আমারে চোখ ইশারায় ডাক দিলে হায় কে গো দরদি।
খুলে দাও রং মহলার তিমির-দুয়ার ডাকিলে যদি॥
গোপনে চৈতী হাওয়ায় গুল্-বাগিচায় পাঠালে লিপি,
দেখে তাই ডাক্ছে ডালে কু কু ব'লে কোয়েলা ননদী॥
পাঠালে ঘূর্ণি-দূতী ঝড়-কপোতী বৈশাখে সখি
বরষায় সেই ভরসায় মোর পানে চায় জল-ভরা নদী ॥
তোমারি অশ্রু ঝলে শিউলি তলে সিক্ত শরতে,
হিমানীর পরশ বুলাও ঘুম ভেঙে দাও দ্বার যদি রোধি॥
পউষের শূন্য মাঠে একলা বাটে চাও বিরহিণী,
দুঁহু হায় চাই বিষাদে, মধ্যে কাঁদে তৃষ্ণা-জলধি॥
ভিড়ে যা ভোর-বাতাসে ফুল-সুবাসে রে ভোমর কবি
ঊষসীর শিশ্-মহলে আস্তে যদি চাস্ নিরবধি॥
'...নজরুলের প্রশিক্ষণে প্রথম প্রকাশিত নজরুল-সঙ্গীত-এর রেকর্ডে আঙুরবালার গাওয়া দুটি গান ছিল, 'ভুলি কেমনে' ও 'এত জল ও কাজল', আরো ছিল নজরুলের স্বরচিত স্বকণ্ঠে আবৃত্তি 'নারী' কবিতা এবং কে. মল্লিকের গাওয়া 'বাগিচায় বুলবুলি তুই' এবং 'আমারে চোখ ইশরায় ডাক দিল হায়।' ঐ সব গান ও আবৃত্তির রেকর্ড হয়েছিল ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসের দিকে আর প্রকাশিত হয়েছিল শেষ দিকে।এই প্রশিক্ষণের সূত্রে নজরুলের রচিত চারটি গান- ধীরেন্দ্রনাথ দাস নজরুল ইসলামের কাছ থেকে শিখে নিয়ে, তা আঙ্গুরবালা ও কাসেম মল্লিক-কে শিখিয়েছিলেন। এই গানগুলো সম্ভবত রেকর্ড হয়েছিল এপ্রিল মাসে। তবে বিক্রয়ের জন্য প্রকাশিত হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসে। জুলাই মাসে প্রকাশিত প্রথম রেকডের দুটি গান ছিল-
নজরুল ইসলামের জীবদ্দশায় তাঁর গানের যে সুর-বিকৃতি চলছিল, তাতে তিনি অত্যন্ত
ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের
২৩ আগষ্ট (শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৩৩৬) নবশক্তি' পত্রিকায়
প্রকাশিত চিঠিতে তিনি এই বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছলেন। এই চিঠিতে বেতারে প্রচারিত [২৩ আগষ্ট ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দ [নবশক্তি'
পত্রিকায় প্রকাশিত
পত্র]
এই পত্রে এই গানটি প্রসঙ্গে তিনি লিখেছিলেন-
'...আর একদিন একজন রেডিও স্টার (মহিলা) আমার 'আমারে চোখ ইশারায়' গানটার ন্যাজামুড়ো হাত পা নিয়ে এমন করে তাল গোল পাকিয়ে দিলেন যা দেখে মনে হল বুঝি বা গানটার ওপরে একটা মটোর লরি চলে গেছে। ...'