অংশু
বানান বিশ্লেষণ: অ+ং+শ্+উ
উচ্চারণ :
oŋ.ʃu
(ওঙ্.শু)
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত অংশু
বাংলা অংশু।
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:
√
অশ্ (ব্যাপ্ত হওয়া)
+
উ (কু)
কর্তৃবাচ্য
পদ:
বিশেষ্য
১.
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
আলোক-রাসায়নিক বিকিরণ|
বিদ্যুৎ-চুম্বকীয়
বিকিরণ|
বিকিরণ|
শক্তি|
ভৌত প্রপঞ্চ |
প্রাকৃতিক প্রপঞ্চ |
প্রপঞ্চ |
দৈহিক প্রক্রিয়া |
দৈহিক সত্তা |
সত্তা |}
অর্থ: যা বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ দ্বারা
প্রকাশ পায় বা ছড়িয়ে পড়ে, এই
অর্থে
–
অংশু।
ইংরেজি
: ray
। [দেখুন
আলো
[পদার্থবিজ্ঞান]]
বাংলা সাহিত্যে এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে
আলো অর্থে। এর ভাবগত
অর্থ হতে পারে-
যা বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ দ্বারা
প্রকাশ পায় বা ছড়িয়ে পড়ে এবং দর্শনেন্দ্রিয়কে উজ্জীবিত করে দেখা নামক
অনুভূতিকে উপস্থাপন করে। সাধারণ অর্থে দৃশ্যমান আলো।
সমার্থক শব্দাবলি:অংশু,
অংশুক,
অর্চি,
আভা,
আল,
আলা,
আলো,
আলোক,
কর,
কিরণ,
গভস্তি,
জ্যোতি,
তেজ,
ত্বিষা,
দীধিতি,
দীপ্তি,
দ্যুতি,
ধাম,
নুর,
বসু,
বিভা,
প্রভা,
ভা,
ভানু,
ভাস্,
ময়ুখ,
মরীচই,
রশ্মি।
ইংরেজি:
light
।
যুক্ত শব্দ:
-
পূর্বপদ:
অংশুকায়,
অংশুজাল,
অংশুধর
অংশুপতি,
অংশুবাণ,
অংশুবাহু,
অংশুভর্তা,
অংশুমৎ,
অংশুমান,
অংশুমালা,
অংশুমালী,
অংশুহস্ত।
-
উত্তর পদ:
অহিমাংশু,
উষ্ণাংশু
খরাংশ,
সহস্রাংশু
- প্রত্যয়জাত শব্দ:
অংশুক।
বহুবচনার্থে:
অংশুজাল,
অংশুমালা।
২.
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
স্পর্শনীয় বস্তু
বস্তু |
দৈহিক সত্তা
সত্তা
|}
অর্থ:
ব্যাপ্তী অর্থে।
যা ব্যাপ্ত হয়, বা ছড়িয়ে
পড়ে এই অর্থে–
অংশু । যে কোনো পদার্থের সূক্ষ্ম সুতার মতো
অংশকে অংশু বলা হয়।
সমার্থক শব্দাবলি: অংশু,
আঁশ,
সুতার
উপকরণ।
ইংরেজি:
fiber, fibre
।
৩.
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{|
ব্যবহার্য বস্তু
|
বস্তু
|
দৈহিক সত্তা
|
সত্তা
|}
অর্থ:
পদার্থের অতি সূক্ষ্মতম কণা, ব্যাবহারিক উপকরণের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সমার্থক শব্দাবলি:
অংশু,অণু,
কণ,
কণা
কণিকা।
ইংরেজি:
particle
।
৪.
