কামিনী
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এক প্রকার ফুল ও গাছের নাম। বাংলাদেশ-সহ
পূর্ব-ভারতের এই গাছ পাওয়া যায়। গাছগুলো প্রায় ৩ থেকে ৪ মিটার
সপুষ্পক শ্রেণির এই গাছটির কাণ্ড কাষ্ঠাল। এর পত্রদণ্ডে সাধারণতঃ দুই দিকে ৪ জোড়া
করে পাতা থাকে। সবুজ বর্ণের পাতাগুলো লম্বাটে ডিম্বকৃতির হয়ে থাকে। এর দৈর্ঘ্য
প্রায় দেড় ইঞ্চি এবং প্রস্থে ১ ইঞ্চি হয়। এর পত্রবৃন্ত গোলকার।
গ্রীষ্ম, বর্ষা ও হেমন্তে কামিনী গাছে সাদা ফুল থোকায় থোকায় ভরে ওঠে।
এই গাছের ফুল সুগন্ধী। বর্ণ সাদা। ফুলের বহির্বাসে ৫টি পাঁচটি পাপড়ি থাকে। পাপড়ি
গুলো পরস্পর থেকে বিযুক্ত থাকে। পাতার মাথার দিকে বিস্তৃত হয়। তবে অগ্রভাগ হয় সরু।
প্রতিটি ফুলে ১০টি লম্বা পুংকেশর থাকে। স্ত্রীকেশরের মোটা এবং প্রায় পুংকেশরের সমান
লম্বা হয়। গর্ভাশয় ২-৫টি কোষ-বিশিষ্ট হয়। এই ফুল সন্ধ্যায় ফোটে আবার ভোরবেলায় ঝরে যায়।
কামিনীর ফল প্রায় অর্ধ ইঞ্চি লম্বা হয়। এতে ১টি বা ২টি কোষ থাকে। এই কোষে ১টি বা
২টি বীজ থাকে। ফল হয় ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের ভিতরে।
এই গাছের গুণাগুণ
মূলের ছাল খেলে বা
গায়ের বেদনাযুক্ত অংশে ঘষলে উপকার হয়।
পাতার গুঁড়া নতুন
ঘায়ে লাগালে উপশম হয়।
পাতা অতিসার ও
আমাশয় নিরাময়ে খাওয়া হয়।
এছাড়া
চা বাগানে এই ছায়াতরু
হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সুগন্ধী ফুল হিসেবে ঘরে রাখা হয়। এর কাঠ থেকে অঙ্গরাগ তৈরি করা
হয়।
সূত্র:
ভারতীয় বনৌষধী (সচিত্র)।
প্রধম খণ্ড। কলকাতা বিশ্বিদ্যালয় ২০০২।