বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত
শিরোনাম: আমি হেথায় থাকি
শুধু গাইতে তোমার গানপাঠ
ও পাঠভেদ:
- গীতবিতান (বিশ্বভারতী,
কার্তিক ১৪১২)-এর
পাঠ: পূজা: ২৩
আমি হেথায় থাকি শুধু গাইতে তোমার গান,
দিয়ো তোমার জগৎ -সভায় এইটুকু মোর স্থান॥
আমি তোমার ভুবন
-মাঝে লাগি নি, নাথ
, কোনো কাজে—
শুধু কেবল সুরে বাজে অকাজের এই প্রাণ
নিশায় নীরব দেবালয়ে তোমার আরাধন,
তখন মোরে আদেশ কোরো গাইতে হে রাজন।
ভোরে যখন আকাশ জুড়ে বাজবে বীণা সোনার সুরে
আমি যেন না রই দূরে
, এই দিয়ো মোর মান
॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
RBVBMS 478
[পাণ্ডুলিপি]
- ভাবসন্ধান: ঈশ্বরের গাথা গাইবার জন্য কবি ‘তাঁর’ই
জগতের সভাপ্রান্তে খুব সামান্য একটু জায়গা পাবার জন্য মিনতিপূর্ণ আবেদন
জানাচ্ছেন। এ পৃথিবীর জাগতিক কোনো কাজে তিনি যুক্ত হতে পারেননি। কবির হৃদয়
প্রয়োজনের বাইরের গীতধ্বনিতে গুঞ্জরিত হতে জানে কেবল। এই গায়ক গভীর নিশীথে
স্রষ্টার মন্দিরে উপাসনাকালে গান গাইবার আদেশ প্রার্থনা করেন। ঊষার স্বর্ণকিরণ
যখন ঈশ্বরের স্বর্ণবীণার মতন সুরে ঝংকৃত হয়, সেই মুহূর্তে এই সাধক উপস্থিত
থাকবার সম্মানটুকু চান। বিনাকাজে শুধু গান গেয়ে বেড়াবার ভার পাবার জন্য কবির
একান্ত আকর্ষণ। বোঝা যায় গান-গাওয়াটা এই সাধকের উপাসনার অঙ্গ।
-
তথ্যানুসন্ধান
-
ক. রচনাকাল ও স্থান: পাণ্ডুলিপিতে গানটির রচনাকাল ও স্থানের উল্লেখ আছে,— '১৬ ভাদ্র।'
উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ গোরা উপন্যাস রচনা শেষ করেন ১৩১৬ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসের শেষার্ধে। ৭ ভাদ্র (সোমবার ২৩ আগষ্ট) তারিখে কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতন আসেন। অন্য কোনো নতুন রচনায় তিনি তখনও হাত দেন নি। এই সময়ে তিনি সম্পূর্ণ গান রচনা করে সময় কাটান। ১০ই ভাদ্র থেকে ১৮ই ভাদ্রের ভিতরে তিনি মোট ১৮টি গান লিখেছিলেন। এর ভিতরে ১৬ই ভাদ্র তারিখে তিনি এই গানটি-সহ মোট পাঁচটি গান রচনা করেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল রবীন্দ্রনাথের ৪৮ বৎসর ৪ মাস।
[রবীন্দ্রনাথের
৪৮ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সের রচিত গানের তালিকা]
-
খ.
প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি
- গ্রন্থ:
-
কাব্যগ্রন্থ
-
অষ্টম খণ্ড
[ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ]। গীতাঞ্জলি ২৫। পৃষ্ঠা:
৩০
[নমুনা]
-
গান
-
দ্বিতীয় সংস্করণ [ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ ১৩১৬ বঙ্গাব্দ)। পৃষ্ঠা: ৪০৯।
[নমুনা]
-
গীতবিতান
-
গীতলিপি দ্বিতীয় ভাগ (৬ আষাঢ়
, ১৩১৭
বঙ্গাব্দ, ২০
জুন ১৯১০
খ্রিষ্টাব্দ) ।
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কৃত স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল
।
-
গীতাঞ্জলি
- প্রথম সংস্করণ, গান
সংখ্যা ৩২ ( ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউজ। ২০ ভাদ্র ১৩১৭ বঙ্গাব্দ, ৫ সেপ্টেম্বর ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ)। পৃষ্ঠা ৩৮।
[নমুনা]
-
রবীন্দ্ররচনাবলী একাদশ খণ্ড (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৯৩)। গান ৩১পৃষ্ঠা: ২৭-২৮
-
ধর্ম্ম সঙ্গীত
[ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস ১৩২১ বঙ্গাব্দ। পৃষ্ঠা:
১ ]
[নমুনা]
-
সঙ্গীত-গীতাঞ্জলি (১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দ)।
ভীমরাও শাস্ত্রীকৃত স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল।
-
স্বরবিতান অষ্টাত্রিংশ
(৩৮) খণ্ডের
(বৈশাখ
১৪১৫ )
২৯ সংখ্যক গান ।
পৃষ্ঠা: ৮৩-৮৪ ।
-
রবীন্দ্রনাথ-কৃত অনুবাদ
ইংরেজি গীতাঞ্জলির পাঠ :
I
am here to sing thee songs. In this hall of thine I have a corner seat.
In thy world I have no work to do; my useless life can only break out in
tunes without a purpose.
When the hour strikes for thy silent worship at the dark temple of
midnight, command me, my master, to stand before thee to sing.
When in the morning air the golden harp is tuned, honour me, commanding
my presence.
সূত্র:
Gitanjali,
Rabindranath Tagore, Visva-Bharati and UBSPD, Thirteenth Reprint
2008, Page 30-31.
গীতাঞ্জলি (নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সম্পাদনা : আবদার
রশীদ। বাংলা একাডেমী ঢাকা। (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩ সংস্করণ)।
প্রকাশের
কালানুক্রম:
১৩১৬ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'গান' নামক গ্রন্থের 'নূতন গান' অংশে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ১৩১৭ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গীতাঞ্জলির ৩২ সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এই বছরেই সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কৃত স্বরলিপিসহ 'গীতলেখা' গ্রন্থে গানটি স্থান পেয়েছিল।
১৩২১ বঙ্গাব্দে ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস থেকে প্রকাশিত 'ধর্ম্ম সঙ্গীত' গ্রন্থে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ১৩২৩ বঙ্গাব্দে ইন্ডিয়ান প্রেস থেকে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ৮ম খণ্ডে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দে গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের প্রথম সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে গানটি গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৩৮০ বঙ্গাব্দে গীতবিতানের অখণ্ড সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলি: