অংশস্বর
বানান বিশ্লেষণ : অ+ং+শ্+অ-স্+ব্+অ+র্+অ
উচ্চারণ:
ɔŋ.ʃoʃ.ʃɔr (অঙ্‌.শোশ্.শর্)
শব্দ-উৎস: সংস্কৃত অংশস্বর> বাংলা অংশস্বর
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:
অংশ (প্রধান) যে স্বর/ কর্মধারয় সমাস
পদ:
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { স্বর | সাঙ্গীতিক স্কেল | সঙ্গীতোপযোগী ধ্বনি| শ্রবণ যোগাযোগ | যোগাযোগ | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্তা | সত্তা|}
অর্থ: প্রাচীন ভারতীয় সঙ্গীতে ব্যবহৃত যে স্বর অংশ (প্রধান, মুখ্য)।
সমার্থক শব্দাবলি: অংশস্বর, জানস্বর, বাদীস্বর

ব্যাখ্যা: প্রাচীন ভারতের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে অংশস্বরকে রাগের অধিকর্তা হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এই স্বরের অধীনে থেকে অন্যান্য সকল স্বর দিয়ে রাগের রূপ প্রকাশ করা হতো। এই কারণে এই স্বরের ব্যবহার বেশি ছিল।

নাট্যশাস্ত্রের অষ্টাবিংশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে- এই স্বরের উপর রাগ নির্ভর করে।  গ্রহ, অপন্যাস, বিন্যাস, সংন্যাস ও ন্যাস -এর সাথে সম্বন্ধযুক্ত থাকে। এটি গানের সর্বত্র ছড়ানো থাকে। দুই গ্রামে অংশস্বরের সংখ্যা ৬৩টি। [২৮।৭৬-৭৯]

বাদী ও সংবাদী স্বর হয় ৯ বা ১৩ শ্রুতির ব্যবধানে থাকবে। গ্রামভেদে বাদী-সংবাদীর বিধি দুই রকম ছিল। যেমন-

পরে জাতিগানের দশলক্ষণের ভিতরে অংশস্বরকে ধরা হয়েছে। এই স্বরটি আধুনিক রাগশাস্ত্রে অনেকে বাদীস্বর বলে থাকেন মূলত রাগের মুখ্য স্বর হিসেবে একে বাদীস্বরের সাথে তুলনা করা যায়, বটে কিন্তু ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই দুট স্বর এক নয়। প্রাচীন গ্রামরাগ বা জাতিগানে অংশ স্বর রাগভেদে একাধিক হতে পারে। কিন্তু আধুনিক বাদীস্বর একটি রাগে এটি স্বরই হয়ে থাকে। ১৮টি জাতিগানের অংশস্বর ছিল ৬৩টি। উল্লিখিত গ্রন্থানুসারে জাতিগানগুলোর অংশস্বরের তালিকা দেওয়া হলো-

জাতি গান অংশ স্বর
মধ্যমোদীচাবা পঞ্চম
নন্দয়ন্তী পঞ্চম
গান্ধারপঞ্চমী পঞ্চম
ধৈবতী ধৈবত ও ঋষভ
গান্ধারোদীচ্যবা ষড়্‌জ ও মধ্যম
পঞ্চমী  ঋষভ ও পঞ্চম
আর্যভী ঋষভ, ধৈবত ও নিষাদ
নৈষাদী ঋষভ, গান্ধার ও নিষাদ
কৈশিকী ষড়্‌জ, গান্ধার ও পঞ্চম
ষড়্‌জোদীচ্যবতী ষড়্‌জ, মধ্যম, ধৈবত ও নিষাদ
কর্মারবী ঋষভ, ধৈবত, নিষাদ ও পঞ্চম
আন্ধ্রী ঋষভ, গান্ধার, পঞ্চম এবং নিষাদ
মধ্যমা ষড়্‌জ, ঋষভ, মধ্যম, পঞ্চম এবং ধৈবত
ষাড়্‌জী ষড়্‌জ গান্ধার, মধ্যম, পঞ্চম এবং  ধৈবত
গান্ধারী ষড়্‌জ, গান্ধার, মধ্যম, পঞ্চম এবং নিষাদ
রক্তগান্ধারী ষড়্‌জ, গান্ধার, মধ্যম, পঞ্চম এবং নিষাদ
কৈশিকী ষড়্‌জ, গান্ধার, মধ্যম, পঞ্চম, ধৈবত এবং নিষাদ
ষড়্‌জমধ্যমা সাতটি স্বরই অংশস্বর