বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
কেন
তোমরা আমায় ডাকো,
আমার মন না মানে।
পাঠ ও পাঠভেদ:
কেন তোমরা আমায় ডাকো, আমার মন না মানে।
পাই নে সময় গানে গানে ॥
পথ আমারে শুধায় লোকে, পথ কি আমার পড়ে চোখে,
চলি যে কোন্ দিকের পানে গানে গানে ॥
দাও না ছুটি, ধর ত্রুটি, নিই নে কানে।
মন ভেসে যায় গানে গানে।
আজ যে কুসুম-ফোটার বেলা, আকাশে আজ রঙের মেলা,
সকল দিকেই আমায় টানে গানে গানে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
RBVBMS 229 তে গানটি পাওয়া যায়। [নমুনা]
ভাবসন্ধান: গীতবিতান-এর এ
গানটিতে সঙ্গীত-বিভোর এক পথিকের পথ-চলার খবর রয়েছে। নিরন্তর পথ-চলাতেই কেবল মন
এর। কারো আহ্বানে কান দেওয়া সম্ভব নয় তার পক্ষে। পথের দিকেও তার চোখ নেই। নিজে
কোন্ দিকে চলেছে জানা নেই যেমন, তেমনি আর কাউকে পথের দিশা দেওয়া তার পক্ষে
অসম্ভব তো বটেই! কাজের হাত থেকে ছুটি পাওয়া যায় না। কাজের কী ভুল হলো, সে-কথা
মোটে প্রবেশ করে না কানে। কেবল, গানের পাখায় ভর করে মন ভেসে চলে। যখন ফুলের
সমারোহ চতুর্দিকে, আকাশে চলছে নানান্ রঙের খেলা—তখন সর্বদিক তার মনকে টেনে নিয়ে
যায়। তাই এমন গানে গানে পথ চলতে-থাকা।
গানের সুরটিতে আপন-ভোলা চলার ভাব সুস্পষ্ট।
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
১৩২০ বঙ্গাব্দে
বঙ্গীয় সাহিত্য-সম্মিলনের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতায়। এই সভার সভাপতিত্ব
করেছিলেন
দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ কলকাতায় আসেন। এই
অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ তিনটি গান রচনা করেছিলেন। গান তিনটি
হলো—
প্রাণে
গান নাই,
মিছে তাই ফিরিনু যে
[পূজা-২৩৮]
[তথ্য]
কেন তোমরা আমায় ডাকো,
আমার মন না মানে
সে
দিনে আপদ আমার যাবে কেটে।
[পূজা-৪৯]
[তথ্য]
[সূত্র:
রবিজীবনী ষষ্ঠ খণ্ড। প্রশান্তকুমার পাল (ফেব্রুয়ারি ২০০৮)
পৃষ্ঠা:
৪৭৭।]
পাণ্ডুলিপিতে গানটি রচনার
তারিখ উল্লেখ আছে, ২৭ চৈত্র কলিকাতা। সব মিলিয়ে এই গানটির রচনাকাল ও স্থান
দাঁড়ায়
—
২৭ চৈত্র ১৩২০ বঙ্গাব্দ।
[১০ এপ্রিল ১৯১৪]। কলিকাতা।
এই সময় রবীন্দ্রনাথের
বয়স ছিল ৫২ বৎসর ১২ মাস।
[রবীন্দ্রনাথের
৫২ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সের রচিত গানের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
কাব্যগ্রন্থ নবম খণ্ড (ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ)। গীতিমাল্য ৯৪। পৃষ্ঠা: ৩৯২। [নমুনা]
গীতলেখা তৃতীয় ভাগ (১৩২৭ বঙ্গাব্দ)। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরকৃত স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল।
প্রথম সংস্করণ (ইন্ডিয়ান পাব্লিশিং হাউস, ১৯ আষাঢ় ১৩২১ বঙ্গাব্দ)। ৯৪ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ১১৬] [নমুনা]
রবীন্দ্ররচনাবলী একাদশ খণ্ড, গীতিমাল্য (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৯৩)। ৯৪ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ২০০-২০১।
সঞ্চয়িতা [বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৩৮), গীতিমাল্য, শিরোনাম: গানের টানে, পৃষ্ঠা: ৪৮০-৮১] [নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
পত্রিকা
আনন্দসঙ্গীত
পত্রিকা
(অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩২৪ বঙ্গাব্দ)।
