ফিলিপাইনের পতাকা

ফিলিপাইন
ইংরেজি Philippines


দক্ষিণ-পূর্ব এ
কটি স্বাধীন রাষ্ট্র।
এর রাজধানীর  নাম ম্যানিলা।

ভৌগোলিক অবস্থান: ১৩
° উত্তর ১২২° পূর্ব। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে, প্রায় ৭৬৪১টি দ্বীপ নিয়ে ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ গঠিত হয়েছে।

আয়তন: ৩,০০,০০০ বর্গকিমি (১,১২,০০০ বর্গমাইল)।
 
জনসংখ্যা: ২০১৫  খ্রিষ্টাব্দের অনুমানিক হিসাব ১০,০৯,৮১,৪৩৭।

ভাষা: রাষ্ট্রীয় ভাষা ফিলিপিনো।
মুদ্রা:
পেসো।


ভৌগোলিক অবস্থা:
প্রায় ৭৬৪১টি দ্বীপ নিয়ে ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ গঠিত হয়েছে।
সিলুরিয়ান অধিযুগের ৪১ কোটি ৮০ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে-  লাউরেনশিয়া, বাল্টিকা এবং এ্যাভালোনিয়ার মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ইউরোমেরিকা মহামহাদেশ সৃষ্টি হয় এবং এই সংঘর্ষের ফলে স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ওয়েল্‌স্, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশসমূহে (সুইডেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে) ক্যালিডোনীয় গিরিজনি সৃষ্টি হয়েছিল। এই সময় ফিলিপাইন দ্বীপুপঞ্জ উত্তর মেরুর দিকে ছিল। [সম্পাদনার অপেক্ষায়]

মানুষের আগমন:

এই দ্বীপপুঞ্জের জীবাশ্ম অনুসারে ধারণা করা হয়, ৭০ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে ক্যাল্লো মানব (Callao Man) ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে পদার্পণ করেছিল। তবে এরা ঠিক হোমো হোমো স্যাপিয়েন্স ছিল কিনা সন্দেহ করা হয়। বিজ্ঞানীরা অনেকে মনে করেন- এরা ছিল হোমো ফ্লোরেসিয়েনসিস

নৃতাত্ত্বিক গবেষণার সূত্রে ধারণা করা হয়, প্রায় ৪৭ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে হোমো স্যাপিয়েন্স-এর একটি দল ফিলিপাইনে পৌঁছেছিল। নেগ্রিটো জাতির এই মানবগোষ্ঠী হয়তো বোর্নিও ও সুমাত্রা দ্বীপ থেকে এখানে এসেছিল। এরপর দক্ষিণ থেকে মালয় জাতির লোকেরাও এখানে আসা শুরু করে। মালয়রা এখানে বারাংগে নামে পরিচিত। খ্রিষ্টীয় নবম শতাব্দীতে চীনা ব্যবসায়ীরা এখানে আসে ও বসতি স্থাপন করে। এই সময়ে কিছু কিছু আরব বণিক এই দ্বীপপুঞ্জে আসা-যাওয়া শুরু করেছিল। মূলত ফিলিপাইনের দক্ষিণে এদের দ্বারা ইসলাম ধর্মের প্রচলন হয়েছিল।

১৫০০ খ্রিষ্টাব্দের দিক স্পেনিশরা এই দ্বীপপুঞ্জে আসা শুরু করে। স্পেনীয়রা এখানে শক্তিশালী ঘাঁটি স্থাপন করে। এবং ধীরে ধীরে এই দ্বীপপুঞ্জটি স্পেনের উপনিবেশে পরিণত হয়। এরা লুসন দ্বীপের ম্যানিলা শহরকে কেন্দ্র করে স্পেনীয় ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা গড়ে তোলে। এই সময় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং ভয়ভীতির মাধ্যমে স্থানীয় অধিবাসীদের গণহারে রোমান ক্যাথলিক ধর্মে ধর্মান্তরিত করা শুরু করে।

ক্রমে ক্রমে স্থানীয় মানুষ স্পেনীয় শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা শুরু করে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে  শিক্ষিত ফিলিপিনোরা স্পেনীয় শাসনের বিরুদ্ধের আন্দোলনকে ফিলিপিনো জাতীয়তাবাদে রূপদান করে। ইতিমধ্যে আধিপত্যবাদের সূত্রে স্পেন এবং মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিতরে সংঘাতের সৃষ্টি হয়। ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে স্পেনীয়-মার্কিন যুদ্ধে মার্কিনীরা ম্যানিলা উপসাগরে স্পেনীয় নৌবহরকে পরাজিত করে। চীনা-বংশোদ্ভূত ফিলিপিনো নেতা এমিলিও আগিনালদো  ওই বছরের ১২ই জুন ফিলিপাইনকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

স্পেনীয়দের পরাজিত করার পর মার্কিনীরা ফিলিপাইনের দখল নেয়। প্যারিসে অনুষ্ঠিত শান্তি চুক্তি অনুসারে স্পেন ফিলিপাইনের দ্বীপপুঞ্জকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রদান করে। এর ফলে ফিলিপাইনের নতুন শাসক হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের শুরু থেকেই মার্কিন শাসনের বিরুদ্ধে ফিলিপিনোরা বিদ্রোহ শুরু করে। তিন বছর বিক্ষিপ্ত মার্কিন-ফিলিপিনো যুদ্ধ চলে। এই সময় বহু ফিলিপিনো ও মার্কিন সেনা নিহত হয়। অবশেষে ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে উভয় পক্ষের ভিতরে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে ফিলিপাইন কমনওয়েল্থ রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে জাপান ফিলিপাইন দখল করে। ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে, দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে চলে যায়। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা এপ্রিল ফিলিপাইন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।