মেসোজোয়িক
যুগ-এর অন্তর্গত
ট্রায়াসিক (Triassic)
অধিযুগের শুরুতে (২৫ কোটি বৎসর আগে) এই বৃহৎ মহা-মহাদেশটি
অখণ্ড ছিল। কিন্তু ভিতরে ভিতরে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া ছিল।
মূলত ২০ কোটি বৎসর আগে উভয়
মহা-মহাদেশটি স্পষ্টভাবে পৃথক ভূখণ্ড হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।
মেসোজোয়িক যুগ-এর
অন্তর্গত জুরাসিক
অধিযুগে (২০
কোটি বৎসর আগে)
গোণ্ডোয়ানা
উত্তর
আফ্রিকা অংশের সাথে যুক্ত ছিল। প্রায় ১৪ কোটি বৎসর আগে ভারতীয় পাত যুক্ত হয়ে যায়
অষ্ট্রেলিয়া, এ্যান্টার্ক্টিকা এবং
দক্ষিণ আমেরিকার সাথে। ৯ কোটি
বৎসর আগে আবার ভারত উপমহাদেশ
গোণ্ডোয়ানা
থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই সময়
এই পাতের সাথে মাদাগাস্কার যুক্ত ছিল। পরে মাদাগাস্কার থেকে ভারতীয় পাত বিচ্ছিন্ন
হয়ে যায়। এরপর ভারতীয় পাত বাৎসরিক ২০ সেন্টিমিটার গতিতে উত্তর দিকে অগ্রসর হয় এবং
সেনোজোয়িক (Cenozoic)
যুগের ঈয়োসিন (Eocene)
অন্তযুগে অর্থাৎ
৫ কোটি ৫০ লক্ষ থেকে ৫ কোটি বৎসরের ভিতরে
ভারতীয় পাত ইউরেশিয়ার পাতের সাথে যুক্ত হয়ে যায়। অনেকের মতে এই মিলে যাওয়ার ঘটনা
ঘটেছিল ৩ কোটি ৫০ লক্ষ থেকে। তবে বেশিরভাগ বিজ্ঞানী মনে করেন যে, ভারতীয় পাত ছিল
আকারে বেশ ছোটো। ফলে দ্রুত এশিয়ার সাথে যুক্ত হয়েছিল।
প্রাথমিক ভাবে ভারতীয় পাতটি একটি মৃদু ধাক্কায় মিলিত হয়েছিল ইউরেশিয়ান পাতের সাথে।
ঘটনাটি ঘটেছিল একালের নেপাল অঞ্চলে। এই ধাক্কায় তিব্বত উপত্যাকা এবং নেপালের উত্থান
ঘটেছিল। এর পরপরই অপর একটি তীব্র ধাক্কায় হিমালয়ের উচ্চতর শৃঙ্গগুলোর উৎপত্তি
ঘটেছিল। উল্লেখ্য ইউরেশিয়ান পাতের
সাথে ভারতীয় পাতের
ধাক্কার আগে, দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ অঞ্চল এবং আজকের ভারতবর্ষ ভারত মহাসাগরের পানির
নিচে ছিল। বর্তমানে ভারতীয় পাত ৫
সেন্টিমিটার গতিতে উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
২০০৪খ্রিষ্টাব্দের২৬ ডিসেম্বর ভারত মহাসাগরে
৯.৩ মাত্রার যে ভূমিকম্প
হয়েছিল ভারতীয় পাতের কারণে। এই পাতটি
বছরে
৬ সেমি হারে
বর্মী পাতের তলায় আঘাত হানছে।
ইন্দো-অস্ট্রেলীয় ও ইউরেশীয় পাতের মিলনস্থলে সুন্দা খাতের সৃষ্টি হয়েছে। এই জায়গার ভূমিকম্পের কারণ হলো এই খাতের সাথে আড়াআড়িভাবে কোনো ভূত্বকীয় পাত আঘাত করা। আরেকটি কারণ হলো এই খাতের পূর্বদিকের অংশ থেকে খাত বরাবর সাগর তলদেশ স্থানান্তরিত হওয়া।
২০০৪খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে ডিসেম্বরের ভূমিকম্পের
জারণে প্রায় ১০০ কিলোমিটার অংশ জুড়ে ভাঙন সৃষ্টি
হয়েছিল। এই ভাঙনের ফলে পাতটির প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার অংশ
পিছল যায়। ভূচ্যুতির অংশটি ১৫ মিটার সরে যায় ও সাগরের তলদেশ প্রায় কয়েক মিটার
উপরে উঠে আসে। এর ফলেসে সময়ে
সুনামি
সৃষ্টি হয়েছিল।