গ্রহ
বানান বিশ্লেষণ:
গ্+র্+অ+হ্+অ
উচ্চারণ: gro.ɦo
(গ্রো.হো)।
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত
গ্রহ>বাংলা
গ্রহ।
রূপতাত্ত্বিক
বিশ্লেষণ: Öগ্রহ্
(গ্রহণ করা) +অ
(অচ্),
কর্তৃবাচ্য।
অর্থ:
একটি নক্ষত্রকে আবর্তন করে এমন
যে কোন মহাকাশীয় বস্তু (নক্ষত্র, ধূমকেতু বা উপগ্রহ ব্যতীত)।
সৌরজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত গ্রহের সংখ্যা ৯টি।
পদ:
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {|
মহাকাশীয় বস্তু
|
প্রাকৃতিক লক্ষ্যবস্তু
|
সমগ্র |
দৈহিক লক্ষ্যবস্তু
|
দৈহিক সত্তা
|
সত্তা
|}
ইংরেজি: Planet।
যুক্তশব্দ:
বিস্তারিত
মহাকাশে একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের
মহাকাশীয় বস্তু আবর্তিত হয়। কিন্তু এর সবগুলোই গ্রহ নয়। কোনো মহাকাশীয় বস্তুকে গ্রহ
হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় কয়েকটি শর্তের বিচারে।
কোনো নক্ষত্র বা নক্ষত্রের ধ্বংসাবশেষের মহাকর্ষীয় বলের প্রভাবে এদেরকে কেন্দ্র করে, প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন অন্য একটি বিপুল আকারের মহাকাশীয় বস্তু আবর্তিত হবে।
আবর্তনশীল মহাকাশীয় বস্তুটির একটি সুনির্দিষ্ট গতিপথ থাকবে এবং আবর্তনকাল পূর্ণ হওয়ার জন্য একটি সময় নির্দিষ্ট থাকবে। এক্ষেত্রে কাল পরিক্রমায় গ্রহের গতিপথ ধীরে ধীরে ছোটো বড় হলে বা আবর্তনকালের হ্রাসবৃদ্ধি হলে, তা অগ্রাহ্য করা হবে।
নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে গোলাকার রূপ ধারণ করে।
এদের ভর তাপ-নিউক্লীয় বিক্রিয়ার জন্য যথেষ্ঠ নয়। তাই এরা কখনো নক্ষত্র রূপে আত্মপ্রকাশ করে না।
২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন সৌরজগতের গ্রহগুলোর আকার ও ভরের বিচারে একটি সূত্র প্রণয়ন করেছে। এই সূত্রানুসারে বর্তমানে সৌর জগতের গ্রহের সংখ্যা ৮টি। এগুলো হলো- বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, শনি, বৃহস্পতি, ইউরেনাস এবং নেপচুন। এছাড়া সৌরজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তনশীল যে মহাকশীয় বস্তু রয়েছে, তাদের ভিতরে যেগুলকে গ্রহ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না সেগুলো হলো- ধূমকেতু, গ্রহাণুপুঞ্জ, অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র বস্তু (সেরেস, পালাস, জুনো, ভেস্তা এবং প্লুটো) ইত্যাদি।
৮টি গ্রহকে মোট দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ দুটি হলো
পৃথিবীসদৃশ-গ্রহ (terrestrial planets) : সংখ্যা ৪
সূর্য থেকে পর চারটি গ্রহকে এই নামে অভিহিত করা হয়। এই গ্রহগুলোর গাঠনিক উপাদান পাথর ও বিভিন্ন ধরনের ধাতব পদার্থ। এই গ্রহ চারটি হলো- বুধ, শুক্র, পৃথিবী, এবং মঙ্গল।
গ্যাসীয় দানব-গ্রহ (Jovian planet, gas giant) : সংখ্যা ৪
মঙ্গল গ্রহের পরে দুঋই বিশালাকার গ্রহ রয়েছে। এই গ্রহদুটির প্রধান উপাদান জমাটবদ্ধ গ্যাস। এই গ্যাসপিণ্ডের প্রধান অংশ হিসাবে আছে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, মিথেন, এ্যামিনিয়া এই ৪টি গ্রহ হলো বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন।
দূরবর্তী ক্ষুদ্রগ্রহসমূহ :
নেপচুনের কক্ষপথের পরেই রয়েছে কুইপার বলয় (Kuiper belt)। উল্লেখ্য এই বলয়টি অনেকটি গ্রহাণুপুঞ্জের বলয়ের মতো। তবে এই বলয়ে পাথরের পরিবর্তে রয়েছে অসংখ্য ছোটো ছোটো বরফের তৈরি বস্তুপুঞ্জ। তবে এই বস্তুপুঞ্জগুলোর মূল উপাদান পানি, মিথেন এবং এ্যামোনিয়ার সংমিশ্রণে সৃষ্ট বরফ। এগুলোর নাম- সেরেস, পালাস, জুনো, ভেস্তা এবং প্লুটো।