শুদ্ধ কৈশিক
ভিন্ন নাম: কৌশিক, চোক্ষকৈশিক
প্রাচীন ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে
চোক্ষরাগের
অন্তর্ভুক্ত, মধ্যমগ্রামের
কৈশিকী
ও
কর্মারবী জাতি থেকে উৎপন্ন রাগ বিশেষ। মতঙ্গের রচিত
বৃহদ্দেশী গ্রন্থ মতে- এটি শুদ্ধগীত বা একটি রাগ। ধারণা করা হয়, খ্রিষ্টীয়
৪০০ থেকে ৫০০ অব্দের ভিতরে এই রাগের উদ্ভব হয়েছিল। খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে
মতঙ্গের রচিত বৃহদ্দেশী গ্রন্থে গীতের ৭টি প্রকরণের ভিতরে
চোক্ষগীতের উল্লেখ
পাওয়া যায়। এই প্রকরণের অন্তর্গত পাঁচটি রাগের ভিতরে এই রাগটির
উল্লেখ রয়েছে।
এই রাগে কাকলী
নিষাদের ব্যবহার ছিল। বীর ও রৌদ্র রসে এই রাগ ব্যবহার করা হতো। এই রাগে অবরোহী প্রসন্নান্ত (মন্দ্র স্বরে সমাপ্ত)
অলঙ্কার ব্যবহৃত হতো। এই রাগে দক্ষিণ, বার্তিক বা চিত্রমার্গে নির্ধারিত
সংখ্যক কলায় স্ব ও পদযুক্ত গানে
চচ্চৎপুট
তালে
ব্যবহৃত হতো।
গ্রাম:
মধ্যমগ্রাম
গীত প্রকৃতি:
চোক্ষ
জাতি: কৈশিকী
ও কার্মারবী জাতি থেকে উৎপন্ন
আরোহণ: স র গ ম প ধ ন (কাকলী) র্স
অবরোহণ: র্স ন (কাকলী) ধ প ম গ (অন্তর) র স
জাতি:সম্পূর্ণ
অংশস্বর
/বাদীস্বর:
তার ষড়্জ
সমবাদী স্বর:
ষড়্জ
অনুবাদী স্বর
ঋষভ ও পঞ্চম
গ্রহস্বর:
তার ষড়্জ।
ন্যাস স্বর: পঞ্চম
রস: শৃঙ্গার ও হাস্য
তাল:
চচ্চৎপুট।
গীতি: এককল চিত্রামার্গে মাগধীগীতিতে, দ্বিকলে বার্তিক মার্গে
সম্ভাবিতা গীতি এবং চতুষ্কলে দক্ষিণামার্গে পৃথুলা গীতিতে ব্যবহৃত হতো।
প্রয়োগ: নাটকের নির্বহণ সন্ধিতে এই রাগের ব্যবহার হতো-
ধ্রুবা গান
হিসেব।
এই রাগের আরোহী বর্ণের শেষে প্রসন্নান্ত অলঙ্কার যুক্ত হতো। অর্থাৎ অলঙ্কারে শেষ স্বর মন্দ্র বা ষড়জ হতো।
এর আক্ষিপ্তিকা বৃহদ্দেশীতে
নেই। শারঙ্গদেবের রচিত সঙ্গীত রত্নাকরে প্রদত্ত আক্ষিপ্তিকা নিচে তুলে ধরা হলো।

তথ্যসূত্র:
- বৃহদ্দেশী। মতঙ্গ। সম্পাদনা রাজ্যেশ্বর মিত্র।
সংস্কৃত পুস্তক ভাণ্ডার। ১৯৯২। অধ্যায়: রাগ। পৃষ্ঠা:
১৩৭, ১৪৩-১৪৪
- সঙ্গীতরত্নাকর। শার্ঙ্গদেব। অনুবাদ: সুরেশচন্দ্র
বন্দ্যোপাধ্যায়। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা। ২২ শ্রাবণ ১৪০৮।