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{ পরিচ্ছদ
|
আবরক|
মনুষ্য-সৃষ্টি |
এককঅংশ
|
দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু
|
দৈহিক সত্তা|
সত্তা}
অর্থ:
৪.১. শরীরের
ছড়িয়ে দিয়ে যার দ্বারা আবরিত
করা হয়, এই অর্থে
–
অংশু।
সমার্থক শব্দাবলি: অংশু,
অংশুক,
পট,
পট্ট,
পোশাক,
বসন,
বস্ত্র,
বাস,
বেশ।
ইংরেজি:
garment
।
অর্থ:
৪.২ সূক্ষ্ম
সুতায় তৈরি বস্ত্র ,এই অর্থে –
অংশু।
সমার্থক শব্দাবলি: সূক্ষ্মব্স্ত্র, মিহি সুতায় তৈরি বস্ত্র।
ইংরেজি: fine cotton fabric
যুক্তশব্দ:
পূর্বপদ অংশু:
অংশুপট,
অংশুপট্ট।
৫.
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা|
নক্ষত্র|
মহাকাশীয় বস্তু
|
প্রাকৃতিক লক্ষ্যবস্তু
|
এককঅংশ
|
দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু
|
দৈহিক
সত্তা
|
সত্তা
|}
অর্থ: যা নিজেকে ব্যাপ্ত করে, আলোর অপর নাম অংশু। আবার আলোর আধার এবং উৎস হিসেবে
সূর্যকেও অংশু বলা হয়
। :
সূর্য
[জ্যোতির্বিজ্ঞান]
সমার্থক শব্দাবলি:
বিভিন্ন রূপকার্থে এবং হিন্দু পৌরাণিক কাহিনির সূত্রে সূর্যদেবতা এবং তার সমার্থক
শব্দাবলিও অনেক সময় সূর্য নামক নক্ষত্রকেই বুঝানো হয়। যে সকল শব্দ সূর্য বা
সূর্যদেবতা ব্যবহৃত হয়, তার তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
অংশু
অংশুধর,অংশুপতি
,
অংশুবাণ
,
অংশুভর্তা,
অংশুমৎ,
অংশুমান
অংশুমালী
অংশুহস্ত,
অঞ্জিষ্ঠ,
অম্বরীষ,
অরুণ
অর্ক,
অর্চিষ্মান,
অর্যমা,
অশীতকর,
অশীতমরীচি,
অহঃপত
অহকান্ত
অহপতি,
অহর্পতই
অহর্মণি,
অহস্কর,
অহিমকর,
অহিমকিরণ,
অহিমতেজা,
অহিমদীধিতি,
অহিমময়ূখ,
অহিমরশ্মি,
অহিমাংশু,
আদিত্য,
আফতাব,
ইতু
উষ্ণকর
উষ্ণকিরণ,
উষ্ণদীধিত,
উষ্ণরশ্মি,
ঊষ্ণাংশু,
ঊষাপতি,
কমলিনীকান্ত,
কমলিনীনায়ক
,
কাশ্যপেয়,
কিরণমালী,
খমণি,
খরকর,
খরাংশু,
গভস্তিপাণি
গভস্তিমান
গভস্তিহস্ত,
গ্রহপতি,
গ্রহরাজ
গ্রহাধীশ,
চিত্রভানু,
চিত্ররথ
জগচ্চক্ষু,
জ্যোতিষ্মান,
তপন
,
তমোঘ্ন,
তমোহর,
তমোরি,
তমোহা,
তাপন,
তিমিরনাশক,
তিমিররিপু,
তিমিরারি,
ত্বিষাম্পত
দিনকর,
দিননাথ,
দিনপতি,
দিনমণি,
দিনেশ,
দিবাকর,
দিবানাথ,
দিবাবসু,
দিবামণি,
দ্বাদশাত্মা,
দ্যুমণি,
ধামকেশী,
ধামনিধি
ধ্বান্তারাতি,
ধ্বান্তারি,
নভশ্চক্ষু,
পদ্মপাণি,
পূষা,
প্রদ্যোতন,
প্রভাকর,
বসু,
বিকর্তন,
বিবস্বান,
বিভাকর,
বিভাবসু,
