বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
ভেঙে
মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে
পাঠ ও পাঠভেদ:
ভেঙে
মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে
ও
বন্ধু আমার
!
না পেয়ে তোমার দেখা, একা একা দিন যে আমার কাটে না রে ॥
বুঝি
গো রাত পোহালো,
বুঝি ওই রবির আলো
আভাসে দেখা দিল গগন-পারে—
সমুখে ওই হেরি পথ, তোমার কি রথ পৌঁছবে না মোর দুয়ারে ॥
আকাশের যত তারা
চেয়ে রয় নিমেষহারা,
বসে রয় রাত-প্রভাতের পথের ধারে।
তোমারি দেখা পেলে সকল ফেলে ডুববে আলোক-পারাবারে।
প্রভাতের পথিক সবে
এল কি কলরবে—
গেল কি গান গেয়ে ওই সারে সারে !
বুঝি-বা ফুল ফুটেছে, সুর উঠেছে অরুণবীণার তারে তারে ॥
পাণ্ডুলিপির
পাঠ:
[RBVBMS
111] [পাণ্ডুলিপি]
পাঠভেদ: স্বরবিতান ষোড়শ (১৬, গীতপঞ্চাশিকা, আশ্বিন ১৪১৩) খণ্ডের ১৯৪ পৃষ্ঠায় মুদ্রিত পাঠভেদ অনুসারে নিচের পাঠভেদটি দেওয়া হলো।
ও বন্ধু আমার : স্বরলিপি,গীতপঞ্চাশিকা (আশ্বিন ১৩২৫)
বন্ধু আমার : কথার অংশ,গীতপঞ্চাশিকা (আশ্বিন ১৩২৫)
গীতবিতান
(আশ্বিন ১৩৩৮)
বুঝি ঐ রাত পোহালো : স্বরলিপি,গীতপঞ্চাশিকা (আশ্বিন ১৩২৫)
বুঝি গো রাত পোহালো : কথার অংশ,গীতপঞ্চাশিকা (আশ্বিন ১৩২৫)
গীতবিতান (আশ্বিন ১৩৩৮)
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১০ অক্টোবরে, শান্তিনিকেতনের বিচিত্রায় ‘ডাকঘর’ নাটক অভিনয়কালে রবীন্দ্রনাথ এই গানটি রচনা করেন। এ বিষয়ে আশামুকুলের বর্ণনা থেকে থেকে জানা যায়- "...দইওয়ালা আসার কথা― কিন্তু তার জন্য প্রতীক্ষার আগেই উইংসের পাশ থেকে গুরুদেব হাত তুলে জানালেন ড্রপ পড়বে। ড্রপ পড়ল। আমাকে ডাকলেন। বারান্দার দিকে গ্রীনরুমে গিয়ে একটা টেবিলের উপর বসলেন। আমি পাশে দাঁড়িয়ে। একটা কাগজে গান গেয়ে গেয়ে রচনা করে চললেন, "ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে"। সমস্ত গানটা একনাগাড়েই লেখা হয়ে গেল। আমাকে বললেন, "গাইতে পারবি?" সুরটা যদিও শুনলাম, তবুও ভরসা পেলাম না। আবার স্টেজে গিয়ে বসলাম। গুরুদেব গানটা গাইলেন। ড্রপ উঠলো। দইওয়ালা হাঁক শোনা গেল।' [সূত্র : রবিজীবনী সপ্তমখণ্ড। প্রশান্তকুমার পাল। পৃষ্ঠা: ২৯১]
উল্লেখ্য,
এই গানটি
পরে ‘ডাকঘর’
নাটকে গ্রহণ
করা হয় নাই।
আশামুকুলের বর্ণনানুসারে গানটির রচনাকাল হয়- ২৪
আশ্বিন, ১৩২৪ বঙ্গাব্দ
[বুধবার ১০ অক্টোবর,
১৯১৭]।
স্থান
শান্তিনিকেতন। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৬ বৎসর
৫
মাস।
[রবীন্দ্রনাথের
৫৬ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে রচিত গানের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
গীতপঞ্চাশিকা (আশ্বিন ১৩২৫ বঙ্গাব্দ)।দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, মাঘ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)। গান সংখ্যা ২৬। পৃষ্ঠা: ২৫-২৬। [নমুনা: ২৫, ২৬]
