আশা ভৈরবী
নজরুলসৃষ্ট রাগ। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের দিকে জগৎ ঘটক 'উদাসী 
ভৈরব' নামে একটি নাটিকা রচনা করেন। এই নাটিকাটি ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই নভেম্বর 
সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে কলকাতা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয়। এই নাটিকার ছয়টি গান 
রচনা এবং তাতে সুরারোপ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। এই সম্পর্কে জগৎ ঘটকের বর্ণনা থেকে 
জানা যায়, 'সুরেশদা কবিকে ভৈরব রাগের প্রচলিত রূপ এড়িয়ে নতুন সুরের রূপ সৃষ্টি করতে 
অনুরোধ করেন। কবি সেই নিয়ে মেতে উঠলেন, এমনকি ঘুমের মধ্যেও রাগ-রাগিণীর স্বপ্ন 
দেখতে লাগলেন, নতুন ভৈরব রাগের উদ্ভাবন করলেন অরুণ ভৈরব, উদাসী ভৈরব, রুদ্র ভৈরব 
ইত্যাদি।' 
উল্লিখিত সূত্রে প্রাপ্ত ছয়টি রাগের ভিতরে এই রাগটিকে গণ্য করা হয়।
এই রাগের রস করুণ। 'আশা ভৈরবী'  নামে একটি শাস্ত্রীয় রাগ রয়েছে। সুরেশ 
চক্রবর্তী মহাশয়ের 'রাগ রূপায়ণ' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন -"আশা রাত্রি গেয় এবং উত্তর 
প্রদেশের আঞ্চলিক সঙ্গীত থেকে গৃহীত। এর সঙ্গে ভৈরবীর মিশ্রণের মধ্যে সঙ্গতি নেই।"
হিন্দুস্থানী সংগীতের '
আশা
বিলাবল
ঠাটের অন্তর্গত রাগ। এর জাতি ঔড়ব-সম্পূর্ণ। 
এই রাগের আরোহণে গান্ধার ও নিষাদ বর্জিত স্বর। রাগটি রাত্রি দ্বিতীয় প্রহরে গেয়। এর 
বাদী মধ্যম এবং সমবাদী ষড়্জ। আরোহণ স র ম প ধ র্স। আরোহণ র্স ন ধ প ম গ র স। নজরুল 
ইসলাম-এর রচিত 'আশ-ভৈরবী' রাগটির ভৈরবী ঠাটের। এর প্রকৃতি গম্ভীর এবং রস করুণ।  তবে তিনি 
এই রাগে ভৈরবীর মিশ্রণ করেন নি। 'স-ঋ-জ্ঞ-স' স্বরবিন্যাস বিশেষভাবে ব্যবহার করে 
বৈচিত্র্য এনেছেন 
মাত্র। ফলে এই রাগে অন্য রাগের রূপ পাওয়া যায় না। সম-প্রকৃতির রাগ
−
শুদ্ধ শাওন্ত,
আশাবরী
(বিষ্ণুপুর ঘরাণার ঋ যুক্ত), 
যোগিয়া, 
বৈরাগী, 
গুণকেলি
(ভৈরবী ঠাটের)।
	আরোহণ: 
		স ঋ জ্ঞ স ঋ ম, প দ ণ প দ র্স	
	অবরোহণ: 
		র্স দ প, ম ঋ স
	ঠাট:
	 ভৈরবী
		জাতি: সম্পূর্ণ- ঔড়ব।
		বাদীস্বর: পঞ্চম
		সমবাদী স্বর: ষড়জ
	
		অঙ্গ: উত্তরাঙ্গ প্রধান		
		সময়: দিবা 
প্রথম প্রহর ।
		পকড় : 
		স ঋ জ্ঞ স ঋ ম, প ম ঋ স। 
	
নজরুল ইসলাম এই রাগে যে গানটি রচনা করেছেন, তা 
হলো−
	- মৃত্যু নাই, নাই দুঃখ আছে শুধু প্রাণ 
	[তথ্য]
	[নমুনা]