কোয়ার্ক
বানান বিশ্লেষণ: ক্+ও+য়্+আ+র্+ক্+অ
উচ্চারণ:
[কো.আর্ক]
[ko.a.rk]
শব্দ-উৎস:
আইরিশ জেমস্ জয়েস-এর কবিতা
Finnegans
Wake>ইংরেজি
Quark>বাংলা
কোয়ার্ক।
...Three quarks for Muster
Mark!
Sure he hasn't got much of a bark
And sure any he has it's all beside the mark.
— James Joyce,
Finnegans Wake
পদ:
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
|
মৌলিক কণা
|
অতি-পারমাণবিক কণা |
কায়া
|
এককঅংশ
|
দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু
|
দৈহিক
সত্তা
|
সত্তা
|}
অর্থ:
অতিপারমাণবিক কণার অন্তর্গত মৌলিক কণা বিশেষ। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বিজ্ঞানীরা নানাধরনের
কণার সন্ধান পান। এই সময়ের বিজ্ঞানীরা জেনে গিয়েছিলেন, যে কোনো বস্তুর ভরের প্রায়
৯৯ ভাগ
প্রোটন আর
নিউট্রন
এর যোগফল। বাকি ভর ধারণ করে আছে
অন্যান্য কণা। বিজ্ঞানীর এই ভরের উৎস সন্ধান করার চেষ্টা করেছিলেন। ১৯৬৪
খ্রিষ্টাব্দে তাত্ত্বিকভাবে এই কণার বিষয় উপস্থাপন করেন মারে গেল-মান (Murray
Gell-Mann) এবং জর্জ জিউইগ
(George Zweig)।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বিজ্ঞানীরা 'স্ট্যাফোর্ড ইলেক্ট্রনিক রৈখিক ত্বরকযন্ত্র'
দিয়ে
প্রোটন পরীক্ষা করা উদ্যোগ নেন। এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন কানাডার
বিজ্ঞানী এর এফ টেলর, মার্কিন বিজ্ঞানী এইচ ডব্লিউ কেন্ডাল ও জে আই ফ্রিডম্যান।
এঁরা
প্রোটনকে ভেঙে এর ভিতরের গঠন দেখার চেষ্টা করেন। এই সূত্রে প্রথম
বিজ্ঞানীরা
প্রোটনের অভ্যন্তরে মৌলিক কণার সন্ধান পান। এই কারণে কোয়ার্ক আবিষ্কারে
সময় ধরা হয় ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দ। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানী মারে গেলমান এই কণাগুলোর
ভিতরে বিশেষগুণ সম্পন্ন মৌলিক কণার নাম দেন কোয়ার্ক। পরবর্তী সময়ে তাত্ত্বিক পদার্থ
বিজ্ঞানী জেমস বিয়কর্ন এবং রিচার্ড পি ফাইম্যান এই কণার ব্যাখ্যা দেন এবং বলেন যে,
গ্লুয়ন নামক অপর একটি কণা কোয়ার্কগুলোকে আবদ্ধ করে রাখে। মূলত গ্লুয়নের আন্তঃসংযোগ
প্রক্রিয়ায় সবল নিউক্লিয়ার বল
সৃষ্টি করে। এই
সবল নিউক্লিয়ার বল
কোয়ার্কগুলোকে আবদ্ধ
করে
হ্যাড্রোন কণা
সৃষ্টি করে।
কোয়ার্কের পরিচিতি:
-
অতিপারমাণবিক কণা
কণার অন্তর্গত মৌলিক কণা। এর প্রতীক
q।
প্রতিটি কোয়ার্কের রয়েছে একটি প্রতিকণা (Antiparticle)।
এদেরকে বলা হয় প্রতিকোয়ার্ক
(antiquark)।
এর প্রতীক
q।
- আংশিক বৈদ্যুতিক আধান ধারণ করে। এই
আধানকে বলা হয় মৌলিক আধান (Elementary
Charge)।
এই আধানের একক e।
