মার্তণ্ড
বানান বিশ্লেষণ: ম্+আ+র্+ত+অ+ণ্+ড্+অ
উচ্চারণ : mar.t̪ɔn.ɖ
ɔ (মার্‌ত্.তন্.ডো)।
শব্দ-উৎস: সংস্কৃত ার্ত্তণ্ড>বাংলা মার্তণ্ড
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:

পদ: বিশেষ্য

১. ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {| হিন্দু দৈবসত্তা | দৈবসত্তা | আধ্যাত্মিক সত্তা | বিশ্বাস | ্রজ্ঞা | জ্ঞান | মনস্তাত্ত্বিক বিষয় | বিমূর্তন | বিমূর্ত-সত্ত | সত্তা |}
অর্থ: কশ্যপের স্ত্রী অদিতির গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন দেবতারা। আর তাঁর অপর স্ত্রী দিতির গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন দৈত্য-দানব। দৈত্য-দানবেরা অদিতির পুত্রদের (দেবতা) নানাভাবে লাঞ্ছিতকরতে থাকলে, অদিতি পুত্রদের কল্যাণের জন্য সূর্যের তপস্যা আরম্ভ করেন। তাঁর ভক্তিতে তুষ্ট হয়ে, সূর্য আদিতির সাক্ষাৎ দেন এবং বর প্রার্থনা করতে বলেন। অদিতি তাঁকে তাঁর পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করে, ভাই হিসেবে দেবতাদের রক্ষা করার অনুরোধ করেন। এরপর সূর্য অদিতির গর্ভে তাঁর সহাস্রাংশ সত্তায় জন্মগ্রহণ করার অঙ্গীকার করেন। এই অঙ্গীকারের সূত্রে সূর্য অদিতির গর্ভে সৌষুম্ন কিরণ প্রেরণ করলে, অদিতি গর্ভবতী হন। এই সময় অদিতি কৃচ্ছ্রসাধন করে, গর্ভবহন করতে থাকেন। এতে কশ্যপ রাগান্বিত হয়ে বলেন, 'তুমি উপবাস করে গর্ভাণ্ডকে মারিত করবে নাকি!' অদিতি কশ্যপের এই বাক্যে ক্ষুব্ধ হয়ে অদিতি গর্ভত্যাগ করেন। সূর্যের সহস্রাংশের জ্যোতিতে চারিদিক উদ্ভাসিত হয়ে উঠলে, কশ্যপ তাঁকে স্তব করে সন্তুষ্ট করেন। এই সময় দৈববাণীতে বলা হয়, এই অণ্ডকে মারিত (মেরে ফেললে) বলায়, এর নাম হবে মার্তণ্ড। এরপর দেবরাজ ইন্দ্র দৈত্য-দানবদের যুদ্ধে আহ্বান করলে, উভয় পক্ষের ভিতর যুদ্ধ শুরু হয়। এই সময় মার্তণ্ড দানবদের দিকে দৃষ্টিপাত করা মাত্র, তার ভস্মীভূত হয়।  [সূত্র: 'সূর্যমাহাত্ম্য' মার্কেণ্ডয় পুরাণ]

 

২. ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {| নক্ষত্র | মহাকাশীয় বস্তু | প্রাকৃতিক লক্ষ্যবস্তু | এককঅংশ  | দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা |}
অর্থ:
অণ্ডের ভগ্ন বা মৃতদশা
থেকে উৎপন্ন হয়, এই গৌণার্থে পক্ষীকে মার্তণ্ড বলা হয়। এই অর্থে ঋগ্বেদে সূর্যকে মার্তণ্ড বলা হয়েছে।  [দেখুন : সূর্য [জ্যোতির্বিজ্ঞান]
 

সমার্থক শব্দাবলি: অংশু, অংশুধর, অংশুপতি, অংশুবাণ, অংশুভর্তা,  অংশুমৎ, অংশুমান, অংশুমালী, অংশুহস্ত, অঞ্জিষ্ঠ, অম্বরীষ, অরুণ, অর্ক, অর্চিষ্মান, অর্যমা, অশীতকর, অশীতমরীচি, অহঃপতি, অহকান্ত,  অহপতি, অহর্পতি, অহর্মণি, অহস্কর, অহিমকর, অহিমকিরণ, অহিমতেজা, অহিমদীধিতি, অহিমময়ূখ, অহিমরশ্মি, অহিমাংশু, আদিত্য, আফতাব, ইতু, উষ্ণকর, উষ্ণকিরণ, উষ্ণদীধিত, উষ্ণরশ্মি, ষ্ণাংশু, ঊষাপতি, কমলিনীকান্ত, কমলিনীনায়ক, কাশ্যপেয়, কিরণমালী, খমণি, খরকর, খরাংশ, গভস্তিপাণি, গভস্তিমান, গভস্তিহস্ত, গ্রহপতি, গ্রহরাজ, গ্রহাধীশ, চিত্রভানু, চিত্ররথ, জগচ্চক্ষু, জ্যোতিষ্মান, তপন, তমোঘ্ন, তমোহর, তমোরি, তমোহা, তাপন, তিমিরনাশকতিমিররিপু, তিমিরারি, ত্বিষাম্পতি, দিনকর, দিননাথ, দিনপতি, দিনমণি, দিনেশ, দিবাকর, দিবানাথ, দিবাবসু, দিবামণি, দ্বাদশাত্মা, দ্যুমণি, ধামকেশ, ধামনিধি, ধ্বান্তারাতি, ধ্বান্তারি, নভশ্চক্ষু, পদ্মপাণি, পূষা, প্রদ্যোতন, প্রভাকরবসু, বিকর্তন, বিবস্বান, বিভাকর, বিভাবসু, বিরোচন, বীতিহোত্র, ভানু, ভানুমান, ভাস্কর, ভাস্বান, ময়ূখমালী, মরীচিমালী, মার্তণ্ড, মিত্র, মিহির, রবি, রসাধার, লোলার্ক, শূর, সপ্তসপ্তি, সপ্তাশ্ব, সপ্তাশ্ববাহন, সবিতা, সহস্রকর, সহস্রকিরণ, সহস্ররশ্মি, সহস্রাংশু, সুতপা, সুযাত্র, সুর, সুরজ, সুরয, সুরুজ, সুরোত্তম, সূর্য, হরিতাশ্ব, হরিদশ্ব, হিরণ্যরেতাঃ।
ইংরেজি: sun


সূত্র :