ভারতবর্ষে রেকর্ড প্রচলনের ইতিহাস
ইউরোপে একই ধ্বনি বার বার
বাদনের যন্ত্রের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন, ইংরেজ বিজ্ঞানী থমাস ইয়ং।
এই যন্ত্রটি এখনো প্রচলিত সুরেলা কাঁটা (tuning
forks) নামে।
১৮০৭ খ্রিষ্টাব্দে ইয়ং এই যন্ত্রটি প্রথম আবিষ্কার
করেছিলেন ধ্বনির কম্পাঙ্ক বিষয়ক গবেষণার জন্য। ১৮৫৩ থাকে
১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দের উপযোগী যান্ত্রিক কৌশল প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন ফরাসি বিজ্ঞানী
Édouard-Léon Scott de Martinvillee।
এর নাম ছিল
ফোনোটোগ্রাফ। এই যন্ত্রে শব্দের কম্পাঙ্ক কাগজের উপর অঙ্কিত হতো। কিন্তু বাজিয়ে
শোনানোর ব্যবস্থা ছিল না। ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে শব্দধারণ ও বাদন কৌশল আবিষ্কার করেন
ফরাসি ফরাসি কবি চার্লস ক্রোস (Charles
Cros) । তিনি মুদ্রণশিল্পে ব্যবহৃত আলোকচিত্র খোদিত প্রক্রিয়া অনুসরণে এই
যন্ত্রটি আবিষ্কার করেছিলেন ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে।
কিন্তু যন্ত্রের নানা ত্রুটি থাকার কারণে কালক্রমে হারিয়ে গিয়েছিল। এরই উন্নত রূপ
দান করেছিলেন
এডিসন। নাম দিয়েছিলেন
ফোনোগ্রাফ।
১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারিতে এই
আবিষ্কারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
পেটেন্ড লাভ করেন। তিনি টিনের পাতলা
পাতের উপর শব্দ ধারণ করে, তা বাজানোর পদ্ধতির উন্নয়ন ঘটিয়েছিলেন।
১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ওয়াশিংটন ডিসিতে ফনোগ্রাফ নিয়ে টেলিফোন যন্ত্রের
আবিষ্কারক গ্রাহাম বেল এবং তাঁর দুই সহযোগী মিলে গবেষণা শুরু করেন।
এঁরা পাতলা টিনের পাতে শব্দ ধারণের পরিবরতে মোমের প্রলেপ লাগানো কাগজের পাতে
শব্দধারণ করার প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেন। নতুন এই যন্ত্রের বাজারজাত করার জন্য এঁরা
প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ভোল্টা গ্রামোফোন কোম্পানি। আর এই বছরেই
স্যামুয়েল হ্যারাডন নামক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক, একটি নিম্নমানের গ্রামোফোন যন্ত্র সাথে করে
কলকাতা আসেন। তিনি কলকাতা টাউন হলে 'মহামেডান লিটারেরি সোসাইটির বার্ষিক সম্মেলনে
এই যন্ত্রটি প্রদর্শন করেন। এরপর ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের
অধ্যাপক ফাদার লাফোঁ একটি ফনোগ্রাফ কলকাতায় আনেন। অধ্যাপক ফাদার লাফোঁর প্রিয় শিষ্য
জগদীশচন্দ্র বসু এই যন্ত্র নিয়ে গবেষণা করেন।
১৮৮৭ এমিল বার্লিনার (Emile
Berliner)
নতুন ধরনের একটি যন্ত্র হাজির করলেন। তিনি এই যন্ত্রটির নাম দেন
গ্রামোফোন।
তিনি সিলিণ্ডারের পরিবর্তে সমতল ও গোলাকার ডিস্ক ব্যবহার করেন। ডিস্কে স্পাইরাল
ট্রাকের প্রবর্তন করেন তিনি । এছাড়া একটি মাস্টার ডিস্ক থেকে একাধিক কপি করার
পদ্ধতিও তিনি প্রবর্তন করেন। এর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল চাকতি বা ডিস্কের শব্দধারণের
যুগ। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দের
সিডি আবিষ্কারের
পূরবকাল পর্ন্ত, গ্রামোফোন কোম্পানির এই প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সচল ছিল।
এরপর রেকর্ড ব্যবসায়ে ইউরোপ আমেরিকার বহু ব্যবসায়ী অর্থ লগ্নি শুরু করে।
প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়ের সূত্রে ধীরে ধীরে রেকর্ড শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটে।
