সাত্যকি
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
পৌরাণিক সত্তা
|
কাল্পনিকসত্তা
|
কল্পনা
|
সৃজনশীলতা
|
দক্ষতা
|
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
|
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত-সত্তা
|
সত্তা
|}
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে−
কৃষ্ণের রথের
সারথি ছিলেন।
এঁর অপর নাম যুযুধান।
তিনি ছিলেন
শিনি'র পৌত্র
এবং সত্যকের
পুত্র। সত্যকের পুত্র অর্থে তিনি মহাভারতে সাত্যকি
নামে অভিহিত হয়েছেন। তিনি
অর্জুনের
কাছে অস্ত্রশিক্ষা করেছিলেন।
উগ্রস্বভাবের এবং নিষ্ঠুর প্রকৃতির বলে ইনি কুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
রাজ্য উদ্ধারের বিষয়ে পাণ্ডবদের সাথে যাদবদের পরামর্শকালে
বলরাম,
যুধিষ্ঠিরকে অজ্ঞ
ও বুদ্ধিহীন এবং
শকুনির
প্রশংসা করেন। এই কারণে তিনি তীব্র ভাষায়
বলরামকে তিরস্কার করেন।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকে তিনি প্রবলভাবে সমর্থন করেছিলেন।
শান্তি রক্ষার জন্য
কৃষ্ণ
শেষবারের মত চেষ্টা করার জন্য
দুর্যোধনের সভায়
যান। এই সময়
দুর্যোধন কৃষ্ণকে বন্দী করার উদ্যোগ নেন। সাত্যকি তা বুঝতে পেরে সভাত্যাগ করে
কৃতবর্মার কাছে আসেন।
তিনি
কৃতবর্মাকে সৈন্য সমাবেশ করে সভার দ্বার রক্ষার ব্যবস্থা করেন এবং সভায় ফিরে
কৃষ্ণ,
বিদুর
ও
ধৃতরাষ্ট্রকে
দুর্যোধনের
অভিসন্ধি প্রকাশ করে দেন।
কুরুক্ষেত্রের
যুদ্ধে তিনি পাণ্ডবদের একজন সেনাপতি হিসাবে যোগদান করেন।
কুরুক্ষেত্রের
যুদ্ধে
ভূরিশ্রবা
সত্যাকির দশ পুত্রকে হত্যা করেছিলেন।
এই কারণে তিনি
ভূরিশ্রবার
প্রতি বিশেষভাবে ক্ষিপ্ত হন।
যুদ্ধের প্রথম দিনে তিনি
অর্জুন-এর
পৃষ্ঠ রক্ষক ছিলেন।
যুদ্ধের চতুর্দশ দিনে
অর্জুন
জয়দ্রথের
সন্ধানে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করলে, তিনি
যুধিষ্ঠিরের
রক্ষায় নিয়োজিত হন।
অর্জুন
জয়দ্রথের
সন্ধান পেতে ব্যর্থ হলে শ্রীকৃষ্ণ শঙ্খধ্বনি করেন।
এতে
অর্জুনের
বিপদ বুঝতে পেরে, অর্জুনকে রক্ষার জন্য
যুধিষ্ঠির
সাত্যকিকে প্রেরণ
করেন।
তিনি
দ্রোণাচার্যের
সারথি,
রাজা জলসন্ধ ও সুদর্শন[৩]-কে হত্যা করে অর্জুনের কাছে অগ্রসর হন।
সাত্যকির দেরি দেখে
যুধিষ্ঠির
ভীমকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠান।
ভীম কৌরবদের বহু সৈন্য হত্যা করলেও কর্ণের কাছে পরাজিত হন।
এই সময় অর্জুন
কর্ণকে
আক্রমণ করেন।
ভীম
সাত্যকির রথে উঠে
অর্জুনের
সাথে মিলিত হওয়ার
জন্য রওনা হন।
পথে
ভূরিশ্রবা
সাত্যকিকে বাধা দেন এবং
তিনি
সত্যাকিকে
পরাস্ত করে ভূপাতিত করেন। এই সময়
ভূরিশ্রবার
তাঁকে পদাঘাত করে
মুণ্ডচ্ছেদ করতে উদ্যত হন।
এই সময়
অর্জুন
যুদ্ধের নিয়ম ভঙ্গ করে দূর থেকে তীক্ষ্ণ বাণ দ্বারা
ভূরিশ্রবার
ডান
হাত ছেদন করেন।
ভূরিশ্রবা
অর্জুন-কে তিরস্কার করে বাম হাতে শর বিছিয়ে প্রয়োপবেশনে বসেন।
এই সময় সাত্যকি চেতনা লাভ করে, সকলের নিষেধ সত্ত্বেও যোগমগ্ন
ভূরিশ্রবার শিরশ্ছেদ
করেন।
যুদ্ধের
পঞ্চদশদিনে
ধৃষ্টদ্যুম্ন
দ্রোণাচার্যের শিরশ্ছেদ করে আস্ফালন করতে থাকলে তিনি তাঁকে
তিরস্কার করেন।
পরে উভয়ের মধ্যে বচসা তীব্রতর হয়ে উঠলে উভয় উভয়কে হত্যা করার জন্য অগ্রসর হন।
কিন্তু
কৃষ্ণের
ইঙ্গিতে
ভীম,
সহদেব
এঁদেরকে শান্ত করেন।
যুদ্ধের ষোড়শ দিনে তিনি বিন্দ ও অনুবিন্দকে হত্যা করেন।
কুরুক্ষেত্রের
যুদ্ধের শেষে ঘুমন্ত পাণ্ডবদের (পঞ্চপাণ্ডব ব্যতীত) হত্যা করার জন্য
কৃতবর্মাকে তিরস্কার করেন।
কৃতবর্মারও
ভূরিশ্রবাকে হত্যা করার জন্য সাত্যকিকে তিরস্কার করেন।
এই সময় সাত্যকি ক্ষিপ্ত হয়ে খড়গ দ্বারা
কৃতবর্মাকে হত্যা করেন।
এরপর উন্মত্ত অবস্থায় একে একে তিনি বহু যাদবকে হত্যা করতে থাকেন।
পরে অন্যান্য যাদবরা মিলে তাঁকে হত্যা করে।