পাপিয়ো উর্সিনাস
Papio ursinus

বেবুনের একটি প্রজাতি বিশেষ। জীববিজ্ঞানীরা বেবুনকে প্রাচীন পৃথিবীর বানর হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। ১৭৯২ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রজাতির নামকরণ করেছিলেন স্কটিশ শল্য চিকিৎসক এবং লেখক
Robert Kerr । অনেক সময় এদেরকে চাকমা বেবুন বলা হয়।

এদের পাওয়া যায় আফ্রিকা মহাদেশের এ্যাঙ্গোলা, বোৎসোয়ানা, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জাম্বিয়াতে।

এদের গায়ের রঙ গাঢ় বাদামি বা ধূসর। পুরুষ-বেবুনের দৈর্ঘ্য ৫০-১১৫ সেন্টিমিটার এবং ওজন ২১-৪৫ কেজি। স্ত্রী-বেবুনের গড় দৈর্ঘ্য ৯৭ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-বেবুনের ওজন ১২-২৫ কেজি। প্রায় ১৮০ দিন গর্ভধারণের প সাধারণত স্ত্রী বেবুন একটি সন্তান প্রসব করে। এদের গড় আয়ু ২৭ বৎসর।

এরা সর্বভুক। খাদ্য তালিকায় রয়েছে শিকড়, পাতা, বাকল, ফল, ফুল। প্রাণিজ খাদ্যের মধ্যে রয়েছে কীটপতঙ্গ, পাখি, ছোটো ছোটো স্তন্যপায়ী প্রাণী।

এদের প্রধান শত্রু সিংহ, চিতা, হায়না, শিয়াল এবং পাইথন।

এরা দলবদ্ধভাবে বাস করে। এদের ছোটো ছোটো পরিবার গড়ে ওঠে একজন শক্তিশালী পুরষের নেতৃত্বে। প্রতিটি পুরুষে অধীনে থাকে প্রায় ১০ জন্ স্ত্রী। এই জাতীয় পরিবারকে বলা হয় হারেম। প্রতিটি হারেমে প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে থাকে, শাবক এবং তরুণ-তরুণী।

একটি হারেমের কোনো পুরুষ শাবক যখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন সে কিছু স্ত্রী বেবুন নিয়ে পৃথক হয়ে যায় এবং পৃথক হারেম তৈরি হয়। তবে আত্ময়ীতার সূত্রে একাধিক হারেম শান্তিতে সহ-অবস্থান করে। এর ফলে কয়েকটি হারেম মিলে তৈরি হয় একটি বড় দল। এই বড় দলগুলোকে বলা হয় বংশীয় দল
। এরূপ দূর আত্মীয়ের সূত্রে অন্যান্য বংশীয় দলগুলো একত্রে আরও বড়দল তৈরি হয়। প্রতিটি বড়দলে প্রায় ২০০ পর্যন্ত বেবুন থাকে। এরা নির্বিবাদে মিলেমিশে থাকে। কিন্তু নিজেদের হারেম, বংশীয় দলের অস্তিত্ব বজায় রাখে। অনেক সময় বড়দলগুলো মিলে একটি বিশাল বেবুন রাজ্যের সৃষ্টি করে।

অনেক সময় কোনো হারেমের তরুণ শক্তিশালী পুরুষ নিজের হারেম পর্যাপ্ত স্ত্রী না পেলে, অন্য হারেমের নেতৃত্বদানকারী পুরুষ বেবুনকে আক্রমণ করে। জয়ী হলে ও ওই হারেমের সকল স্ত্রী তার অধীনস্ত হয়ে যায়।


সূত্র: