ককুভ
উত্তর ভারতীয় সঙ্গীত শাস্ত্রে বর্ণিত
বিলাবল
ঠাটের রাগ বিশেষ।
নামান্তর: কুকুভ
খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে রচিত মতঙ্গের রচিত 'বৃহদ্দেশী' গ্রন্থে
এই রাগের নাম প্রথম পাওয়া যায়। এই গ্রন্থে
যাষ্টিকের
উদ্ধৃতিতে এই রাগটিকে গ্রামরাগ হিসেবে উল্লেখ করা
হয়েছে।
[পৃষ্ঠা: ১৭২-১৭৩৭৩] এই
গ্রামরাগের অধীনস্থ ভাষা রাগ ছিল ৭টি। এগুলো হলো-
কাম্বোজ,
মধ্যমগ্রামিকা,
সালবাহনিকা (সাতবাহিনী),
ভাগবর্ধনী
(ভোগবর্ধনী),
মধুরী (মধুকরী),
শকমিশ্রিতা
ও
ভিন্নপঞ্চমী।
শার্ঙ্গদেবের রচিত সঙ্গীতরত্নকারেও এই রাগটিকে
গ্রামরাগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পণ্ডিত বিষ্ণু নারয়ণ ভাতখণ্ডে (১৮৬০-১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দ) এই রাগটিকে বিলাবলের ঠাটের অন্তর্ভুক্ত করেন।
বর্তমানে উত্তর ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে ভাতখণ্ডেজির রাগবিধি অনুসৃত হয়ে থাকে।
তাঁর রচিত 'হিন্দুস্থানী সঙ্গীত পদ্ধতি' গ্রন্থে এই রাগ সম্পর্কে বলা হয়েছে-
'কুকুভ রাগ
বিলাবল ঠাঠ থেকেই উদ্ভূত হয়। প্রভাতেই এ-রাগ গাওয়া হয়। বাদী স্বর মধ্যম এবং
সম্বাদী ষড়্জ। বিলাবলের মতো এখানে সম্পূর্ণ আরোহ দেখতে সুন্দর লাগে। বিলাবলের
মতো এখানেও দুটি নিষাদের প্রয়োগ হয়। 'সা-প' এবং 'সা-ম' স্বর-সঙ্গতি
মাহাত্ম্যপূর্ণ। কিছু লোক অল্হৈয়া ও ঝিঁঝিট যোগ করে গান আর কিছু লোক জৈজৈওয়ন্তী
ও অল্হৈয়া-র মিশ্রণে এই রাগ গেয়ে থাকেন।'
বর্তমানে প্রচলিত ককুভ রাগের পরিচিত
আরোহণ:
স র গ ম প ধ ন র্স
অবরোহণ:
র্স ণ ধ প ম গ র স
ঠাট:
বিলাবল
জাতি:
সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ
বাদীস্বর: মধ্যম
সমবাদী স্বর: ষড়্জ
অঙ্গ: পূর্বাঙ্গ।
সময়:
দিবা প্রথম প্রহরের সূচনালগ্নে (প্রাতঃকাল)
পকড়: সগ, ম, ণ ধ প, মপ, গম, স, গম, ধণর্স, র্সধণপ, র্সধণপ,
ধম, গ, স, গ, ম
সূত্র:
- বৃহদ্দেশী। মতঙ্গ। সম্পাদনা রাজ্যেশ্বর মিত্র।
- রাগ বিজ্ঞান অভিধান। নিত্যানন্দ কর্মকার। প্রগ্রেসিভ পাবলিশার্স। ফেব্রুয়ারি
২০০৭
- সঙ্গীতরত্নাকর। শার্ঙ্গদেব। অনুবাদ: সুরেশচন্দ্র
বন্দ্যোপাধ্যায়। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা। ২২ শ্রাবণ ১৪০৮।
- হিন্দুস্থানী সঙ্গীত পদ্ধতি। দশম খণ্ড। পণ্ডিত
বিষ্ণনারায়ণ ভাতখণ্ডে। সন্পাদনা ধরিত্রী রায় ও অসীমকুমার চট্টোপাধ্যায়। দীপায়ন,
কলিকাতা। কার্তিক ১৩৯৮