১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দের দিকে
প্রেসিডেন্সি কলেজের পরীক্ষাগারে জন্য একটি ফনোগ্রাফ যন্ত্র আনার ব্যবস্থা করা
হয়। গগনেন্দ্রনাথ
ঠাকুরের বাড়িতে
খামখেয়ালী সভার
প্রথম অধিবেশন হয় ২৪ মাঘ ১৩০৩ বঙ্গাব্দে [শুক্রবার ৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দ]।
এই সভায় ফনোগ্রাফ যন্ত্রে গান ও কবিতা শ্রবণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এর অর্থ হলো
১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে ঠাকুর বাড়িতে ফনোগ্রাফের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। এইভাবে
বঙ্গদেশের মানুষ ফনোগ্রাফ এবং গ্রামোফোন নামক যন্ত্রের সাথে পরিচিত হয়ে
উঠেছিল।
১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে রেকর্ড বিশেষজ্ঞ ফ্রেডরিক উইলিয়াম গেইসবার্গ লণ্ডনে অবস্থানরত
কিছু ভারতীয়দের দিয়ে ৪৪টি শ্রবণ নমুনা রেকর্ডে ধারণ করেছিলেন। এর ভিতরে ছিল হিন্দি,
আরবি, ফার্সি, উর্দু, পাঞ্জাবি ভাষার গান ও আবৃত্তি। গানের তালিকায় ছিল রামায়ণ,
হোলি। আবৃত্তি নমুনায় ছিল হাফিজ ও মির্জা গালিবের কবিতা, গুরু নানকের দোঁহা,
কোরান শরিফ থেকে তেলাওয়াত। শিল্পীদের নাম তালিকায় পাওয়া যায় ক্যাপ্টেন ভোলানাথ,
হরনাম দাস এবং আহমেদ। উল্লেখ্য এই রেকর্ডগুলোর এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায় নাই।
তবে
গ্রামোফোন কোম্পানির রেকর্ড তালিকায় এসব রেকর্ডের নাম পাওয়া যায়।
১৯০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে হেমেন্দ্রমোহন বসু একটি 'এডিসন
ফোনোগ্রাফ' কিনেছিলেন। এরপর ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু
বন্ধু এবং সে কালের বিখ্যাত কিছু শিল্পীর গান মোমের সিলিন্ডার রেকর্ডবন্দী করা শুরু
করেছিলেন। হেমেন্দ্রমোহনের সেই সব বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন তাঁর মামা জগদীশচন্দ্র বসু,
প্রফুল্লচন্দ্র রায়, সুরেন্দ্রনাথ মৈত্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
প্রমুখ। সাউন্ড রেকর্ডিং-এর প্রতি হেমেন্দ্রমোহনের আগ্রহ তাঁকে প্রভাবিত করেছিল
ফোনোগ্রাফ ও সিলিন্ডার রেকর্ডের ব্যবসায় আসতে।
ইতিমধ্যে গ্রামোফোন কোম্পানি
রেকর্ড ব্যবসার উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, রাশিয়া-সহ কিছু দেশে
কণ্ঠসঙ্গীত ও যন্ত্রসঙ্গীত রেকর্ডে ধারণ ও বিক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছিল। এরই
ধারাবহিকতায় ভারতীয় গানের রেকর্ড বাজারজাত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে তারা।
১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে
গ্রামোফোন
কোম্পানি রেকর্ডের বাজার অনুসন্ধানে জন ওয়াটসন হডকে ভারতে পাঠায়। ওয়াটসন কলকাতা,
মাদ্রাজ, বোম্বে ও দিল্লি ভ্রমণ করেন এবং রেকর্ড বাণিজ্যের বিপুল সম্ভাবনা দেখতে
পান। ভারতীয়
ভাষায় গান এবং আবৃত্তি প্রকাশের
ভারতে রেকর্ড ব্যবস্থা চালু করার জন্য কোম্পানির পক্ষে কলকাতায় একটি অফিস খোলেন।
এই সূত্রে
ভারতীয় সঙ্গীতের রেকর্ডের জন্য উপযুক্ত লোক পাঠানোর সুপারিশ করেন। এই অনুরোধে
কোম্পানি ভারতীয় সঙ্গীত ও আবৃত্তির রেকর্ডের অভিজ্ঞাতা আছে, এই বিবেচনায়
গেইসবার্গের নেতৃত্বে একটি রেকর্ড কর্মীকে পাঠান। ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ অক্টোবর
গেইসবার্গ তাঁর দলবল নিয়ে কলকাতায় পৌঁছান।
