কংস
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { রাজা |  হিন্দু পৌরাণিক সত্তা | ভারতীয় পৌরাণিক সত্তা | পৌরাণিক সত্তা | কাল্পনিক সত্তা | কল্পনা | সৃজনশীলতা | কর্মক্ষমতা | জ্ঞান | মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা | বিমূর্তন  | বিমূর্ত-সত্ত | সত্তা |}

হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে,
ইনি ভোজবংশীয় রাজা ছিলেন হরিবংশের মতে, একদিন উগ্রসেনের স্ত্রী কর্ণী ঋতুস্নান করে বাড়ি ফিরছিলেন পথে সৌভপতি দ্রুমিল তাঁকে দেখে অত্যন্ত কামাতুর হয়ে পড়েন দ্রুমিল কৌশলে এই নারীর প্রকৃত পরিচয় অর্থাৎ উগ্রসেনের স্ত্রী জেনে নিলেন এরপর ইনি উগ্রসেনের রূপ ধারণ করে এই নারীর সাথে সঙ্গম করেন সঙ্গম শেষে উগ্রসেনের স্ত্রীর সন্দেহ হওয়াতে কংস ত্বং' উচ্চারণ করে দ্রুমিলের পরিচয় জানতে চাইলেন দ্রুমিল তাঁর প্রকৃত পরিচয় জানালে- উগ্রসেনের স্ত্রী তাঁকে তীব্র তিরস্কার করেন দ্রুমিল তখন তাঁকে বললেন যে, অনেকে স্ত্রীলোকই এরূপ ব্যাভিচার করে-দেবসদৃশ সন্তান উৎপাদন করে থাকে এবং তা ঘোরতর অপরাধ নয় সুতরাং তিনিও এমন কোন অন্যায় করেন নি এরপর দ্রুমিল জানালেন যে, তাঁকে কংস ত্বং' বলায় কংস নামে তাঁর একটি পুত্রসন্তান জন্মাবে

কংস মগধরাজ জরাসন্ধের দুই কন্যা অস্তি ও প্রাপ্তিকে বিবাহ করেন ইনি জরাসন্ধের সহায়তায় উগ্রসেনকে সিংহাসনচ্যুত করে নিজে রাজা হন কালক্রমে ইনি একজন অত্যাচারী শাসকে পরিণত হন এই রাজার হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য দেবতা ও ঋষিরা নারায়ণের শরণাপন্ন হন তখন নারায়ণ এর প্রতিকার করার জন্য নিজেই মানব জন্ম গ্রহণ করে কংস বধ করবেন বলে অঙ্গীকার করেন

কংসের বোন দেবকীর সাথে বসুদেবের বিবাহ হয় এই সময় কংস দৈববাণীতে জানতে পারলেন যে দেবকীর অষ্টম গর্ভজাত সন্তান তাঁকে হত্যা করবেন এরপর কংস দেবকী ও বসুদেবকে কারারুদ্ধ করেন এই অবস্থায় দেবকীর সাতটি সন্তান জন্মালে তাদের সকলকেই কংস হত্যা করেন ভাদ্র মাসের কৃষ্টাষ্টমী তিথির, মধ্যরাতে দেবকীর অষ্টম সন্তান কৃষ্ণের জন্ম হয় জন্মলগ্নেই বসুদেব এই সন্তানকে গোকুলে গোপরাজ নন্দের কাছে রেখে আসেন একই সময় নন্দের স্ত্রী যশোদার গর্ভে যোগমায়ার জন্ম হয় উল্লেখ্য এই যোগমায়ার প্রভাবেই সে রাত্রে গোকুলে সকলে অচেতন ছিল এই সুযোগে কৃষ্ণকে যশোদার কাছে রেখে তাঁর কন্যাকে এনে দেবকীর কোলে স্থাপন করলেন কংস এই কন্যাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মাথার উপর তুলে পাথরে নিক্ষেপ করতে গেলে যোগমায়া আকাশে উঠে গিয়ে বলেন যে কংসের হত্যাকারী গোকুলে বৃদ্ধি পাচ্ছে এরপর কৃষ্ণকে হত্যা করার জন্য কংস একে একে বিভিন্ন চর প্রেরণ করলেন কিন্তু সকলেই কৃষ্ণের হাতে নিহত হলে
কৃষ্ণ বলরামকে হত্যার জন্য কংস ধনুর্‌যজ্ঞের আয়োজন করেন। এই উৎসবে কৃষ্ণ বলরামকে আনার জন্য কংস অক্রূরকে বৃন্দাবনে পাঠান তিনি অক্রূর বৃন্দাবনে গিয়ে কৃষ্ণকে কংসের গোপন উদ্দেশ্য জানিয়ে দেন। এরপর কৃষ্ণ-বলরাম উক্ত আসরে গেলে কংসের মল্লযোদ্ধারা তাঁদেরকে আক্রমণ করে। এই যুদ্ধে সকলেই কৃষ্ণ-বলরামের হাতে নিহত হয় পরে কৃষ্ণ কংসকে হত্যা করেন।