|
পরিফেরা
Porifera
অনেক সময় এর
সমনাম হিসেবে
প্যারাজোয়া উল্লেখ
করা হয়। আবার কেউ কেউ পরিফেরাকে
প্যারাজোয়া
উপরাজ্যের একটি পর্ব হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।
ল্যাটিন শব্দ
Porus
অর্থ ছিদ্র এবং
Ferre
অর্থ বহন করা। এ শব্দদুটির সমন্বয়ে পরিফেরা
(Porifera) শব্দটি তৈরি হয়েছে।
১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানী রবার্ট এডমোন্ড গ্র্যান্ট
(Robert
Edmond Grant
১৭৯৩-১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দ)
এই পর্বের নামকরণ করেছিলেন। প্রায় ১৫০০০ প্রজাতি এই পর্বে রয়েছে। এই পর্বের এ সকল
প্রজাতিকে সাধারণভাবে স্পঞ্জ বলা হয়।
এদের
দেহে সুনির্দিষ্ট কলা, কলাতন্ত্র, অঙ্গ এবং অঙ্গতন্ত্র থাকে না। তবে দেহে
নালিকাতন্ত্র
(Canal system)
রয়েছে।
দেহাভ্যন্তরে স্পঞ্জোসিল নামক প্রশস্ত গহ্বর থাকে। গহ্ববরের বাইরের দিকে
অসক্যুলাম নামক বড় আকারের ছিদ্র থাকে। দেহপ্রাচীরে অসংখ্য ক্ষুদ্রাকার ছিদ্র থাকে।
এই ছিদ্রগুলোকে বলা হয় অস্টিয়া। দেহে ফ্লাজেলা বিশিষ্ট কোষ কোয়ানোসাইট দিয়ে
পরিবেষ্টিত থাকে। এই ফ্লাজেলা অবিরতি আন্দোলিত হয়। এদের দেহত্বক এক বা একাধিক
প্রকোষ্ঠ দেখা যায়। এদের দেহপ্রাচীর দ্বিস্তর বিশিষ্ট। এর বাহিরের স্তরকে বলা হয়
পিনাকোডার্ম এবং ভেতরের স্তর কোয়ানোডার্ম। উভর স্তরের মাঝে থাকে কোষ-বিহীন
মেসেনকাইম স্তর। এদের দেহাভ্যন্তরে সিলিকন বা ক্যালিসিয়ামের এক ধরণের তন্তু থাকে।
গঠন প্রকৃতি অনুসারে এই তন্তুকে বলা হয় স্পিকিউল বা স্পঞ্জিন। এই তন্তু এই পর্বের
প্রাণিকুলের কঙ্কালের মতো কাজ করে এবং দেহের সুনির্দিষ্ট আকার দান করে।
প্রজাতিভেদের এদের আকৃতি ভিন্ন ভিন্ন রকম দেখা যায়। তবে বেশিরভাগ পরিফেরা পর্বের
প্রাণী হয়ে থাকে সিলিণ্ডারের মতো নলাকার বা কুশনের মতো। এরা হতে পারে প্রতিসম,
অপ্রতিসম, অরিয় প্রতিসম ধরণের।
এরা একাকী অথবা দলবদ্ধভাবে থাকতে পারে। প্রজাতিভেদে এরা সামুদ্রিক লোনা পানিতে বা
নদী, হ্রদ বা খাল-বিলের স্বাদুপানিতে বাস করে।
এরা সকল স্পঞ্জই উভলিঙ্গিক। একই দেহে স্ত্রী ও পুরুষ জননকোষ উৎপন্ন হয়। তবে
প্রজননের সময় এরা প্রজাতির অন্য সদস্যের সাথে মিলিত হয় এবং উভয়ের দেহে নিষেক
সম্পন্ন হয়। এদের প্রজনন হতে পারে- অযৌন প্রজনন বাডিং, ফিউশন এবং গ্যামুউল ধরনের
এবং যৌন প্রজনন গ্যামেটোগনি ধরনের। দেহের কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা পুনারায়
উৎপন্ন হয়ে থাকে।
ক্রমবিবর্তনের ধারা
৮৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দে
ক্রায়োজেনিয়ান বরফযুগটি
শুরু হয়েছিল। এরই ভিতরে
চোয়ানোজোয়া
থাকের প্রাণিকুল বিভাজিত হয়ে উৎপন্ন হয়েছিল চোয়ানোফ্লাগেল্লাটিয়া
শ্রেণির অন্তর্গত প্রজাতিসমূহ এবং ৬৭ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে
জীবরাজ্যে আবির্ভূত হয়
এ্যানিমেলিয়া।
ক্রায়োজেনিয়ান বরফযুগটি স্থায়ী
হয়েছিল ৬৩
কোটি ৫০ লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের
এডিয়াকারান অধিযুগ
অবধি বিদ্যমান ছিল। সেই তুষারাবৃত শীতল পৃথিবীর
সমুদ্রে জীবজগতে পরিবর্তনের নতুন ধারার সূচনা হয়। অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এক কোষী
জীবজগতে বহুকোষী জীবের আবির্ভাব ঘটলো। এদের ভিতরে একটি শ্রেণি বহুকোষের সমন্বয়ে
আবির্ভূত হলেও এদের দেহে কলাতন্ত্রের বিকাশ ঘটেনি। এই সূত্রে সৃষ্টি হয়েছিল দুটি
উপরাজ্য হলো-
কলাতন্ত্রবিহীন
পরিফেরা এবং কলাতন্ত্র যুক্ত
ইউমেটাজোয়া।
পরিফেরা পর্বের আদিম
প্রজাতিসমূহের
দেহাভ্যন্তরে স্পঞ্জোসিল নামক প্রশস্ত গহ্বর
এবং গহ্ববরের বাইরের দিকে অসক্যুলাম নামক বড় আকারের ছিদ্র তৈরি হয়েছিল। দেহপ্রাচীরে
সৃষ্টি হয়েছিল অস্টিয়া নামক অসংখ্য ক্ষুদ্রাকার ছিদ্র । এদের দেহ আবৃত হয়েছিল
ফ্লাজেলা বিশিষ্ট কোষ কোয়ানোসাইট দিয়ে। এই ফ্লাজেলাকে এরা অবিরত আন্দোলিত করতে
পারতো। এদের দেহত্বক এক বা একাধিক প্রকোষ্ঠ দিয়ে গঠিত হয়েছিল এবং দেহপ্রাচীর হয়েছিল
দ্বিস্তর বিশিষ্ট। বিজ্ঞানীরা এর বাহিরের স্তরের নাম পিনাকোডার্ম এবং ভেতরের স্তর
নাম কোয়ানোডার্ম দিয়েছেন। উভর স্তরের মাঝে যুক্ত হয়েছিল কোষ-বিহীন মেসেনকাইম স্তর।
এদের দেহাভ্যন্তরে সিলিকন বা ক্যালিসিয়ামের এক ধরণের তন্তুও সৃষ্টি হয়েছিল থাকে।
গঠন প্রকৃতি অনুসারে এই তন্তুকে বলা হয় স্পিকিউল বা স্পঞ্জিন। এই তন্তু এই পর্বের
প্রাণিকুলের কঙ্কালের ভূমিকা নিয়েছিল। এর ফলে এদের সুনির্দিষ্ট আকার পেয়েছিল।
বর্তমানে প্রজাতিভেদের এদের আকৃতি ভিন্ন ভিন্ন রকম দেখা যায়। তবে বেশিরভাগ পরিফেরা
পর্বের প্রাণী হয়ে থাকে সিলিণ্ডারের মতো নলাকার বা কুশনের মতো। এরা হতে পারে
প্রতিসম, অপ্রতিসম, অরিয় প্রতিসম ধরণের। পরিফেরার পর্বের আদর্শ প্রজাতি হিসেবে
উল্লেখ করা যেতে পারে Amphimedon
queenslandica-কে।
এর সাধারণ নাম স্পঞ্জ।
এডিয়াকারান অধিযুগের (৬৩.৫-৫৪.১ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) মাঝামঝি সময়ে পরিফেরা পর্বের প্রাণিকুল সৃষ্টি হয়েছিল। এই পর্ব থেকে ৬৩.৫-৫৪ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ভিতরে উৎপন্ন হয়েছিল ৫টি শ্রেণির প্রাণিকুল। এগুলো হলো-
সূত্র :