মোগল সাম্রাজ্য
বাংলাদেশের
ইতিহাস/রমেশচন্দ্র মজুমদার।
মোঙ্গলীয় বংশধারার নৃপতিরা ভারতবর্ষে যে সাম্রাজ্য গড়ে তোলে, তাকেই মোগল সাম্রাজ্য
নামে অভিহিত করা হয়। এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন
চেঙ্গিশ খান।
১২২৫ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে তিনি পীত সাগর থেকে শুরু করে ইরান,
ইরাক, এবং দক্ষিণ রাশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে সাম্রাজ্য স্থাপন করেন। ১২২১
খ্রিষ্টাব্দে তিনি খারজুম রাজ্য আক্রমণ করেন। খারজুমের সুলতান কাস্পিয়ান সাগরের
দিকে পালিয়ে গেলে, এই রাজ্য তাঁর অধিকারে আসে। অন্যদিকে এই রাজ্যের যুবরাজ জালাল
উদ্দিন মাঙ্গবার্নী পাঞ্জাবে আশ্রয় নেন। চেঙ্গিশ খাঁ তাঁকে অনুসরণ করে সিন্ধু
পর্যন্ত অগ্রসর হন। এই সময় চেঙ্গিশ খাঁ পশ্চিম-পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশে ব্যাপক
ধ্বংসযজ্ঞ চালান। উপায়ান্তর না দেখে মাঙ্গবার্নী
ইলতুৎমিস্-এর
সাহায্য প্রার্থনা করেন। কিন্তু
ইলতুৎমিস্ মাঙ্গবার্নীকে সাহায্য করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনার পক্ষাপাতী
ছিলেন না। তাই তিনি মাঙ্গবার্নীর প্রার্থনা নাকোচ করে দেন। এর ফলে চেঙ্গিশ খা
সন্তুষ্ট হয়ে,
ইলতুৎমিস্-এর
রাজ্য আক্রমণ না করে, ভারত ত্যাগ করেন। ১২২৭ খ্রিষ্টাব্দে
চেঙ্গিশ খান মৃত্যবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বংশধরেরা মধ্য এশিয়ায় রাজত্ব
করতে থাকেন। চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যভাগে তাদের চাঘতাই রাজ্যটি দুটি ভাগে ভাগ হয়ে
যায়। এর পশ্চিমাঞ্চলীয় ভাগ থেকে সৃষ্টি হয় একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য। এই
সাম্রাজ্যের প্রধান তৈমুর লং ১৩৯৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারত আক্রমণ করেন
এবং উত্তর পশ্চিম ভারত তাঁর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। এই দিক থেকে তৈমুর লংই
ভারতের প্রথম মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এরপর সম্রাট
বাবর সেই সাম্রাজ্যকে ভারতে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। নিচে বাবর থেকে অন্যান্য মোগল
সম্রাটদের ভারতে রাজত্বকালের কালানুক্রমিক তালিকা দেওয়া হলো
দ্বিতীয় পর্ব শাহ আলম দ্বিতীয় (১৭৮৮-১৮০৬ খ্রিষ্টাব্দ)
ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।