ললিত
উত্তর ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে রাগ বিশেষ। প্রাচীন ভারতীয় প্রবন্ধগান থেকে ধ্রুব গান এবং ধ্রুবা গান এই রাগের ব্যবহার ছিল। সুলতান আলাউদ্দীন খিলজি রাজত্বকালে (১২৯৬-১৩১৬ খ্রিষ্টাব্দ), বৈজু বাওরা গোপাল নায়ক এই রাগে ধ্রুপদ রচনা করেছিলেন। এঁদের রচিত ললিত রাগে নিবদ্ধ ধ্রুপদের নমুনা পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে ললিত রাগে গান রচনা করেছিলেন- তানসেন। যেমন- এই রাগ দুইভাবে গাওয়া হয়। কোমল ঋষভ ও কোমল ধৈবত স্বরের প্রয়োগে ললিত পরিবেশিত হলে, তা পূরবী ঠাটের রাগ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। পক্ষান্তরে কোমল ঋষভ ও শুদ্ধ ধৈবত প্রয়োগে এই রাগকে মারবা ঠাটের রাগ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তবে এর প্রাচীন রূপটি মারবা ঠাটের ললিতের মত ছিল। দীনদয়ালের মতে-    
কোমল রি, মধ্যম দো, ঔর পঞ্চম স্বর নাহী
মারবা ঠাট ললিত, ম সা বাদী সম্বাদী ক্যহি॥
এই রাগ চিনবার উল্লেখযোগ্য উপায় হলো ধ্হ্ম, ধহ্মম বা ন্ ঋ গম, হ্মম গ সাঙ্গীতিক স্বরগুচ্ছের মাধ্যমে। দুই মধ্যমের ব্যবহারে এই রাগের মধুরতা বৃদ্ধি করে। এই রাগটি সকালের রাগ হিসাবেই গাওয়া হয়। রাগটির প্রকৃতি গম্ভীর। এই রাগের রাগের কড়িমধ্যম সায়ংকালীন বিষণ্ণরূপকে প্রকাশ করে। আবার শুদ্ধ মধ্যম এই বিষণ্ণতাকে প্রশমিত করে দেয়। এই কারণে এই রাগের প্রাণভোমরা হিসেবে উভয় মধ্যমকে মানা হয়।
আরোহণ: ন্ঋ গম হ্মম গ, হ্ম ধ র্স 
অবরোহণ: ন ধ হ্মধ হ্ম ম গ ঋস
ঠাট: মারবা
জাতি: ষাড়ব-ষাড়ব (পঞ্চম বর্জিত)
বাদীস্বর: মধ্যম
সমবাদী স্বর: ষড়্‌জ
অঙ্গ: পূর্বাঙ্গ।
সময়: দিবা রাত্রির শেষ প্রহর (অতি প্রত্যূষে গাওয়া হয়)। একে প্রাতকালীন সন্ধিপ্রকাশ হিসেবে বিবেচনা করা ।
পকড় : ন্ঋ গম ধহ্ম ধহ্ম গ, মগ রস।

তথ্যসূত্র: