১৫৬, প্রথম প্রকাশ: জুন ১৯৯৩, অনন্যা প্রকাশনী) গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে ঢাকায় ব্রাহ্মসমাজ মন্দির তৈরি হয়। দোতলা এই স্থাপনার প্রধান আকর্ষণ ছিল ৫৫ ফুট দীর্ঘ, ২২ ফুট প্রশস্ত ও ২১ ফুট উঁচু একতলার হলঘর। যদিও ঢাকাতে ব্রাহ্মপরিবারের সংখ্যা নিতান্তই কমে এসেছে। তবে এখানকার ব্রাহ্মমন্দিরে প্রতি বৎসর ১১ই মাঘ মাঘোৎসব পালিত হয়ে থাকে।

প্রতিবৎসর মাঘ মাসের ১১ তারিখে, ব্রাহ্মসমাজের সাংবৎসরিক মাঘোৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ প্রচুর ব্রহ্মসঙ্গীত রচনা করেছেন। এছাড়া এই উৎসবে প্রথমবারের মতো রবীন্দ্রনাথের অনেক গান পরিবেশিত হয়েছে। যে সকল মাঘোৎসবে রবীন্দ্রনাথের গান পরিবেশিত হয়েছে বা রচিত হয়েছে, তার তালিকা নিচে দেওয়া হলো।

১৩২৭ বঙ্গাব্দের মাঘোৎসবে রবীন্দ্রনাথের কিছু গান গীত হয়েছিল। এই সময় রবীন্দ্রনাথ নিউইয়র্কে ছিলেন। এই গানগুলো হলো