অন (ল্যুট)
সংস্কৃত অনট্ (ন্যুট,
পাণিনীয় সূত্র)>বাংলা অন (অনট্)।
১.এটি সংস্কৃত কৃৎ-প্রত্যয়। গ্রন্থভেদে এর লিখিত রূপের বিভিন্ন রূপ লক্ষ্য করা যায়।
যেমন‒
ক.
অনট্ (ল্যুট)। কৃৎ-প্রকরণ
২১৭, সমগ্র ব্যাকরণ কৌমুদী। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
খ. অনট্। সরল বাঙ্গালা অভিধান। সুবলচন্দ্র মিত্র।
গ. অন্। বাঙ্গালা ভাষার অভিধান। জ্ঞানেন্দ্র দাস।
ঘ. অন্ (ল্যুট)। বঙ্গীয় শব্দকোষ। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা
অভিধান।
২. ব্যাকরণ-কৌমুদীতে অনট্ হিসাবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে এর 'ট' ইৎ হয়
(লোপ পায়) এবং অন থাকে। সাধারণভাবে এই প্রত্যয়টি অনট্ নামে পরিচিত। এই গ্রন্থে একে
অন্ (ল্যুট) হিসাবে উল্লেখ করা হবে। যেমন‒
Öগম্
(গমন করা) +অন (ল্যুট)
এই প্রত্যয় যে সকল ক্রিয়ামূলের সাথে যুক্ত নতুন পদ তৈরি করে এবং এর ভিতর থেকে যে
সকল শব্দ বাংলাতে ব্যবহৃত হয়, তার তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
√অংশ্ (ভাগ করা) + অন্ (ল্যুট)=অংশন
√অঙ্ক্ (আঁকা, চিহ্নিত করা) +অন্ (ল্যুট)=অঙ্কনÖআন্দোলি (আন্দোলিত করা) +অন্ (ল্যুট) =আন্দোলন।
√কত্থ্ (বলা) +অন্ (ল্যুট)= কত্থন√কথ্ (বলা) +অন্ (ল্যুট) =কথন
√কল্কি (কল্পনা করা) +অন্ (ল্যুট)=কল্পন
√কৃ (গ্রহণ করা) +অন্ (ল্যুট)=করণ
√গুপ্ (রক্ষা করা, গোপন করা) +অন্ (ল্যুট)=গোপন।√গ্রহ্ (গ্রহণ করা)+অন (ল্যুট)=গ্রহণ
√ঘৃষ্ (ঘর্ষণ করা) +অন্ (ল্যুট) =ঘর্ষণ।√তপ্ (দাহ) +অন্ (ল্যুট)=তপন
অব- √তৄ (গমন করা) + অন্ (ল্যুট)=অবতরণ ।
√ত্রৈ (রক্ষা করা) +অন্ (ল্যুট)=ত্রাণ ।√দা (দান করা) + অন্ (ল্যুট)=দান ।
√বণ্ট্ (ভাগ করা) +অন (ল্যুট)=বণ্টন
Öবস্ (বাস করা) +অন্ (ল্যুট)=বসন।
Öভাষ্ (কথা বলা) + অন্ (ল্যুট) =ভাষণ
√যুধ্ (যুদ্ধ করা) + অন্ (ল্যুট)=যোধন
Öশাস্ (অনুশাসন) + অন্ (ল্যুট) =শাসন
সূত্র :
বঙ্গীয় শব্দকোষ (প্রথম খণ্ড)। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাহিত্য অকাদেমী। ২০০১।
বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান। মার্চ ২০০৫।
বাঙ্গালা ভাষার অভিধান (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড)। জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস। সাহিত্য সংসদ। নভেম্বর ২০০০।
শব্দবোধ অভিধান। আশুতোষ দেব। দেব সাহিত্য কুটির। মার্চ ২০০০।
সমগ্র ব্যাকরণ কৌমুদী। সাহিত্য সংসদ। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ডিসেম্বর ২০০৩।
সরল বাঙ্গালা অভিধান। সুবলচন্দ্র মিত্র।