সোমলতা
সংস্কৃত: সোমবল্লী, দ্বিজপ্রিয়।
ইংরেজি:
Moon Plant, Soma Plant.
বৈজ্ঞানিক নাম :
Sarcostemma brevistigma

Asclepiadaceae
গোত্রের Sarcostemma গণের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। বাংলাদেশ ও ভারত  এই গাছ প্রচুর জন্মে।

এই গাছের পাতা নেই। গাঁইটযুক্ত বহুশাখা বিশিষ্ট। কাণ্ড মোটা কলমের মতো। গাঁইটগুলো ৩-৬ ইঞ্চি লম্বা হয়।

এর পুষ্পদণ্ড ১-১.৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। পুষ্পদণ্ড বহুশাখা বিশিষ্ট। ফুলের পাপড়ি .৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। পাপড়ি নরম ও লোমযুক্ত। ফুলের রঙ শ্বেত আভাযুক্ত ফিকে সবুজবর্ণ বা ঈষৎ শ্বেতবর্ণ। পুষ্পস্তবকের ব্যাস .৭৫ ইঞ্চি। পুস্পস্তবক ডিম্বাকৃতি ও লম্বা। বীজকোষ ৪-৫ ইঞ্চি লম্বা। এর অগ্রভাগ সরু। বীজ চেপ্টা এবং প্রায় .২৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত এই গুল্মের ফুল ও ফলের

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই সোমলতা বৈদিক সোমলতা নয়।

বৈদিক সোমলতা
এই
সোমলতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় না। বেদের বহু সূত্রে সোমলতার রস বা সোমরস বিষয় উত্থাপিত হয়েছে। ঋগ্বেদের প্রথম মণ্ডলের দ্বিতীয় সূক্তে এই লতার রস দ্বারা বায়ু এবং ইন্দ্রকে সোমরস দ্বারা আহ্বান করা হয়েছে। রমেশচন্দ্র দত্ত কর্তৃক  ঋগ্বেদের (প্রথম খণ্ডেএ) অনুবাদ-এ, এই লতা এবং এর সম্পর্কে বলা হয়েছে

সোমলতা পেষণ করলে দুগ্ধের ন্যায় শ্বেতবর্ণ এবং ঈষৎ অম্লরস নির্গত হয়, তাই মাদক অবস্থায় পরিণত করে পূর্বকালে যজ্ঞে ব্যবহৃত হত।

প্রাচীন আর্যদের মধ্যে সোমরসের ব্যবহার ছিল, অতএব সে আর্য জাতির শাখা ইরানীদের মধ্যে সোমের ব্যবহার ও উপাসনা ছিল। তারা সোমকে 'হোওমা' বলতেন ও যজ্ঞে এর অভিষব দিতেন। বোধ হয় ইরানীয় আর্যগণ সোমরস স্বাভাবিক অবস্থায়
(
unfermented) ব্যবহার করতেন এবং হিন্দু আর্যগণ সোমরস মাদক অবস্থায় (fermented) পান করতে ভাল বাসতেন। ধারণ করা হয়  আর্যজাতির এই দুই শাখার মধ্যে বিবাদের এটি অন্যতম কারণ ছিল।


সূত্র
  • ভারতীয় বনৌষধি (তৃতীয় খণ্ড)। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২০০২।