• উদ্ভিদের ধরন: এই গোত্রের অধিকাংশ উদ্ভিদই চিরহরিৎ বা পর্ণমোচী বৃক্ষ। এরা মাঝারি থেকে বৃহৎ আকারের হয়ে থাকে। প্রজাতিভেদে এরা প্রায় ১০ মিটার থেকে শুরু করে ২৫-৩০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারেএদের কাণ্ড সাধারণত বেশ শক্ত এবং মোটা হয়। অনেক প্রজাতির কাণ্ডের ছাল অমসৃণ এবং ধূসর বর্ণের হয়ে থাকে। এই উপগোত্রের গাছগুলো ওপরের দিকে বেশ বড় ছাতার মতো আকার ধারণ করে। এদের শাখা-প্রশাখাগুলো বেশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে, যা গাছটিকে একটি বিশাল ও ছায়াযুক্ত অবয়ব দেয়।
• আঠালো রস: এদের কাণ্ড, পাতা এবং ফলের খোসায় বিশেষ ধরনের আঠালো বা রেজিনযুক্ত রস থাকে। এদের কাণ্ড, পাতা এবং ফলে সুবিন্যস্ত রেজিন নালী থাকে। এই নালী থেকে এক ধরনের আঠালো এবং সুগন্ধি রস নির্গত হয়। এদের অনেক উদ্ভিদে 'ইউরুশিওল'   নামক রাসায়নিক থাকে, যা মানুষের ত্বকে অ্যালার্জি বা চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে (যেমন: কাজুবাদামের খোসার রস)।
• পাতা: এই উপগোত্রের অধিকাংশ গাছই পর্ণমোচী এবং এদের পাতাগুলো পক্ষল যৌগিক হয়ে থাকে। এদের পাতা একান্তরভাবে সজ্জিত থাকে।একটি প্রধান পত্রদণ্ডের  দুই পাশে ছোট ছোট অনেকগুলো পত্রক  সাজানো থাকে। আমড়া গাছের ক্ষেত্রে সাধারণত জোড়-পক্ষল বা বিজোড়-পক্ষল পাতা দেখা যায়, যেখানে ডগায় একটি মাত্র পত্রক থাকে।
• ফুল: ফুলগুলো আকারে ছোট এবং গুচ্ছবদ্ধ থাকে। লিঙ্গভেদে এরা তিন ধরনের হত৫এ পারে। যেমন-
  • উভয়লিঙ্গী: একই ফুলে স্ত্রী ও পুরুষ উভয় স্তবক থাকে
  • একলিঙ্গী: একই গাছে আলাদাভাবে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল ফুটতে পারে।
  • বহুযৌন : অনেক সময় একই পুষ্পমঞ্জরিতে পুরুষ, স্ত্রী এবং উভয়লিঙ্গী সব ধরনের ফুলই দেখা যায়।

  এদের ফুলে একটি 'ইন্ট্রাস্টামিল ডিস্ক' থাকে যা মধু নিঃসরণ করে পতঙ্গদের আকৃষ্ট করে।
   

• ফল: এদের ফল মূলত 'ডুপ' বা অশ্মল ধরনের । ফলের বাইরের অংশ হয় মসৃণ হয় রসালো হলেও ভেতরে একটি শক্ত বীজ থাকে ।
• বীজাধার: এদের বীজের চারপাশে কোনো জটিল তন্তুময় জালিকা থাকে। এদের বীজের এন্ডোকার্পে বিশেষ ধরনের 'অপারকুলাম' বা ঢাকনা থাকে, যা বীজ অঙ্কুরোদগমের সময় খুলে যায়।

• এ্যানাকার্ডিওয়াইডিয়াইডি। আবির্ভাবকাল ৭ থেকে ৬.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। আম, কাজুবাদাম ও পেস্তা বাদাম এই উপ-গোত্রের অন্তর্ভুক্ত।
• স্পন্ডিওয়াইডি। আবির্ভাবকাল ৬ থেকে ৫.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। আমড়া জাতীয় উদ্ভিদের সমন্বয়ে গঠিত উপগোত্র । প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপে এই উপগোত্রের প্রাচীন জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, যা থেকে ধারণা করা হয় যে ইওসিন যুগে এরা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই গোত্রের গণ সমূহের তালিকা।
  • কোয়েরোস্পন্ডিয়াস। এদের আঁটিতে ৫টি গর্ত বা ঢাকনা থাকে। মূলত হিমালয় ও পূর্ব এশিয়ায় দেখা যায়।
  • স্পন্ডিয়াস। আবির্ভাবকাল ৪.৫ থেকে ৪ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। আমড়া জাতীয়। দক্ষিণ এশিয়া ও আমেরিকায় বিস্তৃত। এদের আঁটি তন্তুময়।
  • ড্রাকোন্টোমেলন। আবির্ভাবকাল ৩.৮ থেকে ৩.৪ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশাল বৃক্ষ। ফলগুলো বেশ বড় ও রসালো হয়।
  • তাপিরিরা। আবির্ভাবকাল ২.৮ থেকে ২.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন অঞ্চলের বনাঞ্চলে এদের আধিক্য দেখা যায়।
  • এ্যালোস্পন্ডিয়াস। আবির্ভাবকাল ২.৫ থেকে ২.৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। দক্ষিণ এশিয়ার স্থানীয় গণ, যা দেখতে অনেকটা আমড়ার মতোই।
  • সিউডোস্পন্ডিয়াস।  আবির্ভাবকাল ২ থেকে ২.৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। মূলত আফ্রিকার ক্রান্তীয় অঞ্চলের উদ্ভিদ।