বিরোচন,
বীতিহোত্র,
ভানু,
ভানুমান,
ভাস্কর,
ভাস্বান,
ময়ূখমালী,
মরীচিমালী,
মার্তণ্ড,
মিত্র
মিহির,
রবি,
রসাধার,
লোলার্ক,
শূর,
সপ্তসপ্তি,
সপ্তাশ্ব,
সপ্তাশ্ববাহন,
সবিতা,
সহস্রকর,
সহস্রকিরণ,
সহস্ররশ্মি,
সহস্রাংশু,
সুতপা,
সুযাত্র,
সুর,
সুরজ,
সুরয,
সুরুজ,
সুরোত্তম,
সূর্য,
হরিতাশ্ব,
হরিদশ্ব,
হিরণ্যরেতাঃ।
ইংরেজি:
sun
।
৬. বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {|
পৌরাণিক সত্তা |
অতিপ্রাকৃতিক বিশ্বাস |
কাল্পনিক সত্তা |
কল্পনা
| সৃজনশীলতা
| কর্মক্ষমতা |
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা |
বিমূর্তন
| বিমূর্ত-সত্তা
|
সত্তা |}
অর্থ:
-
আদিত্য
বিশেষ। মহাভারতে
দ্বাদশ
আদিত্য
ের
নাম উল্লেখ্ করা হয়েছে। এর ভিতরে একজনের নাম ছিল অংশু।
[সৃষ্টিবর্ণন
|
অনুক্রমণিকাধ্যায় | আদিপর্ব, মহাভারত]।
- শ্রীকৃষ্ণের বাল্যাকালের ক্রীড়াসঙ্গীদের একজন। [ভাগবত পুরাণ।
১০.২২. ৩১]
-
যদু বংশীয়
পুরুত্বানের
পুত্র।
তাঁর মা ছিলেন বিদর্ভরাজের কন্যা। অংশু ইক্ষ্বাকুবংশের এক কন্যাকে বিবাহ করেন।
এঁর পুত্রের নাম সত্ব। [লিঙ্গপুরাণ, ৬৮]
সূত্র :
- চলন্তিকা। রাজশেখর বসু। এমসি সরকার অ্যান্ড সন্স প্রাইভেট লিঃ।
১৪০৮।
- বঙ্গীয় শব্দকোষ (প্রথম খণ্ড)। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাহিত্য
অকাদেমী। ২০০১।
- বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান। মার্চ ২০০৫।
- বাংলা একাডেমী সমকালীন বাংলা ভাষার অভিধান । আবু ইসহাক। চৈত্র
১৪০৯/এপ্রিল ২০০৩।
- বাংলা বানান চিন্তা (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড)। অধ্যাপক পি.
আচার্য। জুলাই ১৯৯৭।
- বাঙ্গালা ভাষার অভিধান (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড)। জ্ঞানেন্দ্রমোহন
দাস। সাহিত্য সংসদ। নভেম্বর ২০০০।
- ব্যাবহারিক বাংলা উচ্চারণ অভিধান। আনিসুজ্জামান, ওয়াহিদুল হক, জামিল
চৌধুরী, নরেন বিশ্বাস। জাতীয় গণমাধ্যম ইনসটিটিউট। ৮ ফাল্গুন ১৩৯৪
- শব্দবোধ অভিধান। আশুতোষ দেব। দেব সাহিত্য কুটির। মার্চ ২০০০।
- সংসদ বাংলা অভিধান। সাহিত্য সংসদ। শৈলেন্দ্র বিশ্বাস। মার্চ ২০০২।
- সংস্কৃত বাংলা অভিধান। শ্রীঅশোক কুমার মুখোপাধ্যায়। সংস্কৃত পুস্তক
ভাণ্ডার। কলকাতা। বইমেলা ১৪০৮।
- সরল বাঙ্গালা অভিধান। সুবলচন্দ্র মিত্র।
- wordnet 2.1