অখণ্ড সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দ)। পর্যায়: পূজা ৫৮। উপবিভাগ: বন্ধু ২৬। পৃষ্ঠা: ২৯-৩০।
প্রবাহিনী (বিশ্বভারতী ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)। পূজা ২২। ৬৭-৬৮ [নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
স্বরবিতান ষোড়শ
(১৬,
গীতপঞ্চাশিকা,
আশ্বিন
১৪১৩)
খণ্ডের
৪২ সংখ্যক গান।
পৃষ্ঠা: ১৪৫-৪৭।
রেকর্ড:
১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দ
থেকে ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে বেশ কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীতের রেকর্ড প্রকাশ
করেছিল এইচ.এম.ভি. রেকর্ড কোম্পানি। এর ভিতরে এই গানটি রেকর্ডে গেয়েছিলেন
হরেন্দ্রনাথ দত্ত। রেকর্ড নম্বর
P 7058।
[সূত্র: রেকর্ডে
রবীন্দ্রসংগীত। সিদ্ধার্থ ঘোষ। ইন্দিরা সংগীত-শিক্ষায়তন। নভেম্বর ১৯৮৯।
পৃষ্ঠা: ৫৪]
প্রকাশের
কালানুক্রম: ১৩২৫
বঙ্গাব্দের 'গীতপঞ্চাশিকা' গ্রন্থে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
এরপর ১৩৩২ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'প্রবাহিনী' গ্রন্থের পূজা পর্যায়ে গানটি
অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম
সংস্করণে
'গীতপঞ্চাশিকা'
থেকে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৩৪৮
খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে এই গানটি
গৃহীত হয় পূজা পর্যায়ে। ১৩৮০ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের অখণ্ড সংস্করণে
পূজা পর্যায়ের গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
স্বরবিতান
ষোড়শ
খণ্ডে
(আষাঢ় ১৪১৩)
গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই।
উক্ত স্বরলিপিটি ৩।৩ মাত্রা
ছন্দে ‘দাদরা’
তালে নিবদ্ধ।
[দাদরা
তালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
এটি একটি ভাঙা গান। মূল গানটি ছিল একটি বাউল গান।
মূল গান:
[অমর পাল:
শ্রবণ নমুনা]
দেখেছি রূপ সাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা,
তারে ধরি ধরি, মনে করি, ধরতে গেলে ধরা দেয় না।
বহুদিন তারি সঙ্গে ভেসেছি প্রেম তরঙ্গে
সেই সে সুজনের সঙ্গে হতো দেখা শোনা।
এখন বলে বলুক লোকে মন্দ বিরহে তার প্রাণ বাঁচে না।
পথিক আর ভেবো না রে ডুবে যাও রূপসাগরে
বিরলে বসে করো যোগসাধনা।
এখন ধরতে পেলে মনের মানুষ চলে যেতে আর দিও না।
লোকসংগীতের সুর/দাদরা। [রবীন্দ্রসংগীতের ক্রমবিকাশ ও বিবর্তন। ডঃ দেবজ্যোতি দত্ত মজুমদার। সাহিত্যলোক। পৌষ ১৩৯৪।]। পৃষ্ঠা : ১১৪।
বাউল। তাল: ‘দাদরা [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস, ডিসেম্বর, ২০০৬)]। পৃষ্ঠা: ৭১ ]।
বাউল। তাল: দাদরা। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই ২০০১, পৃষ্ঠা: ১২৪।]
গ্রহস্বর: পা।
লয়: দ্রুত।