অপেরণ
বানান বিশ্লেষণ: অ+প্+এ+র্+অ+ণ্+অ
উচ্চারণ: ɔ.pe.ron
(অ.পে.রোন্)
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত অপেরণ>
বাংলা অপেরণ
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:
অপ-
√
ঈর্ (গতি) +
অন্ (ল্যুট),
ভাববাচ্য
পদ :
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {
আলোকীয় প্রপঞ্চ |
ভৌত প্রপঞ্চ |
প্রাকৃতিক প্রপঞ্চ |
প্রপঞ্চ |
দৈহিক প্রক্রিয়া |
দৈহিক সত্তা |
সত্তা| }
অর্থ: স্থানচ্যুতি। জ্যোতির্বিজ্ঞানে
অপেরণ হলো- আলোর গতি ও পৃথিবীর কক্ষীয় গতির মিলিত
প্রতিক্রিয়ায় কোন খ-বস্তুর আপাত সরণ।
বিজ্ঞানী জেমস ব্রাডলি ১৭৩৮ খ্রিষ্টাব্দে আলোর অপেরণ ক্রিয়া আবিষ্কার করেন। তিনি সর্পমণি নক্ষত্রের
(Gamma-Draconis)
লম্বন নির্ণয় করার সময় ফলাফলে ত্রুটি
লক্ষ্য করেন। এই ত্রুটির কারণ হিসেবে স্থানচ্যুতি বা অপেরণের ধারণা দেন।
তাঁর মতে মহাশূন্যে পৃথিবী গতিশীল এবং আলোর বেগ সসীম।
এই দুইয়ের গতির সমন্বিত ফলফলে নক্ষত্রের স্থানচ্যুতি মনে হয়।
অপেরণ সূত্রে বলা হয়- যে কোন খ-বস্তুর অপেরণ পৃথিবীর গতির দিক এবং
খ-বস্তুর সঠিক দিকের অন্তবর্তী কোণের সাইন অণুপাতের সমানুপাতিক।
অর্থাৎ
A = K sinθ
এখানে
A=aberration
,
K=
স্থানচ্যুতি
ধ্রুবক।
মহাকাশে তিন ধরনের অপেরণ ঘটতে পারে। এই অপেরণ ৪টি হলো-
(Diurnal aberration):
পৃথিবী তার নিজ অক্ষের উপর আবর্তিত হয়। এর ফলে দূর নক্ষত্র পর্যবেক্ষণে আলোর
বেগের জন্য বিচ্যুতি ঘটে থাকে। এই বিচ্যুতিকে বলা হয় আহ্নিক স্থানচ্যুতি
বলে। এই স্থানচ্যুতির জন্য, পৃথিবী থেকে নক্ষগুলোকে পূর্ব
দিকে সরে যায় বলে মনে হয়।
বার্ষিক স্থানচ্যুতি (
Annual aberration):
পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় যে গতি পায়, তাকে বলা
হয় বার্ষিক গতি। এর ফলে দূর নক্ষত্র পর্যবেক্ষণে আলোর বেগের জন্য বিচ্যুতি
ঘটে থাকে।
গ্রহগত স্থানচ্যুতি
(Planetary aberration):
কোন নির্দিষ্ট সময়ে কোন গ্রহের প্রকৃত দিক এবং আপাত দিকের মধ্যবর্তী
কোণকে ঐ সময়ে উক্ত গ্রহের গ্রহগত স্থানচ্যুতি বলে।
সৌর-জাগতিক স্থানচ্যুতি
(Secular aberration):
সূর্য এবং সমগ্র সৌরজগৎ চলমান দশায় বিদ্যমান। এই সূত্রে আমাদের ছায়াপথে অবস্থিত
কোন নক্ষত্র দেখার সময় স্থানচ্যুতি ঘটে।