গেইসবার্গ প্রথমে রেকর্ডিং ব্যবস্থা স্থাপন করার পর
W.S. Burk
এর একটি ইংরেজি
গান রেকর্ড করেন। এরপর ৮ই নভেম্বর তিনি দুটি গান রেকর্ড করেন। প্রথম গান ছিল কীর্তন
'আমি কি সজনী কুসুমেরি'। গানটি গেয়েছিলেন নর্তকী মিস্ শশীমুখী। অপর একটি গান
গেয়েছিলেন মিস্ ফণীবালা। এঁর গাওয়া গানটির হদিস পাওয়া যায় নি। এই সূত্রে রেকর্ডের
বাংলা গানের প্রথম শিল্পী হিসেবে মিস্ শশীমুখী এবং মিস্ ফণীবালা স্মরণীয়া হয়ে
রয়েছেন। এই গানে
গেইসবার্গ সন্তুষ্ট হতে পারেন নি। এরপর তিনি
আরও ভালো কণ্ঠের শিল্পীদের খুঁজতে থাকেন।
এর দুই দিন পর, তৎকালিন ক্ল্যাসিকাল থিয়েটারের সহায়তায় গেইসবার্গ
আরও কিছু শিল্পীর গান রেকর্ড করেন। এঁদের গানেও গেইসবার্গ সন্তুষ্ট হতে পারেন নি।
এরপর তিনি ১১ই নভেম্বর গহরজানের গান রেকর্ড করেন। এ ছাড়া এই দিনে
রেকর্ড করেছিলেন শৈল বাঈ। তবে গহরজানের গান শুনে গেইসবার্গ মুগ্ধ হন। তিনি গেয়েছিলেন
দাদরা অঙ্গের একটি হিন্দি গান। গানটির শিরোনাম হিসেবে উল্লেখ ছিল
'Mahomedan
Song'। তাঁর
কণ্ঠে রেকর্ডকৃত প্রথম বাংলা গান ছিল 'ভালবাসিবে বলে ভালোবাসিনে।' এরপর তিনি
গহরজানের কণ্ঠে আরও কয়েকটি গানের রেকর্ড করেন। এরপর কয়েকদিনে তিনি রেকর্ড করেন আরও
কিছু শিল্পীর গান রেকর্ড করেন। এই শিল্পীরা ছিলেন হরিমতি. সুশীলা, বিনোদিনী, কিরণ,
রাণী প্রমুখ। এছাড়া তিনি রেকর্ড করেছিলেন ক্ল্যাসিক থিয়েটার ও করিনথিয়ান থিয়েটার
বৃন্দবাদন। ভারতে গ্রামোফোন কোম্পানি লিমিটেড তাদের রেকর্ড বাজারজাত করার
আগে, তিন ধরনের রেকর্ড প্রকাশ করতো তিনটি পরিচিতিতে। এগুলো ছিল-
-
Gramophone record
। ৭ ইঞ্চি
-
Gramophone Concert Record
।
১০ ইঞ্চি
-
Gramophone Concert Record
। ১২ ইঞ্চি
এই তিন ধরনের কালোবর্ণের
রেকর্ড ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তৈরি হতো জার্মানীর
হ্যানোভার থেকে।
এসব রেকর্ডে এক পিঠে গান থাকতো। অপর পিঠ থাকতো ফাঁকা। ১৯০৭
খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সকল রেকর্ডে থাকতো 'রেকর্ডি পরীর' ছোটো
মনোগ্রাম। এসকল রেকর্ড বাজারজাত করতো- গ্রামোফোন এন্ড টাইপরাইটার লিমিটেড। কিন্তু
১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে এই রেকর্ড প্রকাশের বিষয়টি চলে যায় গ্রামোফোন রেকর্ড
কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে। সে সময় এ সকল রেকর্ডে লেখা থাকতো 'মেড ইন জার্মানি'।
১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে
বেকা কোম্পানির পরিচালক Ernest lowe
-এর নেতৃত্বে
ভারতে আসেন ভারতীয় শিল্পীদের গানের রেকর্ড করার জন্য। এবারের অভিযাত্রায় এঁরা
রেকর্ড করেন বোম্বাই, লক্ষ্ণৌ, বেনারস এবং কলকাতায়। এরপর এইও দলটি রেঙ্গুন,
ব্যাঙ্কক ও সিঙ্গাপুরে রেকর্ড করার জন্য চলে যান। এই সময়ে রেকর্ডগুলো বাজারজাত
করেছিল 'দ্য টকিং মেশিন এবং ইন্ডিয়ান রেকর্ড কোম্পানি
এই সময়ে এদের কেন্দ্রীয় অফিস ছিল বোম্বেতে। আর শাখা অফিস
ছিল কলকাতা, দিল্লী, মাদ্রাজ এবং রেঙ্গুন।
১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে
গ্রামোফোন
কোম্পানি কলকাতার শিয়ালদহের ১৩৯ বেলেঘাটা সড়কে রেকর্ড উৎপাদনের জন্য
কারখানা স্থাপিত হয়। এসকল রেকর্ডে তৈরির স্থানের নাম হিসেবে থাকতো- 'মেড ইন
ক্যালকাটা'। কলকাতা থেকে রেকর্ড প্রকাশের ফলে রেকর্ডের মূল্যও কমে যায়। ফলে
ভারতে রেকর্ড ব্যবসার একটি সুবর্ণ ক্ষেত্র তৈরি হয় এবং ভারতে সিলিণ্ডার রেকর্ডের
ব্যবসা দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে সিলিণ্ডার গ্রামোফোন রেকর্ডে
উৎপাদনের ধারায় ব্যবসায় টিকে থাকতে না পেরে প্রথম বিলুপ্ত ঘটে
প্যাথেফোন
রেকোর্ড কোম্পানির।
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে
Gramophone record
(৭ ইঞ্চি),
Gramophone Concert Record
(১০ ইঞ্চি)
এবং Gramophone Concert Record
(১২ ইঞ্চি)
রেকর্ড কলকাতার কারখানা থেকে উৎপাদিত শুরু করে। এই সময় থেকে রেকর্ড লেবেলে 'পরী' বা
কুকুরের ছবি মুদ্রিত হতো।
১৯১২-১৩ খ্রিষ্টাব্দ এক পাশে মুদ্রিত রেকর্ডগুলো দ্বিপার্শিক রেকর্ড হিসেবে
পুনঃমূদ্রিত হতো। এই সময় জনপ্রিয় রেকর্ডগুলোর রঙ ছিল বেগুনি। এসকল রেকর্ডের
দাম ছিল ৩ রুপি ১২ আনা। যেখানে সাধারণ কালো রঙের রেকর্ডের দাম ছিল ৩ রুপি। পরে বহু
জনপ্রিয় গান বেগুনি রেকর্ডে মুদ্রিত হয়েছিল।
এত সব প্রতিযোগীদের ভিতরে
গ্রামোফোন
কোম্পানি ভারতে
তার জায়গা ধরে রাখতে সক্ষম হয়।
১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে
গ্রামোফোন
রেকর্ড কোম্পানি তাদের রেকর্ডকে 'হিজ মাস্টার্স ভয়েস'
লেবেলে বাজারজাত করা শুরু করে।
১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে কলাম্বিয়া কোম্পানির মালিকানা লাভ
করেছিল কলকাতার স্থানীয় বাঙালি মালিক। এর পরিচালনায় ছিলেন নৃপন মজুমদার। তাঁর উদ্যোগে
ভারতীয় কলাম্বিয়া রেকর্ড কোম্পানি হিস মাস্টার ভয়েস -এর প্রবল
প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠে। এই কোম্পানির উদ্যোগে ১৯৩৭-৩৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে 'রিগ্যাল
রেকর্ড' লেবেলে কিছুদিন রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এসব কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে
কলম্বিয়া রেকর্ডের বাজার অনেকটাই দখল করে নিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত
হিস মাস্টার ভয়েস -এর কৌশলে
এই কোম্পানি তাদের অংশভাগী হয়ে গিয়েছিল।
গ্রামোফোন রেকর্ডের যাত্রা অনুসরণ করে,
দীর্ঘকাল ধরে ভারতবর্ষে তাদের বিশাল বাজার ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিল। একবিংশ
শতাব্দীতে কম্পিউটার, সিডি ও ডিভিডি প্রযুক্তির কারণে সারা পৃথিবীতে রেকর্ড শিল্পে
যে ধ্বস নেমেছে, তারই প্রভাবে অন্যান্য রেকর্ড কোম্পানির মতো গ্রামোফোন রেকর্ড এখন
বিলুপ্তির পথে।
এইচএমভি রেকর্ড লেবেল
-
এন সিরিজ
১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট মাসে এইচএমভির এন সিরিজের রেকর্ড
প্রথম আত্মপ্রকাশ করে। এর নম্বর ছিল- এন ৩৬৩৭। কিন্তু এই নম্বর প্রদানে
কোনো ধারাবাহিক রীতি অনুসৃত হয় নি। রেকর্ডে লেবেলে ধারাবাহিক সংখ্যা নির্ধরাণ
করা শুরু হয়েছিল ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের মে মাস থেকে। এই ধারার প্রথম নম্বর ছিল এন
৪১৯৯। এই রেকর্ডের রঙ ছিল সবুজ। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্ন্ত এই সবুজ রঙের
রেকর্ডও বাজারজাত করা হয়েছিল। এর পর বাদামী-ধূসর (plum color) বর্ণের রেকর্ড
বাজার জাত করা হয়। এই সিরিজটি ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের শেষার্ধ পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।
রেকর্ড লেবেল:
এন-৯৭৮১
সূত্র:
- Country Music
Records: A Discography, 1921-1942/ Tony Russell/Oxford 2004
-
Michael S. Kinnear.The Record
News January 1991