এই বিচারে এই আধানের মান
+ 2⁄3 e,
− 1⁄3 e
- অনুভাবন সৌরভের (flavor)
বিচারে কোয়ার্কে ছয়টি ভাগে ভাগ করা
হয়। ভাগগুলো হলো−
up (u),
dowon (d),
strange (s), charm (c),
top
(t) এবং
bottom
(b)
।
-
কোয়ার্ক কণা সুনির্দিষ্ট কোয়ান্টাম দশায়
স্বাধীন ভাবে একটি ক্ষুদ্র পরিসরে একাধিক থাকতে পারে না। এবং এদের ঘূরণ মান
1⁄2
।
তাই এই কণাকে ফার্মিয়ন কণা বলা হয়।
-
এর ব্যারিয়ন সংখ্যা
1⁄3।
-
এদের আন্তঃক্রিয়া ঘটতে পারে চারটি
ক্ষেত্রে। এগুলো হলো-
Electromagnetism, gravitation,
strong, weak।
কোয়ার্ক দ্বারা সৃষ্ট যৌগিক কণিকার তালিকা
কোয়ার্ক কণার সমন্বয়ে প্রাথমিক ভাবে যে বৃহৎকণা তৈরি হয়, বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন
হ্যাড্রোন।
একাধিক কোয়ার্কের ভিতরে বন্ধন
তৈরি করে
সবল নিউক্লিয়ার বল-
বাহী কণা গ্লুয়োন
এই কণা।
গঠনের বিচারে এই বৃহৎকণাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগ দুটি হলো−
-
মেসোন: ১টি কোয়ার্ক এবং ১টি
প্রতিকোয়ার্ক।
-
ব্যারিয়ন: ৩টি কোয়ার্ক
নিয়ে ব্যারিয়ন জাতীয় কণা গঠিত হয়।
ব্যারিয়নের গঠন অনুসারে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগ দুটি হলো−
-
প্রোটন:
২টি আপ কোয়ার্ক, ১টি ডাউন কোয়ার্ক
-
নিউট্রন:
১টি আপ কোয়ার্ক, ২টি ডাউন কোয়ার্ক
অনুভাবন সৌরভের বিচারে ছয়টি
কোয়ার্কেদের বৈশিষ্ট্যসমূহ
-
আপ কোয়ার্ক (up
quark):
-
সকল
কোয়ার্ক
কণার ভিতরে এই কণাটি সবচেয়ে হাল্কা।
এর প্রতীক
u।
এর প্রতিকণার নাম
up
Antiquark।
এর প্রতীক
u।
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে
তাত্ত্বিকভাবে এই কণার বিষয় উপস্থাপন করেন মারে গেল-মান (Murray
Gell-Mann) এবং জর্জ জিউইগ
(George Zweig)।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বিজ্ঞানীরা 'স্ট্যাফোর্ড ইলেক্ট্রনিক রৈখিক ত্বরকযন্ত্র'
দিয়ে
প্রোটন পরীক্ষা করা উদ্যোগ নেন। এই সময় কোয়ার্ক কণা হিসেবে এই মৌলিক
কণাটি আবিষ্কার হয়।
- এর
ভর ১.৮-৩.০ MeV/c2
-
এই কণাটি স্থায়ী অবস্থায় থাকতে পারে।
কার্যকর্ণবশত কণাটি ডাউন কণা + বা ইলেক্ট্রন ইউট্রোনো কণাতে পরিণত হতে
পারে।
-
এর
মৌলিক আধান (Elementary
Charge)
+ 2⁄3 e।
-
এদের ঘূরণ মান
1⁄2
।
-
এই কণাটি এদের আন্তঃক্রিয়া ঘটতে পারে চারটি
ক্ষেত্রে। এগুলো হলো-
Electromagnetism, gravitation,
strong, weak।
-
ডাউন কোয়ার্ক (dowon
quark):
-
হাল্কা কণার বিচারে
সকল কোয়ার্ক
কণার এর অবস্থান দ্বিতীয়।
এর প্রতীক
d।
এর প্রতিকণার নাম
down Antiquark।
এর প্রতীক
d।
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে
তাত্ত্বিকভাবে এই কণার বিষয় উপস্থাপন করেন মারে গেল-মান (Murray
Gell-Mann) এবং জর্জ জিউইগ
(George Zweig)।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বিজ্ঞানীরা 'স্ট্যাফোর্ড ইলেক্ট্রনিক রৈখিক ত্বরকযন্ত্র'
দিয়ে
প্রোটন পরীক্ষা করা উদ্যোগ নেন। এই সময় কোয়ার্ক কণা হিসেবে এই মৌলিক
কণাটি আবিষ্কার হয়।
- এর
ভর ৪.৫-৫.৩ MeV/c2
-
এই কণাটি স্থায়ী অবস্থায় থাকতে পারে।
কার্যকর্ণবশত কণাটি আপ কণা +,
ইলেক্ট্রন বা ইলেক্ট্রন ইউট্রোনো কণাতে পরিণত হতে পারে।
-
এর
মৌলিক আধান (Elementary
Charge)
−1/3 e।
-
এদের ঘূরণ মান
1⁄2
।
-
এই কণাটি এদের আন্তঃক্রিয়া ঘটতে পারে চারটি
ক্ষেত্রে। এগুলো হলো-
Electromagnetism, gravitation,
strong, weak।
-
স্ট্রেঞ্জ কোয়ার্ক (strange
quark):
-
হাল্কা কণার বিচারে
সকল কোয়ার্ক
কণার এর অবস্থান তৃতীয়।
এর প্রতীক
s।
এর প্রতিকণার নাম
strange
Antiquark।
এর প্রতীক
s।
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে
তাত্ত্বিকভাবে এই কণার বিষয় উপস্থাপন করেন মারে গেল-মান (Murray
Gell-Mann) এবং জর্জ জিউইগ
(George Zweig)।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বিজ্ঞানীরা 'স্ট্যাফোর্ড ইলেক্ট্রনিক রৈখিক ত্বরকযন্ত্র'
দিয়ে
প্রোটন পরীক্ষা করা উদ্যোগ নেন। এই সময় কোয়ার্ক কণা হিসেবে এই মৌলিক
কণাটি আবিষ্কার হয়।
- এর
ভর ৯০-১০০ MeV/c2
-
এই কণাটি স্থায়ী অবস্থায় থাকতে পারে।
কার্যকর্ণবশত কণাটি আপ কোয়ার্কে পরিণত হয়।
-
এর
মৌলিক আধান (Elementary
Charge)
−1/3 e।
-
এদের ঘূরণ মান
1⁄2
।
-
এই কণাটি এদের আন্তঃক্রিয়া ঘটতে পারে চারটি
ক্ষেত্রে। এগুলো হলো-
Electromagnetism, gravitation,
strong, weak।
-
চার্ম কোয়ার্ক (charm
quark):
-
ভারী
কণার বিচারে সকল
কোয়ার্ক কণার এর অবস্থান
তৃতীয়।
এর প্রতীক
c।
এর প্রতিকণার নাম
charme
Antiquark।
এর প্রতীক
c।
১৯৭০
খ্রিষ্টাব্দে তাত্ত্বিকভাবে এই কণার বিষয় উপস্থাপন করেন
Sheldon Glashow, John Iliopoulos
এবং
Luciano Maiani ।
১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের দিকে 'স্ট্যাফোর্ডের
এবং ব্রুকহ্যাভেন-এর গবেষকরা পৃথকভাবে আবিষ্কার করেন।
- এর
ভর ১.১৮-১.৩৪ GeV/c2
-
এই কণাটি স্থায়ী অবস্থায় থাকতে পারে।
কার্যকর্ণবশত কণাটি স্ট্রেঞ্জ বা ডাউন কোয়ার্কে পরিণত হয়।
-
এর
মৌলিক আধান (Elementary
Charge)
+ 2⁄3 e।
-
এদের ঘূরণ মান
1⁄2
।
-
এই কণাটি এদের আন্তঃক্রিয়া ঘটতে পারে চারটি
ক্ষেত্রে। এগুলো হলো-
Electromagnetism, gravitation,
strong, weak।
-
টপ কোয়ার্ক (top
quark):
-
ভারী
কণার বিচারে সকল
কোয়ার্ক কণার এর অবস্থান
