১. আন্তর্জাতিক ধ্বনিলিপি : kʰɔ
  
ইউনিকোড: u+0996
  
বিশেষ্য
   ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {| বর্ণ | বর্ণচিহ্ন | লিখিত প্রতীক | প্রতীক | সঙ্কেতচিহ্ন | যোগাযোগ | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}
সমার্থকশব্দসমূহ (synonyms): :

বর্ণ-পরিচিতি :
এই বর্ণের নাম -খ বাংলা বর্ণমালার শ বর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিতীয় বর্ণ এবং ক-বর্গের দ্বিতীয় বর্ণ।  ক্ ধ্বনির সাথে সহগ-হ মহাপ্রাণতা প্রদান করলে খ ধ্বনির উৎপত্তি হয়। স্বাধীনভাবে অ সহযোগে উচ্চারণযোগ্য রূপ হলো খ্ +অ=খ

 


খ-এর উচ্চারণ রীতি
এটি জিহ্বামূলীয়, অঘোষ, মহাপ্রাণ ও স্পর্শ বর্ণ কণ্ঠমূল থেকে উচ্চারিত হয় বলে- এটি সাধারণভাবে কণ্ঠ বর্ণ নামেও চিহ্নিত হয়ে থাকে

শ্রবণ নমুনা

 

ধ্বনির বিচারে খ একটি অপরিবর্তনীয় বর্ণ। এই বর্ণ অন্যবর্ণের সাথে যুক্ত হলে ধ্বনিগত পরিবর্তন ঘটে না। এই কারণেই কোনো ধ্বনির সাথে খ-ফলা যুক্ত হলে, তার উচ্চারণ অপরিবর্তিত থাকে। যেমন

        ঙ্ +খ =ঙ্খ (শঙ্খ)
        স্ +খ =স্খ (স্খলন)

 

য ফলা, রেফ্ যুক্ত খ উচ্চারণের সময় মূল খ ধ্বনির আগে তার অল্পপ্রাণ ধ্বনি হিসেবে, ক ধ্বনি উচ্চারিত হয়। যেমন
        মূর্খ (মুর্ক্.খো)
        মূখ্য (মুক্. খো)


শব্দে আদিতে র-ফলা যুক্ত খ, দ্বিত্ব ধ্বনি তৈরি করে না। যেমন
  খ্রিষ্টাব্দ


-এর লিপি পরিচিতি
অন্যান্য বাংলা লিপির মতই ব্রাহ্মীলিপি থেকে খ-বর্ণটি উদ্ভূত হয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীর দিকে ব্রাহ্মীলিপিতে দেখা যায়, এই বর্ণটির উর্ধাংশ ছিল বড়শির মতো বাঁকানো পরবর্তী শতাব্দীতে এর নিচের বিন্দুটি ফাঁপা গোলকে পরিণত হয়েছে এই সময়ে এই বর্ণের কোন কোনো প্রকরণ ছিল ইংরেজি জেড বা জে অক্ষরের মতো খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে এর আকার দাঁড়িয়েছিল অনেকটা বাংলা ব-এর মতো

নিচের চিত্রে ব্রাহ্মীলিপিতে খ-বর্ণটির বিবর্তনের রূপ দেখানো হলো

কুষাণলিপিতে (১০০-৩০০ খ্রিষ্টাব্দ) দেখা যায় উলম্বরেখার নিম্নাংশের বৃত্তটি ত্রিভুজের আকার ধারণ করেছিল গুপ্তলিপিতে (৪০০-৫০০ খ্রিষ্টাব্দ) আগের চিহ্নের উপরের অংশে একটি বাড়তি তির্যক রেখা ষুক্ত হয়েছিলনিচের চিত্রে ব্রাহ্মীলিপি থেকে গুপ্তলিপি পর্যন্ত খ-বর্ণের রূপান্তরের নমুনা দেখানো হলো

এরপর আমরা পাই খ্রিষ্টীয় ৬ম-৯ম শতাব্দীতে পাই কুটিললিপিআদি কুটিললিপিতে এই বর্ণটি আধুনিক খ-বর্ণের রূপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিলখ্রিষ্টীয় ১৩শ ও ১৬শ শতাব্দীতে এই বর্ণটির চিহ্ন কিছুটা অন্যরকম হলেও, শেষ পর্যন্ত কুটিললিপির আদ্য খ-বর্ণটির মতই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেনিচের চিত্রে কুটিললিপি থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত খ-এর ক্রমবিবর্তনের রূপটি দেখানো হলো  

 

আধুনিক বানান রীতি অনুসারে এই বর্ণটির সাথে যে রীতিতে স্বরবর্ণ যুক্ত হয়, তা হলো-

খ্ +আ =খা খ্  +ই=খি খ্ +ঈ=খী খ্  +উ=খু খ্  +ঊ=খূ
+ঋ=খৃ খ্  +এ =খে খ্  +ঐ=খৈ খ্  +ও =খো  খ্  +ঔ=খৌ

২. রূপতাত্ত্বিক উপকরণের বিচারে খ

১. ক্ষয় অর্থে  বাংলাতে ক্রিয়ামূল হিসেবে বিবেচিত হয়। দেখুন : খ [ক্রিয়ামূল]
২. প্রত্যয় হিসেবে ক ব্যবহৃত হয়। দেখুন : 

৩. শব্দরূপ
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত >বাংল খ।  
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:
খন্ (খনন)+ অ (ড), কর্তৃবাচ্য
 

পদ: বিশেষ্য

১.ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { বায়ুমণ্ডল | গ্যাস | প্রবাহী | বস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা |}
অর্থ:
যার অঙ্গে গ্রহনক্ষত্রাদি ক্ষোদিত আছে, এই অর্থে আকাশ।
সমার্থক শব্দাবলি: আকাশ, খ, গগন, দ্যু, নভ, নভঃ।

২.
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা  { | ধ্বনি স্বধর্ম | স্বধর্ম | সত্তাগুণ | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}

অর্থ: যা ধ্বনিত হয়। এই শব্দ বাংলাতে পৃথকভাবে ব্যবহৃত হয় না। বাংলায় গৃহীত সংস্কৃত শব্দের রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে এই শব্দ ব্যবহৃত হয়। যেমন

খ (শব্দ)+ রা (গ্রহণ) + অ (ক)=খর

সমার্থক শব্দাবলি: খ ধ্বনি, শব্দ