বেণুকা
নজরুল সৃষ্ট রাগ। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জানুয়ারি কলকাতা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত 'নব রাগমালিকা' নামক গীতিনাট্যের প্রথম অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় গানে, কাজী নজরুল ইসলাম এই রাগটির সুর ব্যবহার করেছিলেন। এই গানটি হলো-
        বেণুকা ও-কে বাজায় মহুয়া বনে

বেতার জগতের ১৩ জানুয়ারি, ১৯৪০ সংখ্যার 'আমাদের কথা' বিভাগে  'নব রাগমালিকা' সম্পর্কে যে আলোচনা করা হয়, তাতে এই রাগের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছিল। এই পরিচিতিটি ছিল-

এই রাগিণী শুনিতে কতটা পাহাড়ী ও তিলক কামোদের মত শোনায়। কিন্তু ইহার বিশেষত্ব অবরোহণে তীব্র নিখাদে তারার সা ধরিয়া আন্দোলন ও স্থিতি, এরূপে ধৈবত (ধা) ও গান্ধারে (গা) স্থিতি। বুনো বাঁশীর আভাস ফুটিয়ে ওঠে বলিয়া  ইহার নাম বেণুকা।

বেণুকা রাগ সম্পর্কে নজরুলের মন্তব্য অনুসারে ধারণা করা যায়, রাগটি পাহাড়িতিলক-কামোদ রাগের সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছিল। সেনী ঘরানায় পাহাড়ি  রাগের আরোহণে গান্ধার ও নিষাদ বর্জিত হয়। এই বিচারে বেণুকাতে এই পাহাড়ি রাগের প্রভাব রয়েছে। তিলক-কামোদ এবং পাহাড়ি উভয় রাগে ণ-এর ব্যবহার নেই। প ণ ধ ম ব্যবহারের কারণে- তিলক-কামোদ এবং পাহাড়ি  থেকে এই রাগটি পৃথক রূপ পেয়েছে। মূলত স্বরবিন্যাস এই রাগের সুরশৈলী হিসেবে উল্লেখ করা যায়। এছাড়া অবরোহণে ন এর সাথে স এর আন্দোলন ও স্থিতি বেণুকাকে বিশিষ্ট রূপ দান করেছে।  


আরোহণ: স, র ম, প ণ ধ ম, প, ধ র্স। 
অবরোহণ: র্স ন প ধ ম, গ র গ স
ঠাট: খাম্বাজ
জাতি: ষাড়ব-সম্পূর্ণ।
বাদীস্বর: মধ্যম।
সমবাদী স্বর: ষড়্‌জ
অঙ্গ: পূর্বাঙ্গ প্রধান।
প্রকৃতিঃ বক্র ও চঞ্চল।
সময়: রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর
সম প্রকৃতির রাগ: পাহাড়ী (খাম্বাজ ঠাটের), তিলককামোদ।
পকড় : স, র, ধ্‌ স র, ন্‌ প্‌, প্‌ ণ্ ধ্‌ প্‌, ধ্‌ স, র গ স, স র ম গ প ণ ধ প, প ধ ম, গ র গ স।

এই রগে নিবদ্ধ নজরুলসঙ্গীত