দ্বিতীয়।
এর প্রতীক t। এর প্রতিকণার নাম
top
Antiquark।
এর প্রতীক
t।
১৯৭৩
খ্রিষ্টাব্দে তাত্ত্বিকভাবে এই কণার বিষয় উপস্থাপন করেন
Makoto Kobayashi
এবং
Toshihide Maskawa । ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে
CDF এবং
DØ
গবেষণা কার্যক্রমের সূত্রে এই কণাটি
আবিষ্কার হয়।
- এর
ভর 172.44 ± 0.13 (stat) ± 0.47
(syst)GeV/c2
-
এই কণাটি স্থায়ী অবস্থায় থাকতে পারে।
কার্যকর্ণবশত কণাটি স্ট্রেঞ্জ বা ডাউন কোয়ার্কে, স্ট্রেঞ্জ কোয়ার্ক এবং
ডাউন কোয়ার্ক পরিণত হয়।
-
এর
মৌলিক আধান (Elementary
Charge)
+ 2⁄3 e।
-
এদের ঘূরণ মান
1⁄2
।
-
এই কণাটি এদের আন্তঃক্রিয়া ঘটতে পারে চারটি
ক্ষেত্রে। এগুলো হলো-
Electromagnetism, gravitation,
strong, weak।
-
বটম কোয়ার্ক (bottom
quark):
-
ভারী
কণার বিচারে সকল
কোয়ার্ক কণার এর অবস্থান
প্রথম।
এর প্রতীক t। এর প্রতিকণার নাম
bottom Antiquark।
এর প্রতীক
b।
১৯৭৩
খ্রিষ্টাব্দে তাত্ত্বিকভাবে এই কণার বিষয় উপস্থাপন করেন
Makoto Kobayashi
এবং
Toshihide Maskawa । ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে
Leon M. Ledermanএই
কণাটি আবিষ্কার করেন।
- এর
ভর 4.62-4.68
GeV/c2
-
এই কণাটি স্থায়ী অবস্থায় থাকতে পারে।
কার্যকর্ণবশত কণাটি চার্ম বা আপ কোয়ার্কে, স্ট্রেঞ্জ কোয়ার্ক এবং
ডাউন কোয়ার্ক পরিণত হয়।
-
এর
মৌলিক আধান (Elementary
Charge)
−1/3 e।
-
এদের ঘূরণ মান
1⁄2
।
-
এই কণাটি এদের আন্তঃক্রিয়া ঘটতে পারে চারটি
ক্ষেত্রে। এগুলো হলো-
Electromagnetism, gravitation,
strong, weak।
কোয়ার্কের ঘূর্ণন মান ১/২।
মেসোনে
একটি
কোয়ার্ক এবং একটি প্রতিকোয়ার্ক থাকে। তাই এক্ষেত্রে
পাউলির বর্জন বিধি লঙ্ঘিত
হয় না। কিন্তু
ব্যারিয়নে
থাকে ৩টি কোয়ার্ক। এর ভিতরে
তিনটি কণার ঘূর্ণের ভিতরে দুটির ঘূর্ণ একই রকমের হয়। তারপরেও তিনটি কোয়ার্ক একই
সাথে থাকে। এক্ষেত্রে
পাউলির বর্জন বিধি লঙ্ঘিত
হয়। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষে এম ওয়াই হ্যান এবং ওয়াই নাম্বু নামক
দুইজন পদার্থবিদ একটি নতুন কোয়ান্টাম সংখ্যার প্রস্তাব করেন। এঁরা এই নতুন সংখ্যার
নাম দেন
Color
বাংলায় এর নাম দেওয়া যেতে পারে ‘বর্ণ’।
উল্লেখ্য এই বর্ণ দৃশ্যমান কোনো রঙ। এটি নিতান্তই একটি প্রতীকী শব্দ। এই সংখ্যায়
তিনটি বর্ণকে পৃথক বৈশিষ্ট্য হিসেবে দেখানো হয়। এই বর্ণগুলোর নাম
হলো- লাল, সবুজ ও নীল।
ব্যারিয়নের
দুটি কণার ঘূর্ণন একই হলেও রঙের হরেফেরের কারণে এরা একই সাথে থাকতে পারে।
গ্লুয়োন
কণা এই ভিন্ন ভিন্ন রঙের কোয়ার্কগুলোকে আবদ্ধ করতে সক্ষম হয়।