বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা :
শিরোনাম:
বল দাও মোরে বল
দাও,
প্রাণে দাও মোর শকতি
পাঠ ও পাঠভেদ:
বল দাও মোরে বল দাও, প্রাণে দাও মোর শকতি
সকল হৃদয় লুটায়ে তোমারে করিতে প্রণতি ॥
সরল সুপথে ভ্রমিতে, সব অপকার ক্ষমিতে,
সকল গর্ব দমিতে খর্ব করিতে কুমতি ॥
হৃদয়ে তোমারে বুঝিতে, জীবনে তোমারে পূজিতে,
তোমার মাঝারে খুঁজিতে চিত্তের চিরবসতি।
তব কাজ শিরে বহিতে, সংসারতাপ সহিতে,
ভবকোলাহলে রহিতে, নীরবে করিতে ভকতি ॥
তোমার বিশ্বছবিতে তব প্রেমরূপ লভিতে,
গ্রহ-তারা-শশী-রবিতে হেরিতে তোমার আরতি।
বচনমনের অতীতে ডুবিতে তোমার জ্যোতিতে,
সুখে দুখে লাভে ক্ষতিতে শুনিতে তোমার ভারতী॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায় নাই।
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। সত্যরঞ্জন বসু তাঁর 'ত্রিপুরায় রবীন্দ্র-স্মৃতি' গ্রন্থে লিখেছেন-
'...
রাজবাড়ীর পশ্চিমের দীঘির উত্তর-পশ্চিম কোণায় জুড়িবাংলা(জোড়া বাংলা) - পাশাপাশি দুইটি বাংলা ঘর পূর্ব্বদুয়ারী।...সেবার (১৩০৮) কবি আসিয়া জুড়িবাংলায় আছেন। সন্ধ্যায় রোজই দস্তুরমত মজলিশ মিলিত। কবির কথা শুনিবার আগ্রহ সকলকেই পাইয়া বসিল। দেশীয় রাজাদের...সাহায্যে দেশকে কি ভাবে গড়া যায়- এইসব কথা ব্রজেন্দ্রকিশোরের মনে গভীর রেখাপাত করিয়ছিল। কোনো সময়ে শেলী, ব্রাউনিং ইত্যাদি কবির কাব্য পাঠ করিয়া কবি উন্মাদনার সঙ্গে সেগুলি তর্জমা করিয়া মহারাজকুমারকে শুনাইতেন...মাঝে মাঝে কবি তাঁহার নূতন লেখাও তাঁহাদের শুনাইতেন।... কোনো কোনো দিন ব্রজেন্দ্রকিশোর খুব নিরিবিলি আসিয়া দেখিয়াছেন- অতি প্রত্যূষে কি আবেগময় সুরে প্রার্থনা সঙ্গীত গাহিয়া চলিয়াছেন অর্গ্যান বাজাইয়া।... নিমীলিত নেত্রে অর্গ্যানের সুরে সুর মিলাইয়া "বল দাও মোরে বল দাও" কবি কি আবেগেই গাহিতেছেন...।'
ধারণা করা, রবীন্দ্রনাথ
১৩০৮ বঙ্গাব্দের ৭ই কার্তিকের কিছু পরে, ত্রিপুরা ভ্রমণে গিয়েছিলেন।
সত্যরঞ্জন বসু'র রচনা অনুসারে জানা যায়,
এই সময় তিনি
এই সময়
রাজবাড়ির 'জোড়া
বাংলা'তে
থাকতেন। সম্ভবত ত্রিপুরায় অবস্থান কালে বা তার কিছু আগে এই গানটি রচনা করেছিলেন।
এই বিচারে
ধারণা করা
হয়, গানটি রচনার সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ৫-৬ মাস।
[রবীন্দ্রনাথের
৪০ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে রচিত গানের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
দ্বিতীয় সংস্করণ (ইন্ডিয়ান প্রেস ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ, ১৩১৬ বঙ্গাব্দ), ব্রহ্মসঙ্গীত, রাগিণী ভৈরবী- তাল একতাল, পৃষ্ঠা: ৩৪০। [নমুনা]
প্রথম খণ্ড, প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৮), পৃষ্ঠা: ৩০৩-৪। [নমুনা: ১, ২]
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, মাঘ ১৩৪৮), পর্যায়: পূজা, উপবিভাগ: প্রার্থনা ১৯, পৃষ্ঠা: ৪৭। [নমুনা]
অখণ্ড, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৮০), পূজা ১১০, উপ-বিভাগ : প্রার্থনা ১৯, পৃষ্ঠা: ৫১।