স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল।
তবে স্বরলিপিকারের নাম উল্লেখ ছিল না।
ওই একই বৎসরে এই পত্রিকার মাঘ-ফাল্গুন সংখ্যায় গানটি দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুরকৃত স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল।
[আনন্দসঙ্গীত
পত্রিকায় প্রকাশিত রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
রেকর্ডসূত্র: ১৯১৬ থেকে ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে গ্রামফোন রেকর্ড এই
গানটির একটি রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এর শিল্পী ছিলেন সুধীরচন্দ্র
চট্টোপাধ্যয়। রেকর্ড নম্বর
P 5718।
[সূত্র:
রেকর্ডে রবীন্দ্রসংগীত। সিদ্ধার্থ ঘোষ। ইন্দিরা সংগীত-শিক্ষায়তন।
নভেম্বর ১৯৮৯। পৃষ্ঠা:
৪৬]
[রেকর্ডে ধৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের
তালিকা]
প্রকাশের
কালানুক্রম:
১৩২১ বঙ্গাব্দে
ইন্ডিয়ান
প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়েছিল 'গীতিমাল্য' নামক
গ্রন্থ। এই গ্রন্থের ৯৪ সংখ্যক গান হিসেবে এই গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
১৩২৩ বঙ্গাব্দে
ইন্ডিয়ান
প্রেস থেকে প্রকাশিত 'কাব্যগ্রন্থ'-এর নবম খণ্ডের 'গীতিমাল্য' অংশে এই
গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল।
১৩২৪ বঙ্গাব্দে স্বরলিপি-সহ এই গানটি প্রকাশিত হয়েছিল 'আনন্দসঙ্গীত'
পত্রিকায়। তবে এর সাথে স্বরলিপিকারের নাম ছিল না। ১৩২৭ বঙ্গাব্দে
গীতলেখা
তৃতীয় ভাগ প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে এই গানটি দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের
স্বরলিপি-সহ
অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে, রবীন্দ্রনাথের সম্পাদিত 'সঞ্চয়িতা' নামক
কবিতা ও গানের সংকলন প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে গীতিমাল্য অংশে 'গানের টানে'
শিরোনামে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দে গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত
হয়। এরপর ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে গানটি গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৩৮০ বঙ্গাব্দে অখণ্ড
গীতবিতানের তৃতীয় ও সর্বশেষ সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলি:
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর
[দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
রাগ ও তাল:
সঙ্গীত
বিষয়ক তথ্যাবলী:
স্বরবিতান একচত্বারিংশ
(৪১) খণ্ডে
(বৈশাখ
১৪১৩) গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই।
উক্ত স্বরলিপিটি
৪।৪
মাত্রা
ছন্দে
'কাহারবা'
তালে
নিবদ্ধ।
[কাহারবা তালে
নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
রাগ : হাম্বীর। [রবীন্দ্রসংগীতের ক্রমবিকাশ ও বিবর্তন। ডঃ দেবজ্যোতি দত্ত মজুমদার। (সাহিত্যলোক, ডিসেম্বর ১৯৮৭।)]
রাগ হাম্বীর। তাল: কাহারবা [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস, জানুয়ারি ১৯৯৩)। পৃষ্ঠা: ৪৬]
রাগ: হাম্বীর, কেদারা। তাল: যৎ। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত। প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১। পৃষ্ঠা: ৮৪।]
গ্রহস্বর: পা।
লয়: ঈষৎ দ্রুত।