বিষয়: নজরুলসঙ্গীত
শিরোনাম: জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া
জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া!
ছুঁলেই তোর জাত যাবে? জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া॥
হুঁকোর জল আর ভাতের হাঁড়ি
ভাব্লি এতেই জাতির জান,
তাইত বেকুব, করলি তোরা এক জাতিকে একশ'-খান।
এখন দেখিস ভারত জোড়া পঁচে আছিস বাসি মড়া,
মানুষ নাই আজ, আছে শুধু জাত-শেয়ালের হুক্কাহুয়া॥
জানিস নাকি ধর্ম সে যে বর্ম সম সহন-শীল,
তাকে কি ভাই ভাঙ্তে পারে ছোঁয়া ছুঁয়ির ছোট্ট ঢিল!
যে জাত-ধর্ম ঠুন্কো এত, আজ নয় কা'ল ভাঙবে সে ত,
যাক্ না সে জাত জাহান্নামে, রইবে মানুষ, নাই পরোয়া॥
বলতে পারিস, বিশ্ব-পিতা ভগবানের কোন সে জাত?
কোন্ ছেলের তার লাগলে ছোঁয়া অশুচি হন জগন্নাথ?
ভগবানের জাত যদি নাই তোদের কেন জাতের বালাই?
ছেলের মুখে থুথু দিয়ে মার মুখে দিস ধূপের ধোঁয়া॥
-
রচনাকাল
ও স্থান: গানটির সুনির্দিষ্ট রচনা তারিখ জানা
যায় না। গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল বিজলী পত্রিকার '৪ শ্রাবণ ১৩৩০
বঙ্গাব্দ' সংখ্যায়। গানটির পাদটীকায় লিখা ছিল 'মাদারীপুর শান্তি-সেনা চারণ
দল'-এর জন্য লিখিত অপ্রকাশিত নাটক থেকে'।
ব্রহ্মমোহন ঠাকুর তাঁর 'নজরুল সঙ্গীত নির্দেশিকা গ্রন্থে' গানটির 'রচনার স্থান
ও কাল' হিসেবে উল্লেখ করেছেন-'বহরমপুর জেলে ১৯২৩ সালের ১৮ই জুন থেকে ২০
জুলাই-এর মধ্যে লেখা'।
এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ২৪ বৎসর ১ মাস।
১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে চারণ কবি মুকুন্দ দাস তাঁর রচিত 'পল্লী সেবা'
যাত্রাপালায় ব্যবহার করেছিলেন।
- পরিবেশনা: ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসের ২-৩ তারিখে (শনিবার-রবিবার ১৯-২০
বৈশাখ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ) ফরিদপুরের অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় কংগ্রেস অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই
অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলন
মহাত্মা গান্ধী ও
চিত্তরঞ্জন দাশ। সভার সভাপতিত্ব করেছিলেন
চিত্তরঞ্জন দাশ। এই
অধিবেশনেই নজরুলের সাথে প্রথম
গান্ধীজির সাক্ষাৎ হয়।
গান্ধীজির অনুরোধে
এই গানটি পরিবেশন
করেন। এই অধিবেশনে নজরুল এই গানটি পরিবেশন করেছিলেন।
- পত্রিকা:
- বিজলী।
৪ঠা শ্রাবণ ১৩৩০ (শুক্রবার ২০ জুলাই ১৯২৩)। শিরোনাম 'জাত জালিয়াত'। পাদটীকায় লিখা ছিল 'মাদারীপুর শান্তি-সেনা চারণ
দল'-এর জন্য লিখিত অপ্রকাশিত নাটক থেকে'।
-
উপাসনা শ্রাবণ ১৩৩০
(আগষ্ট ১৯২৩)। বিজলী পত্রিকা থেকে এই গানের পাঠ গ্রহণ করা হয়েছিল।
-
বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা
শ্রাবণ ১৩৩০ (আগষ্ট ১৯২৩)। শিরোনাম: জাত-জালিয়াত'।
- গ্রন্থ:
বিষের বাঁশী। প্রথম সংস্করণ [১৬ই শ্রাবণ ১৩৩১
বঙ্গাব্দ (শুক্রবার ১ আগষ্ট ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দ)। শিরোনাম:
জাতের বজ্জাতি।
- নাটক: পল্লী সেবা। মুকুন্দ দাস। পঞ্চদশ দৃশ্য। নিতাইয়ের গান। [চারণকবি
মুকুন্দদাস (রচনা সম্ভারসহ)। ডক্টর জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। জয়গুরু গোস্বামী।
বিশ্বাবাণী প্রকাশনী।]পৃষ্ঠা: ৫১৬-৫১৭।
-
রেকর্ড:
- এইচএমভি।
সেপ্টেম্বর ১৯২৫ (১৬ ভাদ্র-১৪
আশ্বিন ১৩৩২) । পি ৬৯৪৫। পরজ মিশ্র। শিল্পী:
হরেন্দ্রনাথ দত্ত। উল্লেখ্য, রেকর্ড বুলেটিনে লেখা ছিল- "শ্রীযুক্ত
হরেন্দ্রনাথ দত্ত মহাশয় এবারের দুইখানি স্বদেশী গান রেকর্ড দিয়েছেন। দ্বিতীয়
গানখানি ছুঁৎমার্গ পরিহার সম্বন্ধে সুপ্রসিদ্ধ কবি নজরুল ইসলাম দ্বারা রচিত।"
উল্লেখ্য, এটি ছিল রেকর্ডে প্রকাশিত প্রথম নজরুলসঙ্গীত। এই রেকর্ডের প্রথম গান
ছিল- রজনীকান্ত সেনের গান- তাই ভালো মোদের/মায়ের ঘরে শুধু ভাত, তাই ভালো, মোদের [বাউল][তথ্য]।
-
এইচএমভি।
মে ১৯৪২ (১৮ বৈশাখ-১০ জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৮)। ২৭২৭৬। শিল্পী:
মৃণালকান্তি ঘোষ। সুরকার:
কাজী নজরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য এর জুড়ি গান ছিল- মানবতাহীন ভারত শ্মশানে [তথ্য]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
নীলিমা দাস।
[নজরুল
সঙ্গীত স্বরলিপি, বত্রিশতম খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। ফাল্গুন ১৪১৫। ফেব্রুয়ারি
২০০৯] সপ্তম গান। রেকর্ডে
হরেন্দ্রনাথ দত্ত-এর গাওয়া গানের সুরানুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে।
[নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: সমাজসংস্কর-মূলক
- সুরাঙ্গ:
স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের সুর
- তাল:
দাদরা
- গ্রহস্বর: র্সা