গীতি-চর্চ্চা [বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৩২, গান সংখ্যা ৩৪, পৃষ্ঠা: ২২] [নমুনা]
ধর্ম্মসঙ্গীত ([ইন্ডিয়ান প্রেস্ লিমিটেড, ১৩২১ বঙ্গাব্দ)। গান। পৃষ্ঠা: ৭৯-৮০] [নমুনা: ১, ২]
বৈতালিক (চৈত্র ১৩২৫ বঙ্গাব্দ)। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।১
ব্রহ্মসঙ্গীত স্বরলিপি প্রথম ভাগ (১ মাঘ ১৩১১ বঙ্গাব্দ)। ভৈরবী-একতালা। কাঙ্গালীচরণ সেন-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল। ১
স্বরবিতান সপ্তবিংশ (২৭) খণ্ডের (বিশ্বভারতী, বৈশাখ ১৪১৫), ১১ সংখ্যক গান, পৃষ্ঠা: ৩৪-৩৭। ভৈরবী-একতাল।
পত্রিকা:
সঙ্গীত প্রকাশিক। মাঘ ১৩০৯ বঙ্গাব্দ। ভৈরবী-একতালা। পৃষ্ঠা:৭৭-৮০। [ [নমুনা]
রেকর্ডসূত্র: সিদ্ধার্থ ঘোষের রচিত রেকর্ডে রবীন্দ্রসংগীত (ইন্দিরা সংগীত-শিক্ষায়তন। নভেম্বর ১৯৮৯) গ্রন্থ থেকে আলোচ্য গানের যে রেকর্ডসূত্রের তথ্য পাওয়া যায়। তা হলো-
১৯০৮ থেকে ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে 'অডিঅন রেকর্ড কোম্পানি' এই গানের একটি রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। শিল্পী ছিলেন এস্ দাস। এই গানের রেকর্ড নম্বর ছিল- 94084/94082।
প্রকাশের কালানুক্রম:
গানটি প্রথম পরিবেশিত হয়েছিল
শুক্রবার, ১১ মাঘ ১৩০৮ বঙ্গাব্দ [২৪ জানুয়ারি ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দ]
তারিখে-
৭২তম মাঘোৎসবের প্রাতঃকালীন অধিবেশনে।
এরপর গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল
সঙ্গীত প্রকাশিক। পত্রিকার 'মাঘ ১৩০৯ বঙ্গাব্দ
সংখ্যায়'।
এরপর যে সকল গ্রন্থে গানটি অন্তর্ভুক্ত
হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল, সেগুলো হলো-
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা 'ফাল্গুন
১৩০৯' সংখ্যা,
ব্রহ্মসঙ্গীত স্বরলিপি
প্রথম ভাগ (১৩১১),
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা 'চৈত্র ১৩১৪'
সংখ্যা,
গান
প্রথম সংস্করণ
(১৩১৫),
গান
দ্বিতীয় সংস্করণ
(১৩১৬),
ধর্ম্মসঙ্গীত
(১৩২১),
কাব্যগ্রন্থ দশম খণ্ড
(১৩২৩),
বৈতালিক
(১৩২৫),
গীতি-চর্চ্চা
(১৩৩২)।
এ সকল গ্রন্থাদির পরে,
১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত
গীতবিতান
-এর
প্রথম খণ্ড, প্রথম সংস্করণ
-
গানটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এর
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের মাঘ মাসে। এই
সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল
পূজা, পর্যায়ের
উপবিভাগ: প্রার্থনা হিসেবে। ১৩৭১ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত অখণ্ড গীতবিতানের ১১০
সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। অখণ্ড গীতাবিতানের তৃতীয় সংস্করণ
প্রকাশিত হয়েছিল পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে।
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। [দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর -কৃত স্বরলিপির তালিকা]
সুর ও তাল:
রাগ-ভৈরবী। তাল: একতাল। [স্বরবিতান সপ্তবিংশ (২৭)]
গ্রহস্বর: দ্া।
লয়: মধ্য।