সবল নিউক্লিয়ার বল
ইংরেজি: strong nuclear force
পদ: বিশেষ্য

অর্থ:
চারটি প্রাকৃতিক বলের মধ্যে একটি বিশেষ বল। পদার্থ বিজ্ঞানী জেমস বিয়কর্ন এবং রিচার্ড পি ফাইম্যান অতি পারমাণবিক কণার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রথম গ্লুয়ন নামক একটি কণার উল্লেখ করেছেন। এই ব্যাখ্যায় বলা হয়- অতি পারমাণবিক স্তরে
কোয়ার্ককণাগুলো একা থাকতে পারে না। কারণ এদের ভিতরে গ্লুয়ন নামক অপর এক ধরনের কণা কোয়ার্ক কণাগুলোকে যুক্ত করে। যে শক্তির দ্বারা কোয়ার্কগুলোর ভিতরে গ্লুয়ন আব্দ্ধ করে, সেই শক্তিকেই বলা হয় সবল নিউক্লিয়ার বল। এর আকর্ষণ ক্ষমতা বজায় থাকে ১০-১৫ মিটারের ভিতরে।

বিগব্যাং-এর ০ থেকে ১০-৪৩ সেকেন্ড সময়ের ভিতরে এই চারটি প্রাকৃতিক বল একত্রিত ছিল।
বিগব্যাং-এর ১০-৪৩ থেকে ১০-৩৬ সেকেন্ড -এর মধ্যে প্রাকৃতিক অতি বৃহৎবলের চারটি বলের ভিতরে থেকে মহাকর্ষীয় বল পৃথক হয়ে যায়। এর ফলে সবল নিউক্লিয়ার বল, দুর্বল নিউক্লীয় বল বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বল এক সাথে থেকে যায়। এই তিনটি সমন্বিত বলকে বলা হয় ইলেক্ট্রো-নিউক্লিয়ার বল

১০-৩২ থেকে ১০-১২
সেকেন্ড
-এর মধ্যে ইলেক্ট্রো-নিউক্লিয়ার বল থেকে সবল নিউক্লিয়ার বল পৃথক হয়ে গিয়েছিল। এবং
দুর্বল নিউক্লীয় বল  ও বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বল একত্রিত হয়ে বিদ্যুৎচুম্বকীয়-দুর্বল বল তৈরি করেছিল।

১০-১২ থেকে ১০-৬
সেকেন্ড
-এর মধ্যে বিদ্যুৎচুম্বকীয়-দুর্বল বল বিভাজিত হয়ে যায়। ফলে দুর্বল নিউক্লীয় বল  ও বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বল স্বতন্ত্র বল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

এই বলের প্রভাবে কোয়ার্কের
সমন্বয়ে প্রাথমিক ভাবে যে বৃহৎকণা তৈরি হয়, বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন হ্যাড্রোন হ্যাড্রোন-এর প্রকৃতি অনুসারে একে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগগুলো হলো-

সবল নিউক্লিয়ার বল প্রোটন নিউট্রন সৃষ্টি করার পরও এর প্রভাব প্রবলভাবে থেকে। এক্ষেত্রে  বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বলের প্রভাবকে অবদমিত করে, এই বল পরমাণুর নিউক্লিয়াস তৈরি করে। উল্লেখ্য অতিরিক্ত এই বলের বাহন হয় তখন মেসন কণা।

১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ পদার্থ বিজ্ঞানী জেমস ক্যাডউইক
(James Chadwick) প্রথম পরমাণুর নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কারের কিছুদিন পর, হাঙ্গেরিয়ান-মার্কিন পদার্থ বিজ্ঞানী উইগনার  (Eugene Wigner) বলেন যে, পরমাণুর নিউক্লায়াসের উপাদানগুলো বিদ্যুৎচুম্বকীয় বল দ্বারা আবদ্ধ থাকতে পারে না। এই উপাদানগুলো আবদ্ধ রাখে পৃথক ধরনের বল।