বোট্ট
প্রাচীন ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে
রাগ বিশেষ। খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে মতঙ্গের রচিত বৃহদ্দেশী গ্রন্থে
এই রাগের প্রথম পরিচয় জানা যায়। এই গ্রন্থ মতে-
ষড়্জমধ্যম ও
পঞ্চমী জাতি থকে এই রাগটি
উৎপন্ন হয়েছিল। এই রাগে পঞ্চম চতুঃশ্রুতিক হওয়ার কারণে একে
ষড়্জগ্রাম-জাত
রাগ হিসেব উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য মধ্যমগ্রামের পঞ্চম তিন শ্রুতির হয়ে থাকে।
তাই
পঞ্চমী জাতি
মধ্যমগ্রাম
-জাত হওয়া সত্ত্বেও একে
ষড়্জগ্রাম রাগ হিসেবে
বিবেচনা করা হয়েছে। সঙ্গীতরত্নকরে এই রাগকে বলা হয়েছে শিবের প্রিয় এবং এই রাগের
ব্যবহার হয় উৎসবে।
ধারণা করা হয়, এই রাগটি ছিল তিব্বতের আঞ্চলিক গীতের সুর।
খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর ভিতরে এই গীতের সুরাঙ্গকে রাগ গ্রামরাগে হিসেবে
গ্রহণ করা হয়েছিল এবং গ্রামরাগের শ্রেণীকরণের সূত্রে একে
ষড়্জগ্রাম-জাতরাগসমূহের ভিতরে
অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
বোট্ট রাগের পরিচিত
গ্রাম:
ষড়্জ গ্রাম
রাগ প্রকৃতি:
গ্রামরাগ
রাগ-উৎস: ষড়্জগ্রাম-জাত শুদ্ধ জাতির
ষড়্জমধ্যম
এবং মধ্যমগ্রাম-জাত
পঞ্চমী
জাতি থেকে উৎপন্ন হয়েছে।
জাতি: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ
[নিষাদ ও গান্ধারের অল্প প্রয়োগ হয়। এই রাগে কাকলী নিষাদ ব্যবহৃত হয়]
অংশস্বর:
মধ্যম
গ্রহস্বর:
পঞ্চম
ন্যাস স্বর:
মধ্যম
অলঙ্কার: প্রসন্নান্ত বর্ণালঙ্কার
তাল: চচ্চৎপুট তাল
মার্গ: চিত্র, বার্তিক ও দক্ষিণ
সময়: দিবা শেষ প্রহর।
রস:
বৃহদ্দেশী মতে এই রাগ- 'শান্ত বা তজ্জাতীয় রসে এর প্রয়োগ হয় এবং উৎসবের বিনিয়োগ
হয়'। সঙ্গীতরত্নাকরে বলা হয়েছে- এই রাগ হাস্য ও শৃঙ্গার রসযুক্ত।
এর
আক্ষিপ্তিকা দেওয়া আছে।

তথ্যসূত্র:
- বৃহদ্দেশী। মতঙ্গ। সম্পাদনা রাজ্যেশ্বর মিত্র।
সংস্কৃত পুস্তক ভাণ্ডার। ১৯৯২। অধ্যায়: রাগ। পৃষ্ঠা
১৬৮
- সঙ্গীতরত্নাকর। শার্ঙ্গদেব। সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় অনূদিত।
রবীন্দরভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। কলিকাতা। ১৪০৮।